চট্টগ্রাম টেস্টের জয়ের নায়ক ফিরে গেলেন। কাইল মেয়ার্স অসাধারণ ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিলেন। ঢাকায় এসে শিকার হলেন আবু জায়েদের।
সকালের সেশনে বাংলাদেশ নিতে পেরেছিল মাত্র ১ উইকেট। তাইজুল ইসলাম যদি ওপেনার শন ক্যাম্পবেলকে এলবির ফাঁদে না ফেলতে পারতেন, তাহলে প্রথম সেশনটা বাংলাদেশের জন্য তীব্র হতাশারই হতো। কিন্তু বাংলাদেশের বাঁ হাকি স্পিনার সেটি হতে দেননি। সকালের সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা দারুণ স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলেছেন। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাফেটতো ছিলেন অসাধারণ। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির পর যেন এলোমেলো ক্যারিবীয়রা। এ সময় ৩ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিরতির পর প্রথমে আঘাত হানেন পেস বোলার আবু জায়েদ। শেন মোজলিকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্বস্তি এনে দেন তিনি। এরপর এক বছরেরও বেশি সময় পর টেস্ট খেলতে নামা সৌম্য সরকারের মিডিয়াম পেসে ফিরে যান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাফেট।
বিরতির পরই সৌমকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তিনি এই টেস্টে খেলছেন একজন অলরাউন্ডার হিসেবেই। তাঁর মিডিয়াম পেস বলে সকাল থেকে দারুণ খেলা ব্রাফেট যেন কিছুটা ধৈর্যহারাই হয়ে পড়ছেন। তৃতীয় ওভারেই অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের একটি বলে খোঁচা দিয়ে দিলেন তিনি। বলটি স্লিপে লুফে নেন নাজমুল হোসেন।
এর আগে, মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক পরপরই আবু জায়েদ ব্রেক থ্রু উপহার দেন বাংলাদেশকে। তিনি ফেরান শেন মোজলিকে। অফ স্টাম্পের বাইরে বলটি ফেলেছিলেন জায়েদ। কিন্তু শরীরের অনেক বাইরের এই বলটি খেলতে গিয়ে প্লেইড অন হয়ে যান মোজলি। বল তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভেঙে দেয়।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে তাইজুল প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি ভেতরে ঢুকছিল। সেটি সুইপ খেলতে চেয়েছিলেন ক্যাম্পবেল। ব্যাটের নিচ দিয়ে সেটি আঘাত করে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানের ঊরুতে। আবেদনে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সারা দেন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। তবে তাৎক্ষণিক রিভিউ নিয়েছিলেন ক্যাম্পবেল। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় দারুণ সিদ্ধান্তই দিয়েছেন শরফুদ্দৌলা।
এই শরফুদ্দৌলার এর আগে নবম ওভারে আবু জায়েদের বলে ক্যাম্পবেলের বিপক্ষেই এলবিডব্লুর আবেদনে আঙুল তুলেছিলেন। কিন্তু সে যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি।
টসে জিতে ব্যাটিং করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেটি হয়নি। তিন পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ দলের প্রথম সাফল্যটা এল একটু দেরিতেই। এই প্রতিবেদন লেখার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১১৮। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাফেট ফিরেছেন ১২২ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত। ক্যাম্পবেলের বিদায়ের পর তাঁর সঙ্গী শেন মোজলি আউট হয়েছেন ৭ রানে। মেয়ার্স ফিরেছেন ৫ রানে। এনক্রুমা বোনার অপরাজিত আছেন ১৯ রানে। এ মুহূর্তে উইকেটে এসেছেন জার্মেই ব্ল্যাকউড।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে তিন–তিনটি উইকেট হারিয়ে বেশ বিপাকেই এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর মোক্ষম সময় এখন এটিই।
এখনো পর্যন্ত চার বোলার ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ—আবু জায়েদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার। সকালের দিকে দুই অফ স্পিনার মিরাজ আর নাঈমকে দিয়ে বেশ কিছু ওভার করানো হলেও আপাতত পেসেই আস্থা বাংলাদেশ–অধিনায়কের। পেসাররাই এনে দিয়েছেন চারটির মধ্যে তিনটি উইকেট।