ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণের সামনে যেভাবে আত্মসমর্পণ করেছে পাকিস্তান, তাতে এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা থাকছেই। তার ওপর আগের ম্যাচের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই পরের ম্যাচে নামতে হবে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পাকিস্তান কীভাবে ইংলিশদের পেস সামলাবে, সেটি নিয়ে শঙ্কায় আছেন ওয়াকার ইউনিসও। তবে একই সঙ্গে এটাও বলছেন, পাকিস্তানকে এখনই বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়াটা বোকামি হবে।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ উপলক্ষে আইসিসির ওয়েবসাইটে কলাম লিখছেন পাকিস্তানের সাবেক কোচ ওয়াকার। সেখানেই নিজ দলকে নিয়ে আশাবাদী হতে চাইলেন তিনি, ‘আপনাকে মনে রাখতে হবে, এই বিশ্বকাপ অনেক লম্বা একটি টুর্নামেন্ট। এখনো অনেক ক্রিকেট খেলা বাকি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারের পরই তাই পাকিস্তানকে বাতিল করে দেওয়াটা বোকামি হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হওয়ার খানিক আগে আরেক কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম ধারাভাষ্যকক্ষে মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, ১৯৯২–তে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেই ১০ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরেছিল ইমরান খানের দল। কিন্তু ওয়াকার বলছেন, পুরোনো স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বসে থাকার সুযোগ নেই পাকিস্তানের, ‘পাকিস্তানের অতীত রেকর্ড নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। ১৯৯২–তে প্রথম ম্যাচ হেরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ২৭ বছরের পুরোনো স্মৃতি নিয়ে বসে থাকতে পারি না। ২০১৯–এ বিশ্বকাপ জিততে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে মাঝে সময় আছে মাত্র এক দিন। এত কম সময়ের মধ্যে ব্যাটিং বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে ওঠা কঠিন, সেটি ওয়াকারও জানেন। আর জানেন বলেই উত্তরসূরিদের জন্য দিয়েছেন বেশ কিছু পরামর্শ, ‘ও রকম একটা হার আপনার আত্মবিশ্বাস একদম তলানিতে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু ওই হার নিয়ে পড়ে না থেকে পাকিস্তানকে ইতিবাচকভাবে ভাবতে হবে, ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আপনাকে শান্ত থাকতে হবে। ড্রেসিংরুমের সবাই ওই হারের পর কষ্ট পাচ্ছে। তাদের নিজেদের সমস্যা সম্পর্কে ভেবে নিজেদেরই সমাধান বের করতে হবে। আমাদের এই হার থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’
পাকিস্তান সম্পর্কে বলতে গিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড সম্পর্কেও কথা বলতে হয়েছে ওয়াকারকে। ওয়ানডেতে ৪১৬ উইকেটের মালিক এই ইংল্যান্ড দলে দারুণ মুগ্ধ, ‘ইংল্যান্ড সম্ভবত এর আগে কখনো এত ভালো ক্রিকেট খেলেনি। আমার মনে হয়, বিশ্বকাপের জন্য তাদের দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হওয়ার খুব ভালো সুযোগ আছে এবার।’
সেরা সময়ে নিজে ছিলেন বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির পেসার। সে কারণেই বোধ হয়, ইংল্যান্ডের নতুন সেনসেশন জফরা আর্চারের বোলিংয়ে মজেছেন ওয়াকার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ বোলিং করা আর্চারকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা অকপটেই জানিয়েছেন তিনি, ‘জফরা আর্চারের বোলিং আমাকে মুগ্ধ করেছে। ওর বোলিংয়ে অতিরিক্ত বাউন্স আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সে উইকেট নিতে জানে। আমি নিশ্চিত, বিশ্বকাপে সে নিজের পারফরম্যান্সের ছাপ রেখে যাবে। ও এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র হতে চলেছে, যাকে নিয়ে মানুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কথা বলবে।’