কেন দল থেকে বাদ দেওয়া হলো, এরপরই বা কী—জেমস অ্যান্ডারসন বুঝে উঠতে পারেননি কিছুই। টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার বলেছেন, ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) ‘পুনর্গঠন’-এর ব্যাপারটি এখনো পরিষ্কার নয় তাঁর কাছে। আরেকটি কাউন্টি মৌসুম শুরুর আগে অ্যান্ডারসন বলছেন, এসব ব্যাপার তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই, এর ফলে তেমন একটা ভাবছেনও না আর।
অ্যাশেজে ভরাডুবির পর বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে বাদ দিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় ইংল্যান্ড। বাদ পড়া খেলোয়াড়দের তালিকায় ছিলেন ইংল্যান্ডের সফলতম দুই বোলার—অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। ক্যারিবিয়ানে প্রথম দুই টেস্ট ড্র করলেও শেষ টেস্টে হেরে সিরিজ হারতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। অ্যান্ডারসন-ব্রডের অভাব যে জো রুটের দল টের পায়নি, বলা যাবে না সেটিও।
অবশ্য যে ‘পুনর্গঠন’-এর কথা বলে বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁদের, অ্যান্ডারসন বুঝে উঠতে পারেননি সেটিই, ‘আমি বোঝার চেষ্টা বাদ দিয়েছি, এক পাশে সরিয়ে রেখেছি ব্যাপারটি। আমার নিয়ন্ত্রণের একেবারেই বাইরে এটি। যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, সেদিকেই নজর আমার। আর সেটি হচ্ছে যতটা সম্ভব বোলিং করে যাওয়া।’
শুধু অ্যাশেজে হার নয়, টেস্টে সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ডের অবস্থা যে সুবিধার নয়, অ্যান্ডারসন মনে করিয়েছেন সেটিও, ‘এর মানে কী, আমি আসলে এখনো জানি না। অ্যাশেজে হারের পর টেস্টের দিকে বাড়তি নজর সব সময়ই দেওয়া হয়। এমনটিই হয়ে এসেছে, তবে সত্যি বলতে কি, দুই বছর ধরেই টেস্টে আমাদের বাজে অবস্থা। হুট করে অ্যাশেজ হেরে গেলাম, আর “আমাদের কিছু করতেই হবে”—ব্যাপারটি তো এমন নয়। টেস্ট দল হিসেবেই গত দুই বছর আমাদের জন্য কঠিন ছিল। সবকিছু নিয়ে কাটাছেঁড়া হবে, এটিই স্বাভাবিক। তবে পুনর্গঠন ব্যাপারটি কী, আমি আসলে নিশ্চিত নয় খুব একটা।’
অ্যান্ডারসন আপাতত ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে আরেকটি মৌসুম শুরু করার অপেক্ষায়। যদিও ১৪ এপ্রিল কেন্টের বিপক্ষে ম্যাচটিতে খেলবেন না তিনি। তবে কাউন্টি ও জাতীয় দল মিলিয়ে একটা ধোঁয়াশার মধ্যেই আছেন, ‘এ মুহূর্তে ব্যাপারটা অদ্ভুতই লাগছে। এখনো কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছি আমি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে যে খুব বেশি কথাবার্তা শুনেছি, তা–ও নয়। কারণ, ডিরেক্টর অব ক্রিকেট ও প্রধান কোচের ব্যাপার নিয়েই ধোঁয়াশা আছে এখনো। আমি শুধু গ্লেন (চ্যাপেল, ল্যাঙ্কাশায়ারের কোচ), স্যামের (ব্রাইন, ফিজিও) সঙ্গে কাজ করেছি, সামনে এগোনোর পথে কোনটা উপযুক্ত, তা নিয়ে।’
আপাতত অ্যান্ডারসনের লক্ষ্য খেলে যাওয়া, ‘যদি পারফর্ম করতে পারি, আমার শরীর চ্যালেঞ্জ নিতে পারে, তাহলে আমি খেলে যাব। আমার ভাবনাতে সব সময় এটিই ছিল। মৌসুম ধরে এগোতে হবে আমাকে। যদি ইংল্যান্ড দল থেকে আর ডাক না-ও আসে, এ মৌসুমে এখানে খেলব। ক্যারিয়ারে কখনোই আগবাড়িয়ে ভাবিনি কিছু। সব সময়ই ম্যাচ, সিরিজ, মৌসুম ধরে এগোনোর ব্যাপার ছিল।’
তবে অবসরের ভাবনা আগে থেকেই আছে ৩৯ বছর বয়সী পেসারের, ‘গত কয়েক বছরই তো ক্রিকেটের পরের জীবন নিয়ে ভাবছি। একটা নির্দিষ্ট বয়সে গেলে এমন ভাবা আসলে স্বাভাবিকই। লোকে আপনাকে এসব নিয়ে জিজ্ঞাসাও করবে। সেদিক থেকে আসলে খুব বেশি পরিবর্তন আসেওনি।’