কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার
কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার

জাদেজার তোপ

‘কলকাতার অধিনায়কের ভূমিকা নেই, প্রধান নির্বাহীই দল চালায়’

সেদিন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে ৫২ রানে হারিয়ে প্লে-অফের আশা টিকিয়ে রেখেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের চোখেমুখে স্বস্তির ছাপটা দেখা যাচ্ছিল, অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ছিলেন নির্ভার। কিন্তু নির্ভার থাকতে গিয়ে পরে বেফাঁস একটা মন্তব্য করে বসেছেন এই তরুণ, যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে সর্বত্র।

ম্যাচ শেষের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হুট করে শ্রেয়াস বলে বসেছিলেন, একাদশ নির্বাচনে দলের প্রধান নির্বাহী ভেঙ্কি মাইসোরের বিশেষ ভূমিকা থাকে। যে কাজটা কোচ, কিংবা বড়জোর অধিনায়কের থাকা উচিত, সে কাজেও কলকাতার প্রধান নির্বাহী নাক গলান বলে শ্রেয়াসের কথায় ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।

কলকাতার একাদশ কোন ম্যাচে কী হয়, কেউ জানে না

শ্রেয়াসের এই কথায় চারপাশে তোলপাড় শুরু হলেও সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার অজয় জাদেজা সেই দলে নেই। কারণ, কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজিটাকে যে প্রধান নির্বাহীই চালান, সেটা যে জাদেজা আগে থেকেই জানতেন!

জাদেজার এই কথায় চমকের কিছুই পাননি জাদেজা, ‘এতে চমকের কিছু নেই। কলকাতা হলো প্রধান নির্বাহীর দল। ওরা জিতলে ওদের প্রধান নির্বাহীই সব সুনাম কুড়াবে, হারলে প্রধান নির্বাহীই বকাঝকা শুনবে। এমনটাই সব সময় হয়ে এসেছে। এর আগেও আমরা এমন উদাহরণ দেখে এসেছি।’

প্রধান নির্বাহী ভেঙ্কি মাইসোরের সঙ্গে ভেঙ্কটেশ আইয়ার

ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভেঙ্কি মাইসোরের প্রভাবের কথাটাই তুলে ধরেছেন জাদেজা, ‘অনেকে এ নিয়ে অনেক কিছুই বলবে আপনাকে। কেউ বলবে প্রধান নির্বাহীর এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত না, কেউ বলবে উচিত। কেউ বলবে একাদশ নির্বাচন কোচের দায়িত্ব, কেউ বলবে অধিনায়কের দায়িত্ব। কলকাতার অনেকে হয়তো এটাও ভেবে থাকতে পারে যে অধিনায়ক কতদিন থাকবে না থাকবে তার কোনো ঠিক নেই, তাই প্রধান নির্বাহীই এসব সিদ্ধান্ত নিক! অন্তত এখন আমরা জানি যে প্রধান নির্বাহীই দলটা চালায়, অধিনায়ক নয়।’

টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই নিজেদের একাদশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে কেকেআর। ভেঙ্কটেশ আইয়ার থেকে শুরু করে অজিঙ্কা রাহানে, বাবা ইন্দ্রজিৎ, অ্যারন ফিঞ্চ, সুনীল নারাইন—প্রত্যেকেই খেলেছেন ওপেনার হিসেবে। দুই ভারতীয় পেসারের জায়গায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হয়েছে উমেশ যাদব, শিভাম মাভি, রাসিখ সালাম, হারশিত রানাকে। দলের উইকেটকিপার হিসেবে কখনো খেলছেন শেলডন জ্যাকসন, কখনো ইন্দ্রজিৎ, বা কখনো স্যাম বিলিংস। ভারতীয় স্পিনার হিসেবে প্রথম কয়েক ম্যাচে বরুণ চক্রবর্তী খেলে ব্যর্থ হওয়ার পর সুযোগ পান অনুকূল রায়।

মাঝে বেশ কয়েক ম্যাচে খেলতে পারেননি প্যাট কামিন্স

সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে একাদশে বিদেশি পেসার খেলানো নিয়ে। সাধারণত এ জায়গায় প্যাট কামিন্সকে খেলানো হলেও শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়কের তেমন ফর্ম না থাকার কারণে কামিন্সকে বসিয়ে টিম সাউদিকে খেলানো শুরু হয়। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে আবার একজন বিদেশি ব্যাটসম্যানকে বসিয়ে কামিন্স-সাউদি দুজনকেই খেলানো হয়েছে। সবকিছুই একটা দিকে ইঙ্গিত করে, নিজেদের রসায়ন এখনো ঠিকঠাক খুঁজে পায়নি কলকাতা।

কেন পায়নি, সেটার ইঙ্গিত হয়তো শ্রেয়াস তাঁর কথাতেই দিয়ে দিয়েছেন!