বাংলাদেশের ক্রিকেটের আবির্ভাবে নতুন দিনের যে গান শুনিয়েছিলেন, সেটি নিজেরই খামখেয়ালিতে আর পূর্ণতা দিতে পারেননি। অধারাবাহিকতা, ফর্মহীনতা আর মাঠের বাইরের বিতর্কে নাসির হোসেন যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে বিগত দিনের অধ্যায়ের নাম।
টি-টেন ক্রিকেটে গত পরশু আলো ছড়িয়ে আবার আলোচনায় এসেছিলেন নাসির। কিন্তু কাল আবার মিইয়ে গেলেন। আবুধাবিতে কাল কালান্দার্সের বিপক্ষে নাসিরের দল পুনে ডেভিলস হেরেছে ৯ উইকেটে। নাসির ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পাননি। বল হাতে ১ ওভার করেছেন, তাতে দিয়েছেন ২১ রান।
টি-টেনে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বল হাতে যেন মার খাওয়ার দিনই ছিল। এদিকে নাসির রান দিয়েছেন, ওদিকে মারাঠা অ্যারাবিয়ানসের হয়ে বল হাতে রান দিয়েছেন সোহাগ গাজী ও মুক্তার আলী। সোহাগ তবু ১ ওভারে ১৫ রান দিয়েছেন, মুক্তার আলী তো বেধড়ক মার খেয়েছেন! ১ ওভারে দিয়েছেন ৩৩ রান।
বোলারদের ব্যর্থতার মধ্যে বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাট হাতে যা কিছুটা আলো ছড়িয়েছেন শুধু মোসাদ্দেক হোসেনই। ২২ বলে করেছেন ৩৫ রান। তবু দলকে জেতাতে পারেননি। মোসাদ্দেক-সোহাগ-মুক্তারের মারাঠা অ্যারাবিয়ানসেরও পরিণতি নাসিরের দলের মতোই, দিল্লি বুলসের কাছে হেরেছে ৯ উইকেটে।
আগের দিন ডেকান গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে দলকে জেতানোর পথে নাসির দারুণ বোলিং করেন, নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। কাল আর সাফল্য পাওয়া হলো না। টসে হেরে যান নাসির, তাঁর দল পুনে ডেভিলসকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান কালান্দার্স অধিনায়ক সোহেল আখতার।
ব্যাটিংটা একেবারে খারাপ হয়নি পুনের। ওপেনার টম কোলার-চ্যাডমোরের ২৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৪ রান আর তিনে নামা দারবিশ রাসুলির ২৪ বলে ৩৯ রানের সৌজন্যে ১০ ওভারে পুনে ২ উইকেট হারিয়ে করে ১০৭ রান।
১০৮ রানের লক্ষ্যে কালান্দার্স আরও ভয়ংকর। পুনের হয়ে পাঁচ নম্বরে বোলিং করতে আসা করণের ইকোনোমি রেটই শুধু ১০-এর নিচে, তাঁর ১ ওভারে কালান্দার্স নিয়েছে ৯ রান। বাকি চার বোলারেরই ইকোনোমি রেট ১২-র ওপরে। মোহাম্মদ আমির ২ ওভারে দিয়েছেন ২৬ রান, নাসির ১ ওভারে ২১, হার্দুস ভিলোয়েন ২ ওভারে ৩০ আর মুনিস আনসারি ১.১ ওভারে দিয়েছেন ২২ রান।
কালান্দার্স ওপেনার টম ব্যান্টন ১৮ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় নিয়েছেন ৪৫ রান। অন্য ওপেনার শারজিল খান ১৩ বলে করেছেন ২৮ রান, তিনে নামা সোহেল আখতার ১৩ বলে ৭ চারে ৩৩ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
অন্য ম্যাচে টসে হেরেছেন মোসাদ্দেক হোসেনও। টসে জিতে মোসাদ্দেকের মারাঠা অ্যারাবিয়ানসকে ব্যাটিংয়ে পাঠান দিল্লি বুলস অধিনায়ক ডোয়াইন ব্রাভো। পাঁচে নামা মোসাদ্দেকের ২২ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ রানের সৌজন্যেই ১০ ওভারে ৪ উইকেটে ৮৭ রান করে মারাঠা।
মোসাদ্দেক নামার সময় দলের রান ছিল ৩.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ২৬। সেখান থেকে জাভেদ আহমাদির সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। মারাঠার ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এই আহমাদিরই, ১৯ বলে করেছেন ২৪ রান।
কিন্তু ৮৮ রানের লক্ষ্যে নেমে দিল্লি বুলসের ওপেনার এভিন লুইসের ঝড়ের সামনে আর টিকতে পারেনি মোসাদ্দেকের দল। ১৬ বলে ২ চার ও ৭ ছক্কায় অপরাজিত ৫৫ রান করেছেন লুইস। তিনে নামা রবি বোপারা অপরাজিত ছিলেন ১২ বলে ২৮ রানে। বোলিংয়ে মুক্তার আলীই সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছেন ১ ওভারে ৩৩। আর কেউ ওভারে ২০-এর বেশি রান দেননি, ১০-এর কমও কারও ইকোনোমি রেট নেই। সোহাগ দিয়েছেন ১ ওভারে ১৫।
দিনের অন্য ম্যাচে ক্রিস গেইলের টিম আবুধাবিকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে কাইরন পোলার্ডের ডেকান গ্ল্যাডিয়েটর্স।