গতকাল কলম্বোয় ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নতুন এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন ডেভিড ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যান প্রথমবারের মতো এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আউট হয়েছেন ৯৯ রানে। ১১২ বলে ১২টি চারে নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন তিনি। শতরান করতে পারেননি এক রানের জন্য। কেবল শতক হারানোই নয়, তাঁর আউটটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনাও ম্লান করে দেয়। লঙ্কানদের ২৫৮ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শেষ অবধি থেমেছে ২৫৪ রানে। ৪ রানের জয়ে ৩০ বছর পর ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে শ্রীলঙ্কা।
ডেভিড ওয়ার্নারের মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেট ৩৫তম বারের মতো কাউকে ৯৯ রানে ফিরতে দেখল। তবে একটা ক্ষেত্রে তিনি মাত্র দ্বিতীয়। ওয়ার্নারের আগে মাত্র একজন ব্যাটসম্যানই ৯৯ রানে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন। ওয়ানডেতে ৯৯ রানে আউট হওয়া ক্রিকেটারদের নামগুলোর দিকে তাকালে চমৎকৃতই হতে হয়। অনেক কিংবদন্তিরই সমাবেশ ঘটেছে এই দলে। ওয়ানডে ইতিহাসে ৯৯ রানে ফেরা প্রথম ক্রিকেটার জেফ্রি বয়কট। ১৯৮০ সালের ২০ আগস্ট ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৯ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে চালু হওয়া ক্রিকেটের এক দিনের সংস্করণে ৯৯ রানে কোনো ব্যাটসম্যানের ফেরার ঘটনা ঘটে ৯ বছর পর। এ তালিকায় দুজন কিংবদন্তির নাম পাওয়া যাবে একাধিকবার। সনাৎ জয়াসুরিয়া ও শচীন টেন্ডুলকার। জয়াসুরিয়া দুইবার ৯৯ রানে ফিরেছেন (কলম্বো, ২০০১ ও অ্যাডিলেড, ২০০৩)। ভারতের ‘লিটল মাস্টার’ ফিরেছেন তিনবার। এক দিনের ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারই সবচেয়ে বেশিবার ৯৯ রানে আউট হয়েছেন।
৯৯ রানে আউট হওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের একজনই আছেন—মুশফিকুর রহিম। ২০১৮ সালে আবুধাবিতে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মুশফিক ৯৯ রানে আউট হয়েছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ৯৯ রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আছেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত (কটক, ১৯৮৪), ভিভিএস লক্ষ্মণ (নাগপুর, ২০০২), রাহুল দ্রাবিড় (করাচি, ২০০২), শচীন টেন্ডুলকার (বেলফাস্ট, ব্রিস্টল, মোহালি)। মজার ব্যাপার, টেন্ডুলকার তাঁর ক্যারিয়ারে যে তিনবার ৯৯ রানে আউট হয়েছেন, সেই তিনটি ম্যাচই ২০০৭ সালে। বিরাট কোহলি (বিশাখাপত্তম, ২০১৩), রোহিত শর্মাও (সিডনি, ২০১৬) আছেন এ তালিকায়।
পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম ৯৯ রানে ফিরেছিলেন রমিজ রাজা। সেটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে করাচিতে। পাকিস্তানের আর কোনো ক্রিকেটারই এক দিনের ম্যাচে ৯৯ রানে ফেরার দুর্ভাগ্যে পড়েননি। শ্রীলঙ্কার জয়াসুরিয়া ছাড়াও ৯৯ রানে আউট হয়েছেন রমেশ কালুভিতারানা (হারারে, ১৯৯৯), তিলকরত্নে দিলশান (কলম্বো, ২০১৩) ও কুশল পেরেরা (কলম্বো, ২০১৫)। ভারতের পাশাপাশি ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও ৮ বার ৯৯ রানে ফিরেছেন, তাঁরা হলেন জেফ্রি বয়কট, অ্যালান ল্যাম্ব, ক্রিস ব্রড, অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ, এউইন মরগান, জস বাটলার, অ্যালেক্স হেলস ও বেন স্টোকস।
ভারত ও ইংল্যান্ডের পর সবচেয়ে বেশিবার ৯৯ রানে ফেরা ক্রিকেটারদের দল দক্ষিণ আফ্রিকার। এ দলে আছেন ল্যান্স ক্লুজনার, গ্রায়েম স্মিথ, এবি ডি ভিলিয়ার্স, জেপি ডুমিনি। ডেভিড ওয়ার্নার ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে আছেন ম্যাথু হেইডেন, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। নিউজিল্যান্ডের স্টিফেন ফ্লেমিং ও লুক রনচি। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো ৯৯ রানে ফেরা একজন করে ক্রিকেটার আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের। তাঁরা হলেন যথাক্রমে ক্রিস গেইল, পল স্টার্লিং ও চামু চিভাভা।