একসময় প্রতিভাবান হিসেবেই মনে করা হতো আহমেদ শেহজাদকে। প্রতিভার স্ফুরণও ঘটিয়েছিলেন পাকিস্তানের জার্সিতে। ২০০৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। কিন্তু ১৩ টেস্ট, ৮১ ওয়ানডে আর ৫৯টি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেই থেমে গেছে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ২০১৯ সালে লাহোরে সর্বশেষ পাকিস্তান দলের হয়ে খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
কেন নিজের প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটল না, সে ব্যাপারে ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেহজাদ দোষারোপ করেছেন পাকিস্তান দলের সিনিয়র সদস্যদের। সেই সঙ্গে পাকিস্তান দলের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা সাবেক তারকাদেরও কাঠগড়ায় তুলেছেন। ২০১৬ সালে সে সময়ের পাকিস্তান দলের কোচ ওয়াকার ইউনিস তাঁর সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন বোর্ডের কাছে দিয়েছিলেন। সেই প্রতিবেদন তাঁর ক্যারিয়ারকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলেই মনে করেন শেহজাদ।
শেহজাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করে এ ধরনের প্রতিবেদন বোর্ডের কাছে দিয়ে ওয়াকার তাঁর ক্ষতিই করেছিলেন বলে জানিয়েছেন শেহজাদ, ‘আমি কখনোই প্রতিবেদনটি দেখিনি। তবে শুনেছি, ওয়াকার ইউনিস আমাকে নিয়ে কী বলেছিলেন! তিনি বলেছিলেন, আমি যদি দেশের হয়ে আবার খেলতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরতে হবে। এই আলোচনা মুখোমুখি হলে খুব ভালো হতো। তখন দেখা যেত, কে ঠিক আর কে ভুল!’
ওয়াকারের এই প্রতিবেদন কীভাবে তাঁর ক্যারিয়ারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, সেটির ব্যাখ্যায় শেহজাদ বলেন, ‘পুরো বিষয়টিই ছিল পূর্বপরিকল্পিত। আমাকে ডাকা হলে আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে কেন খেলতে পারছিলাম না, তার ব্যাখ্যা দিতে পারতাম। যেহেতু আমি আমার বক্তব্য রাখতে পারিনি, তাই আমি মনে করি, বিষয়টা আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বিরাট কোহলির সঙ্গেই তুলনা হতো শেহজাদের। কোহলির ধারেকাছেও কখনো পৌঁছাতে পারেননি। তবে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ও সমর্থকেরা ভালোভাবেই বিশ্বাস করতেন, কোহলি হওয়ার সব প্রতিভাই ছিল শেজহাদের। এ ব্যাপারে শেহজাদের নিজের অভিযোগ বোর্ড ও দলের সিনিয়র সদস্যদের বিরুদ্ধেই, ‘আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি। বিরাট কোহলির ক্যারিয়ার দারুণ উপকৃত হয়েছে ভারতীয় দলে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে খেলে। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, আমি পাকিস্তান দলে কখনোই ধোনির মতো অভিভাবকসুলভ কাউকে পাইনি। পাকিস্তানে কেউই কারও সাফল্য সহ্য করতে পারে না। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটার, সাবেক ক্রিকেটাররা কেউই চান না, অন্য কেউ সাফল্য পাক। এটা পাকিস্তান ক্রিকেটের সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক দিক।’