ব্যাট হাতে বাইশ গজে তাঁর চোয়ালবদ্ধ লড়াই যেকোনো তরুণ ক্রিকেটারের জন্যই প্রেরণা। কিন্তু বল বিকৃতি–কাণ্ডের পর প্রেরণার বেদি থেকে ছিটকে পড়েছেন সেই স্টিভ স্মিথই! অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক এখন কলঙ্কের নাগপাশে বন্দী। চারপাশ থেকে ধেয়ে আসছে সমালোচনা, ধিক্কার আর স্মিথ নিজেও তো পুড়ছেন মর্মযাতনায়। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পর সিডনি বিমানবন্দরে নেমে স্মিথ তাই কাঁদলেন।
কেপটাউন টেস্টে বল বিকৃতি–কাণ্ডের হোতা হিসেবে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে ১২ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ৯ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। সিরিশ কাগজ দিয়ে বল বিকৃতির পরিকল্পনাকারী হিসেবে প্রথমে উঠে এসেছিল ওয়ার্নারের নাম। কিন্তু মাঠের ভেতর অধিনায়কত্ব হারালেও স্মিথ যেন মাঠের বাইরেও নেতৃত্ব দিতে চাইলেন! সব দায় তুলে নিলেন নিজের কাঁধে।
সিডনি বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে বসবেন তা পূর্বনির্ধারিতই ছিল। খসড়া বক্তব্যও তাই তৈরি করে রেখেছিলেন স্মিথ। সংবাদমাধ্যমের সামনে সেই বক্তব্য পাঠের সময়ই কেঁদে ফেলেন ‘পরবর্তী ব্র্যাডম্যান’ তকমা পাওয়া এই ব্যাটসম্যান। সবার আগে সতীর্থ থেকে ভক্তকুলের কাছে ক্ষমা চেয়ে স্মিথের বক্তব্য, ‘সতীর্থ থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভক্তকুল এবং সব অস্ট্রেলিয়ান যারা আমার ওপর হতাশ ও রাগান্বিত; সবার কাছেই দুঃখ প্রকাশ করছি।’
স্মিথ এরপর বল বিকৃতির সব দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বলেন, ‘কেপটাউনে যা ঘটেছে, তা এরই মধ্যে জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আজ অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক হিসেবে খোলাখুলি জানাচ্ছি, সব দায় আমার। গুরুতর একটি ভুল করেছি এবং এখন তার ফল বুঝতে পারছি। এটা ছিল আমার নেতৃত্বের ব্যর্থতা।’
বল বিকৃতির এই ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা তো বটেই, অন্যান্য দেশের সাবেকরাও সমালোচনা করেছেন স্মিথদের। এ ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর স্মিথের বক্তব্য, ‘আমার ভুলের জন্য যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে দিতে যথাসাধ্য সবকিছুই করব। এখান থেকে ভালো কিছু ঘটলে, কেউ শিক্ষা নিলে, আশা করি পরিবর্তনের পথে হাতিয়ার হতে পারব। আমি জানি, বাকি জীবনভর এটা নিয়ে অনুশোচনা করতে হবে। পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি। আশা করি, সময়ের সঙ্গে হারানো সম্মান আর ক্ষমাও পাব।’