অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট খেলেই দেশে ফিরেছেন কোহলি।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট খেলেই দেশে ফিরেছেন কোহলি।

কোহলি সন্তানের মুখ দেখতে পারেন, নটরাজনদের ছুটি মেলে না

ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলে তাহলে এক চোখে তেল আরেক চোখে নুন বেচা হয়?

সুনীল গাভাস্কারের মতামত অন্তত সে রকমই। অ্যাডিলেড টেস্টে বিরাট কোহলিদের বিপর্যয়কর হারের পর মুখ খুলেছেন ভারতীয় কিংবদন্তি। তাঁর মতে, কোহলিদের ড্রেসিং রুমে ‘একেক খেলোয়াড় একেক রকম ব্যবহার’ পেয়ে থাকেন।

রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও পেসার টি নটরাজনের উদাহরণ টেনেছেন গাভাস্কার। সত্য কথাটা কোনো রাখঢাক ছাড়াই বলার অভ্যাসের জন্য অশ্বিন নাকি ভারতীয় দলে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন, মন্তব্য করেন ৭১ বছর বয়সী সাবেক ভারত অধিনায়ক। বর্তমান অধিনায়ক কোহলিকেও এক হাত নিয়েছেন গাভাস্কার।

প্রথম সন্তানের মুখ দেখতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজে বাকি তিন ম্যাচে খেলবেন না কোহলি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) তাঁর ছুটি মঞ্জুর করেছে। ওদিকে আইপিএলের প্লে-অফের সময়ে বাবা হন নটরাজন, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি খেলা এই পেসার এখনো সন্তানের মুখ দেখতে পারেননি। ‘স্পোর্টস স্টার’–এ লেখা কলামে এমন মন্তব্যই করেন গাভাস্কার।

গাভাস্কার লিখেছেন, ‘অনেক দিন ধরে অশ্বিন ভুগছে, তবে সেটি তার বোলিং সামর্থ্যের জন্য নয় এবং যা নিয়ে শুধু অভদ্রদেরই সন্দেহ থাকতে পারে; বরং দলের বৈঠকে সত্য ও মনের কথাটা খোলাখুলি বলার জন্য, যেখানে অন্যরা আপত্তি থাকলেও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। অন্য যেকোনো দলই ৩৫০ টেস্ট উইকেট ও ৪ সেঞ্চুরি করা বোলারকে সাদরে গ্রহণ করবে। কিন্তু অশ্বিন কোনো ম্যাচে উইকেট সেভাবে না পেলে পরের ম্যাচেই তাকে বসে থাকতে হয়। প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যায় না। এমনকি কোনো ম্যাচে তারা ব্যর্থ হলেও একের পর এক সুযোগ পেয়ে থাকে, কিন্তু অশ্বিনের ক্ষেত্রে নিয়মটা সম্ভবত আলাদা।’

আইপিএল চলার সময়ে সন্তানের বাবা হয়েছেন নটরাজন।

অস্ট্রেলিয়া সফরে এবার ওয়ানডে সিরিজের পর টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে ভারত। সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে ৮ ডিসেম্বর। এ দুটি সিরিজে ভারতীয় দলে দু–একটি ম্যাচ খেলেছেন নটরাজন। কিন্তু এরপর তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়নি। নেট বোলার হিসেবে দলের সঙ্গে রেখে দেওয়া হয়েছে।

গাভাস্কার তাঁর কলামে প্রশ্ন তুলেছেন টিম ম্যানেজমেন্টের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে, ‘আরেকজন খেলোয়াড় নিয়মের ব্যাপারে অবাক হতে পারে। কিন্তু কোনো কথা বলতে পারবে না, কারণ, দলে সে নতুন মুখ। খেলোয়াড়টি টি নটরাজন। টি–টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত অভিষেক ঘটেছে বাঁহাতি এই ইয়র্কার বিশেষজ্ঞের। আইপিএল প্লে-অফ চলাকালীন সে প্রথমবারের মতো বাবা হওয়ার স্বাদ পায়। কিন্তু আরব আমিরাত থেকে তাকে সরাসরি অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর তাকে রেখে দেওয়া হয় কিন্তু টেস্ট দলের অংশ হিসেবে নয়, নেট বোলার হিসেবে। ভাবা যায়!’

টেস্ট দলের অংশ না হলেও ভারত দলের নেট বোলার হিসেবে নটরাজনকে রেখে দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন গাভাস্কার।

গাভাস্কার এরপর কোহলি ও ভারতীয় ক্রিকেটের টিম ম্যানেজমেন্টকে এক হাত নিয়েছেন। কলামে তিনি লিখেছেন, ‘একজন ম্যাচ জেতানো খেলোয়াড়, হোক না অন্য সংস্করণ। তাকে নেট বোলার হিসেবে রাখা হলো। টেস্ট সিরিজ শেষে সে দেশে ফিরে প্রথম সন্তানের (কন্যা) মুখ দেখতে পারবে, সেটিও জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ। এ দিকে অধিনায়ক প্রথম টেস্টের পরই নিজের প্রথম সন্তানের মুখ দেখতে দেশে ফিরছেন। এটাই ভারতীয় ক্রিকেট। একেক খেলোয়াড়ের জন্য একেক নিয়ম। আমার কথা বিশ্বাস না হলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও নটরাজনকে জিজ্ঞাসা করুন।’