দুই ছেলে শন ও মিচেলের সঙ্গে জিওফ মার্শ
দুই ছেলে শন ও মিচেলের সঙ্গে জিওফ মার্শ

এক পরিবারে চার বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতিটা কেমন, সেটি মার্শ পরিবারের চেয়ে ভালো আর কে জানেন? একটা পরিবারে চারটা বিশ্বকাপ গেলে অবশ্য অনুভূতিটা সহজ-স্বাভাবিকই হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কাল মিচেল মার্শকে দেখলে মনে হবে বিশ্বকাপ সত্যিই অন্য রকম এক অনুভূতির নাম।

‘মার্শ’ পরিবারের তিনজন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন। আজ থেকে ৩৪ বছর আগে পরিবারের ‘বড়’ মার্শ—জিওফ মার্শ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জিতেছিলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সেই জিওফই কোচ হয়ে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ জিতলেন দেশের হয়ে। দুই ছেলে মিচেল মার্শ আর শন মার্শকেও তৈরি করেছেন দেশের হয়ে খেলার উপযোগী করে। মিচেল মার্শ কাল জিতলেন তাঁর দ্বিতীয় ‘বিশ্বকাপ’। এর আগে ২০১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলীয় দলেও ছিলেন মিচেল।

শন মার্শ-মিচেল মার্শ। মিচেল দুইবার বিশ্বকাপ জিতলেও শন এখনো তেমন কিছু জেতেননি

বাবা আর ভাইয়ের বিশ্বকাপ সাফল্য দেখে শন এখন আক্ষেপে পুড়তে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার এতগুলো বিশ্বকাপ যে পরিবারে এসেছে, অথচ অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে খেলে একবারও যে সে গৌরব গায়ে মাখা হয়নি জিওফের দুই ছেলের বড়জন শন মার্শের।

বাবা জিওফের মতোই মিচেল বিশ্বকাপ জিতেছেন নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসেই। বিশ্বকাপের অভিষেকেই দুজন অনন্য কীর্তি গড়েছিলেন। জিওফ ১৯৮৭ বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। হয়েছিলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। মিচেলও ২০১৫ বিশ্বকাপে বল হাতে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। ম্যান অব দ্য ম্যাচ অবশ্য হতে পারেননি। তবে সেদিন ঠিকই বাবার নাম উজ্জ্বল করেছিলেন।

বিশ্বকাপ অবশ্য এর আগেও একটা জিতেছেন মিচেল মার্শ, তবে সেটি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। ২০১০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়কই ছিলেন মার্শ। দুবাইয়ে কাল অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের জশ হ্যাজলউড আর অ্যাডাম জাম্পাও ছিলেন ২০১০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী সেই দলে।

জিওফ মার্শ ১৯৮৭ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন খেলোয়াড় হিসেবে, ১৯৯৯ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে জেতেন আরেকটি বিশ্বকাপ

বাবার নাম উজ্জ্বল করেছেন শন মার্শও। বিশ্বকাপ জয় হয়তো হয়নি, কিন্তু দেশের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ঠিকই খেলেছেন। জিওফ মার্শ একবার রসিকতা করে একটা কথা বলেছিলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে প্রায়ই বলি, আমাদের আরও সন্তান নেওয়া উচিত ছিল। তাহলে সেটি অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটকেই লাভবান করত।’

এক মার্শ পরিবারই যা করেছে, সেটি অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট। বাবা-ছেলে মিলে চার বিশ্বকাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও হিসেবে নিলে আসলে পাঁচটি বিশ্বকাপ—এটাও তো মুখের কথা নয়। শন মার্শ এখন খুব করেই চাইবেন সংখ্যাটা আরও একটু বাড়িয়ে নিতে।