আজ অস্ট্রেলিয়া দলে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ওয়ার্নার ও স্মিথের। তিন মাস আগে মুক্তি মিলেছে ব্যানক্রফটের। এঁদের মধ্যে ওয়ার্নারের নিষেধাজ্ঞাই নাকি সেরা ছিল!
তিন মাস আগেই ফিরেছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে আজ। বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় শাস্তি কাটিয়ে খেলায় ফিরেছেন সবাই। এরই মধ্যে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন ব্যানক্রফট। ওয়ার্নার বিপিএলের পর আইপিএলেও দারুণ শুরু করেছেন। স্টিভ স্মিথ যদিও অতটা প্রভাব ফেলতে পারছেন না ব্যাটে। মাইক আথারটনের চোখে নিষেধাজ্ঞাটা সবচেয়ে ভালো কাজে লাগিয়েছেন ওয়ার্নারই।
আইপিএলে প্রত্যাবর্তনেই ঝকঝকে ৮৫ রানের ইনিংস। আন্দ্রে রাসেলের অবিশ্বাস্য পাওয়ার হিটিং জয়বঞ্চিত করেছে ওয়ার্নার ও তাঁর দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। কিন্তু ওয়ার্নারের স্তুতি তাতে কমেনি। ওদিকে স্মিথ মাত্র ২০ রান করেছেন তাঁর প্রথম ম্যাচে। বিপিএলেও চোট পাওয়ার আগে যে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছেন, ঝলক দেখা যায়নি। তাই আথারটনের কথা শুনে মনে হতেই দুজনের ফর্ম বিবেচনা করেই তাঁর মনে হচ্ছে নিষেধাজ্ঞাটা ওয়ার্নারই ভালো ব্যবহার করেছেন।
তবে সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নিষেধাজ্ঞার অন্য দিকটাতেই নজর বেশি দিয়েছেন। ব্যাটের পারফরম্যান্স নয়, নিষেধাজ্ঞার সময়টা কীভাবে কাটিয়েছেন, সেটাই গুরুত্ব পেয়েছে আথারটনের কাছে। নিষেধাজ্ঞার সময় তিনজনই এ বিষয় নিয়ে আলোচনার বাইরে ছিলেন। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে বল টেম্পারিং নিয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা দেওয়ার পর আর অনেক দিন এ নিয়ে আর টুঁ শব্দ করেননি কেউ। এমনভাবেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে পারত। কিন্তু ডিসেম্বরে হঠাৎ করেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে স্মিথ ও ব্যানক্রফট নতুন করে ক্ষমা চেয়েছেন। স্মিথ তো বিজ্ঞাপনেও অংশ নিয়েছেন তাঁর ওই ঘটনাকে ব্যবহার করে।
অ্যাডাম গিলক্রিস্টের কাছে দুজনই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। দুজনের সাক্ষাৎকারেই দোষটা প্রায় পুরোপুরি ওয়ার্নারের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এরপর এ নিয়ে ওয়ার্নারের মতামত জানার চেষ্টা করা হয়েছে অনেক। গিলক্রিস্ট নিজেও ওয়ার্নারের সাক্ষাৎকার নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এ নিয়ে কোনো কথাই বলেননি এই ওপেনার। চুপ থেকে শাস্তি কাটিয়ে দেওয়াই ছিল তাঁর লক্ষ্য। আথারটনের চোখে এটাই ওয়ার্নারকে অন্য দুজনের চেয়ে আলাদা করে দিয়েছে, সে নিজেকে সবার দৃষ্টির বাইরে রেখেছিল। তাঁকে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁর নিজের দিকটাও ব্যাখ্যা করার। কিন্তু সে সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে এবং এ ব্যাপারে মুখ বন্ধ রেখেছে। ওয়ার্নার শুধু মাথা নিচু করে রেখেছে, মুখ বন্ধ রেখেছে এবং শাস্তি মেনে নিয়েছে।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ফেরার পর ওয়ার্নার অবশ্য কথা বলেছেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। কিন্তু সে ঘটনা নিয়ে কোনো কথা বলেননি বা কার দায় ছিল, সেটা জানিয়ে আলোচনার খোরাক জন্মাননি। নিজেকে সাধু বানানোর চেষ্টাও করেননি। এ কারণেই ওয়ার্নারের ‘নিষেধাজ্ঞাই নাকি সেরা’ ছিল আথারটনের চোখে, ‘অস্ট্রেলিয়ায় গত এক বছরে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে এমন লোকের তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড চলে গেছেন, চেয়ারম্যান ডেভিড পিভার, হাই পারফরম্যান্স ম্যানেজার প্যাট হাওয়ার্ড, প্রধান কোচ ড্যারেন লেম্যান ও বোলিং কোচ ডেভিড স্যাকের, নেই কেউ। নিজের চিন্তা নিজের মধ্যেই রেখে বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে ওয়ার্নার, সে সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে (অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার ক্ষেত্রে)।’