>
- ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ মোট ১৫৭টি ম্যাচ পেয়েছে টুর্নামেন্টের বাইরে
- এ সময়ে বাংলাদেশ খেলবে ৭টি টুর্নামেন্ট
- ক্রিকেট বিশ্বের চার মোড়লের বিপক্ষে টেস্ট-ওয়ানডে-টি২০ মিলিয়ে মাত্র ২৬টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ
- বাংলাদেশের বেশির ভাগ ম্যাচ মাঝারি ও দুর্বল সারির দলগুলোর বিপক্ষে
অ্যান্ড্রু ফিডেল ফার্নান্দো একটি কলাম লিখেছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজ খেললে কি দেউলিয়া হয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া? প্রতিবছর বাংলাদেশের সঙ্গে হোম সিরিজ কোনো না কোনো অজুহাতে বাতিল করে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। এমনকি বাংলাদেশে এসে খেলার প্রস্তাবও নানা গাঁইগুঁই করে এড়িয়ে যাচ্ছে তারা।
ক্রিকইনফোর সে লেখায় একটা কার্টুনও দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করা হচ্ছে। কারণ, নতুন চুলের কাটে মিচেল স্টার্ক সন্তুষ্ট নন! অস্ট্রেলিয়া যেসব কারণ দেখায়, সেগুলোর সব যে খুব যৌক্তিক, তা-ও তো নয়!
২০০৩ সালের পর বাংলাদেশকে টেস্ট খেলতে আমন্ত্রণ জানায়নি অস্ট্রেলিয়া। একে ভবিষ্যৎ সূচিতে (এফটিপি) বাংলাদেশের জন্য কখনো টেস্ট রাখা হয়নি। আবার যখন রাখা হয়েছে, সে সফরগুলোও নানা অজুহাতে বাতিল করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। প্রায়শই যুক্তিগুলো এতটাই হাস্যকর ছিল যে কল্পিত ওই কার্টুনের যুক্তি হাসির উদ্রেক করলেও বাস্তবতা থেকে খুব একটা দূরে নয়!
আইসিসি নতুন এফটিপি দিয়েছে গতকাল। সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশকে ২০২৪ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না, ২০২০-এর শুরুতেই দুটি টেস্ট খেলার কথা বাংলাদেশের। শুধু অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টেস্ট নয়, ২০২৩ সালের শুরু পর্যন্ত বাংলাদেশকে একদম হাত ভরে দিয়েছে আইসিসি। ৪ বছরে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫৭ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এ পরিমাণ ম্যাচ শুধু অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজই খেলার সুযোগ পাবে। শুনেই তো খুশিতে মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে, তাই না?
এখানেই শুভংকরের ফাঁকিটা বাংলাদেশকে দিয়েছে আইসিসি। বর্তমান ক্রিকেটে শীর্ষ চার দল যদি হিসাব করতে যান, কাদের নাম মাথায় আসে? ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়া কাপের ম্যাচগুলোর বাইরে এ চার দলের সঙ্গে বাংলাদেশ আগামী সাড়ে চার বছরে কয়টি ম্যাচ খেলবে জানেন? মাত্র ২৬টি।
এর মাঝে টেস্ট মাত্র ৮টি। অস্ট্রেলিয়া তো তবু ২০২০ সালে একবার আতিথ্য দিচ্ছে, ওদিকে ইংল্যান্ড যে তা-ও করবে না! আগের এফটিপি অনুযায়ী ২০২০ সালে ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। লর্ডসে তামিমের সে মহাকাব্যিক সেঞ্চুরির পর এ নিয়ে অনেক দুঃখ করা হয়েছিল। এবার জানা যাচ্ছে, ২০২৩-এর মার্চের আগে অনার্স বোর্ডে অন্তত কোনো বাংলাদেশির নাম লেখা হচ্ছে না।
ওদিকে মন খারাপ হতে পারে ডেভিড মিলারের। টি-টোয়েন্টিতে কদিন আগেই দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। সেই বাংলাদেশকে কিনা ছোট সংস্করণের কোনো দ্বিপক্ষীয় কোনো সিরিজে পাবেন না! ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাগে দুটো টেস্ট আর তিনটি ওয়ানডে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সে তুলনায় ভারত রীতিমতো উদারতা দেখিয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে। ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার পাশাপাশি ৪টি টেস্টও খেলবে ভারত।
বাংলাদেশ তাহলে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে কাদের? অতিপরিচিত সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে। জুলাইয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের উইন্ডিজ সফর। এ সফর দিয়ে শুরু হচ্ছে ৩৩ ম্যাচের লম্বা যাত্রা। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হবে ২৮টি ম্যাচ। আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড মিলে বাংলাদেশকে সঙ্গ দেবে ২৭ ম্যাচে। এর মাঝে ৩টি ম্যাচ হবে সাদা পোশাকে। অর্থাৎ সেই থোড় বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোড়!
গত কিছুদিন শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ সিরিজ অনেক নিয়মিত দৃশ্য হয়ে উঠেছিল। আগামী চার বছর এটা কমে যাবে। সব সংস্করণ মিলিয়েই দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মাত্র ১১বার দেখা হবে দুই দলের। আর পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ১০ বার দেখা হবে বাংলাদেশের।
এবারের এফটিপির একমাত্র ভালো দিক, নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত সিরিজ থাকা। নিয়মিত সফরের মধ্যে থাকা দুই দল ২২টি ম্যাচ খেলবে নিজেদের মধ্যে।