দুই ইনিংস মিলিয়ে খেলা হয়েছে মোটে ৩৫.২ ওভার। দৈর্ঘ্য হিসাব করলে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সমানও টেকেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান ম্যাচটি। মাঠে বেশিক্ষণ থাকার ‘কষ্ট’টা সবচেয়ে কম করতে হয়েছে পাকিস্তানি বোলারদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা মাত্র ১৩.৪ ওভার মাঠে রেখেছেন আমির-ওয়াহাবদের। এমন ‘আরাম’ করার সুযোগ তো আর রোজ রোজ মেলে না!
রসিকতা মনে হলেও ‘আরাম’ করার কথাটা কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই সত্য। ম্যাচ হারতে পাকিস্তানি বোলারদের যে রীতিমতো কোনো কষ্টই করতে হয়নি! পাকিস্তানের তিন বোলার মিলে মাত্র ৮২ বল করতেই হয়ে গেছে ম্যাচের মীমাংসা।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের তোপের সামনে পড়ে ১০৫ রানে অলআউট হয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহের রেকর্ড করেছে পাকিস্তান। এখানে দ্বিতীয় হলেও আরেক জায়গায় ঠিকই প্রথম হয়েই ফিরেছেন সরফরাজ আহমেদরা।
ট্রেন্ট ব্রিজে আজ ২১৮ বল হাতে রেখেই পাকিস্তানকে হারের স্বাদ দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরিসংখ্যান বলছে, ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি বল হাতে রেখে আর কোনো ম্যাচ হারেনি পাকিস্তান। এর আগে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ১৭৯ বল হাতে রেখেই পাকিস্তানকে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এত দিন পর্যন্ত এটিই ছিল বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে পাকিস্তানের হারের রেকর্ড।
ওয়ানডেতে অবশ্য এর চেয়েও বেশি ‘আরাম’ করার সুযোগ একবার পেয়েছিলেন আমির-ওয়াহাবদের পূর্বসূরিরা। তবে সেটি বিশ্বকাপে নয়। মজার ব্যাপার হলো, সেই ম্যাচেও পাকিস্তানি বোলারদের এমন ‘আরাম’ উপহার দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজই। ১৯৯৩ সালে কেপটাউনে টোটাল ইন্টারন্যাশনাল সিরিজের নবম ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪৩ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ওয়াসিম আকরামের পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২২৫ বল বাকি থাকতেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রিচি রিচার্ডসন ২৯ বলে ৭ রানের ‘মন্থর’ ইনিংস না খেললে আরও বেশি বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানকে হারের স্বাদ দিতে পারত ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টমাস-রাসেলদের বাউন্সারের সামনে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের অসহায় ভঙ্গিতে আত্মসমর্পণ চোখে পড়েছে বেশ ভালোভাবেই। সামনের ম্যাচগুলোয় পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা বাউন্সার সামলানোয় দক্ষতা দেখাতে না পারলে এ রকম ‘আরামের’ দিন আরও আসতে পারে পাকিস্তানি বোলারদের!