সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন রাজ্জাক ও নাফীস।
সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন রাজ্জাক ও নাফীস।

ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন রাজ্জাক-নাফীস

গুঞ্জনটা বিসিবির সর্বশেষ বোর্ড সভার পর থেকেই শোনা যাচ্ছিল। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক ও শাহরিয়ার নাফীস দীর্ঘ ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন, এমনটা জানা গিয়েছিল। আজ জানে গেল, দুজনই যোগ দিচ্ছেন ক্রিকেট বোর্ডের দুই দায়িত্বে। মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশারের সঙ্গে নির্বাচক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন রাজ্জাক। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন নাফীস।

ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্বে যোগ দিলে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় যেহেতু, তাই তাই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন দেশের এই দুই কীর্তিমান ক্রিকেটার।

দুই ক্রিকেটারের বিদায় উপলক্ষে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কোয়াবে মঞ্চেই আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি ঘোষণা করেন আবদুর রাজ্জাক ও শাহরিয়ার নাফীস।

বাংলাদেশের হয়ে ১৩টি টেস্ট, ১৫৩ ওয়ানডে ও ৩৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন রাজ্জাক। এক সময় রাজ্জাককেই দেশসেরা স্পিনার মানা হতো। ওয়ানডেতে বাঁহাতি এই স্পিনারের শিকার ২০৭ উইকেট, যা বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। দেশের প্রথম স্পিনার হিসেবে ২০০-র বেশি ওয়ানডে উইকেটের মালিক হন রাজ্জাক। টি-টোয়েন্টিতেও তৃতীয় ও স্পিনারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক তিনি। টি-টোয়েন্টিতে রাজ্জাকের শিকার ৪৪ উইকেট।

সাদা বলের ক্রিকেটে দারুণ সফল রাজ্জাক অবশ্য টেস্ট ক্রিকেটে অতটা সফল ছিলেন না। ১৩ টেস্টে ২৮ উইকেট পেয়েছেন। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ঠিকই আলো ছড়িয়েছেন এই বাঁহাতি। সেখানে রাজ্জাকের বোলিং রীতিমতো বিস্ময় জাগানিয়া।

বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে ৬০০-র বেশি উইকেট নিয়েছেন রাজ্জাক।

বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে ৬০০-র বেশি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১২৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৬৩৪ উইকেট রাজ্জাকের। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটেও রাজ্জাকের বোলিং-রেকর্ড বেশ ঝলমলে। ২৮০ ম্যাচে নিয়েছেন ৪১২ উইকেট। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। সর্বোচ্চ ৪২১ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন ওয়ানডের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

শাহরিয়ার নাফীসের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ২০০৫ সালে। বাংলাদেশের হয়ে ২৪ টেস্ট, ৭৫ ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। নাফীসের খেলা একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ছিল এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। নাফিসের নেতৃত্বে সেই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৪৩ রানে হারায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হয়ে ২০১১ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন নাফীস। ওয়ানডেতে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪টি সেঞ্চুরি ও ১৩টি হাফ সেঞ্চুরিতে ৩১.৪৪ গড়ে ২২০১ রান করেছেন। ২৪ টেস্টে একটি সেঞ্চুরি ও ৭টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৬.৩৯ গড়ে করেছেন ১২৬৭ রান।

টেস্টে নাফীসের একটিই সেঞ্চুরি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফতুল্লায়।

রাজ্জাকের মতোই ঘরোয়া ক্রিকেটে নাফীস ছিলেন ধারবাহিক পারফর্মার। ১২৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৫টি সেঞ্চুরি ও ৪৮টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৮.৪০ গড়ে ৮১৪১ রান করেছেন তিনি। ১৮০টি লিস্ট 'এ' ম্যাচে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৩০টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩২.৩২ গড়ে ৫২৬৯ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।