টনটনে সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয় দলে আছে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো অনেক খেলোয়াড়। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ বলছেন, একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো খেলোয়াড় তাঁদেরও আছে
বাংলাদেশ দল লম্বা একটা বিরতি পেয়েছে। পরের ম্যাচ সেই সোমবার। মাঝে পাঁচ দিনের বিরতি। বিরতির প্রথম দুদিন অনুশীলন সেশন রাখা হয়নি। অনুশীলন যেহেতু নেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুনের মতো কয়েকজন ক্রিকেটার কাল ব্রিস্টল থেকে টনটনে না এসে নিজেদের মতো করেই সময় কাটিয়েছেন।
কার্ডিফ-ব্রিস্টল এমনিই ছোট শহর। টনটন যেন আরও ছোট। তবে ক্রিকেট নিয়ে এই শহরের আগ্রহটা বেশ চোখে পড়ল। শহরের নানা জায়গায় বিশ্বকাপের প্রচারণা, স্থানীয় পত্রিকায় বিশেষ পাতা প্রকাশ, মানুষের মধ্যে টুর্নামেন্ট নিয়ে আলোচনা—কার্ডিফ-ব্রিস্টলের মতো টনটন ক্রিকেট নিয়ে অতটা নির্লিপ্ত নয়! বিশ্বকাপে মাত্র তিনটি ম্যাচ পেয়েছে টনটন। এর মধ্যে দুটি শেষও হয়ে গেছে। বাকি আছে শুধু বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটি। টনটনবাসীর চাওয়া, বৃষ্টিতে অন্তত ম্যাচটা যেন ভেসে না যায়! আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে মনে হচ্ছে, ব্রিস্টলের মতো টনটন হতাশ করবে না ক্রিকেটপ্রেমীদের।
টনটন শহর যেমন ছোট, মাঠটাও ছোট। বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো খেলতে এসেছে এ ভেন্যুতে। ছোট এ মাঠে কৌশল কী হবে, সে অভিজ্ঞতা কারও নেই। খেলাটা আবার এমন প্রতিপক্ষের সঙ্গে, যে দলে আছে ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, এভিন লুইস, শিমরন হেটমায়ারের মতো দুর্দান্ত সব পাওয়ার হিটার। মাঠের যে আয়তন, বাংলাদেশের বোলারদের বাউন্ডারির ওপারে আছড়ে ফেলতে বেশ সুবিধাই হবে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের!
বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ অবশ্য এসব নিয়ে ভাবছেন না, ‘মাঠ সবার জন্যই সমান। ওদের পাওয়ার হিটার আছে জানি, জোরে বল করতে পারে, এমন বোলারও আছে। ওদের শক্তি সম্পর্কে জানি। চেষ্টা করব ছোট মাঠ আমরা কীভাবে কাজে লাগাতে পারি।’
মাঠের সীমানা ছোট হলে যদি গেইল-রাসেলরা খুশি হন, তামিম-সৌম্যদেরও অখুশি হওয়ার কথা নয়। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা যত জোরেই উড়িয়ে মারুন, সেটি তো আর ছক্কার বেশি হবে না! ছক্কাই হবে। বরং পাওয়ার হিটার কম থাকা বাংলাদেশ দলের জন্য এটি সুবিধা।
ছোট মাঠের সুবিধা বাংলাদেশ কতটা কাজে লাগাতে পারবে, তা পরের ম্যাচেই বোঝা যাবে। কিন্তু ক্যারিবীয় দলে যে রাসেল-গেইলদের মতো বিস্ফোরক সব ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা যেকোনো মাঠে একাই ঘুরিয়ে দিতে পারেন ম্যাচ। এ পার্থক্য বাংলাদেশ ঘোচাবে কী করে? খালেদ মাহমুদ বলছেন, তাঁদের হাতেও ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো খেলোয়াড় আছেন, ‘এ টুর্নামেন্টে সব দলই আমাদের জন্য হুমকি। টুর্নামেন্টটা অনেক কঠিন। শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়, যেকোনো দল আমাদের হারিয়ে দিতে পারে। আবার আমরাও যেকোনো দলকে হারিয়ে দিতে পারি। সাকিবের একারই সামর্থ্য আছে ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়ার। তামিম-মুশফিকেরও আছে। জানি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ শক্তিশালী দল। আপনি যদি আরও সামনে যেতে চান, কঠিন এ পথ পাড়ি দিয়েই যেতে হবে।’
দেশ-বিদেশে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সবশেষ নয় ওয়ানডেতে সাতবারই হারিয়েছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের স্মৃতি এত দ্রুত ধূসর হওয়ার কথা নয়। সেই আত্মবিশ্বাস থেকে টনটনে স্কোরলাইনটা কি ৮-২ করতে পারবেন মাশরাফিরা?