ভারত সফরে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ দল? একটা সমস্যা তো অবশ্যই প্রতিপক্ষ ভারত নিজেই। ঘরের মাঠে তাদের মুখোমুখি হওয়াটা যেকোনো দলের জন্যই কঠিন পরীক্ষা। খেলাও হবে বিভিন্ন শহরে, মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জে তাই প্রতি ম্যাচেই নতুন করে পড়বে বাংলাদেশ দল।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে লিটন দাস বললেন আরও একটা সমস্যার কথা। এই সমস্যার নাম বল।
বাংলাদেশ দল কোকাবুরা বলে খেলেই বেশি অভ্যস্ত হলেও ভারতে গিয়ে খেলতে হবে এসজি বল দিয়ে। লিটনের চোখে ‘বড় দল’ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে যেটা ভোগাতে পারে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘ভারতে বলটাও বদলে যাবে। এসজি বলে খেলা কিছুটা কঠিন। বিশেষ করে কোকাবুরাতে নতুন বল খেলা কঠিন, পুরোনো বলে খেলা একটু সহজ। কিন্তু এসজিতে নতুন বলে খেলা তুলনামূলক সহজ, পুরোনো বলে খেলাই কঠিন।’
অবশ্য যে সিরিজে যে বলে খেলা হয় সেই সিরিজের অনুশীলনটাও সেই বলেই করে বাংলাদেশ দল। ভারতে টেস্ট হবে এসজি বলে, টি-টোয়েন্টি কোকাবুরা বলে। মিরপুরে টেস্টের অনুশীলনটা তাই হচ্ছে এসজি বলেই। আবার টি-টোয়েন্টির অনুশীলনে থাকে কোকাবুরা বল।
এসজি বলে অনভ্যস্ততার কথা মাথায় রেখে অবশ্য পাকিস্তান সফরের সময়ও একাদশের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা লাল বলের অনুশীলন করেছেন এসজি বলে। পাকিস্তানে এবং এখন ঢাকায়ও দলের মূল বোলারদের বল খেলেই হচ্ছে সে অনুশীলন। ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে এই প্রস্তুতি কিছুটা হলেও কাজে দেবে লিটন-নাজমুলদের।
পাকিস্তান থেকে ভারত সিরিজের জন্য আরও একটি জিনিস নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ দল—সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস। ২-০–তে জেতা সিরিজটা বাংলাদেশ দলে যে কয়জন ক্রিকেটারের খুব ভালো কেটেছে, দ্বিতীয় টেস্টের ম্যান অব দ্য ম্যাচ লিটন তাঁদের অন্যতম। প্রথম টেস্টে এক ইনিংস ব্যাট করে করেছেন ৫৬ রান, দ্বিতীয় টেস্টেও এক ইনিংস ব্যাট করে খেলেছেন ১৩৮ রানের অনবদ্য ইনিংস।
লিটন অবশ্য এরপরও বাস্তবতার মাটিতেই পা রেখে আছেন। পাকিস্তান সিরিজকে ‘অতীত’ বলে দিয়ে এক প্রশ্নে তাঁর মন্তব্য, ‘১০ বছর হয়ে গেছে ক্রিকেট খেলছি, কিছু অভিজ্ঞতা তো হয়েছেই। এখন সময় দায়িত্ব নেওয়ার। দায়িত্ব যদি এখন না নিই তাহলে আর কবে!’
পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে অনেকগুলো উন্নতির রেখা ফুটে উঠেছে, যার অন্যতম খারাপ অবস্থা থেকে ফিরে এসে টেস্টে চালকের আসনে বসা। লিটন অবশ্য বলেছেন, এই জায়গায় আরও উন্নতি করার চেষ্টা করবেন তাঁরা। ড্রেসিংরুমের আলোচনায়ও থাকে সেসব পরিকল্পনা।
টেস্টে ইদানীং কিছুটা আক্রমণাত্মক লিটনের ব্যাট। তাঁর চোখে অবশ্য এটা সময়েরই দাবি, ‘আমার কাছে যেটাকে রান করার বল মনে হয়, আমি ওটাতেই রান করার চেষ্টা করি। যেকোনো ফরম্যাটেই এখন মানুষ রানটাকে প্রাধান্য বেশি দেয়। আমার কাছে মনে হয়, আমি টেস্টে যে ধরনের ব্যাটিং করি, টেস্টে এখন সবাই সেরকম আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটাই বেশি খেলে। তাতে আউটের সম্ভাবনা বেশি থাকলেও সঙ্গে রান হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।’
শট খেলার পেছনে তাঁর আরেকটি যুক্তি, ‘আমি যে জায়গায় নামি, সঙ্গে হয়তো মিরাজকেই পাই। ওপর থেকে সাকিব ভাই, মুশফিক ভাই কাউকে পেতে পারি বা টপ অর্ডারের কেউ। মিরাজ যেহেতু বোলার, আমি যদি একটু শট না খেলি, দলের স্কোর বাড়বে না। আমি এভাবেই খেলতে চাই।’
লিটনের টেস্টের অনুশীলনেও দেখা যায় সেই চেষ্টা। তাঁর কথায়, ‘অনুশীলন যেভাবে করি, আমি সেভাবেই খেলার চেষ্টা করছি।’