ইমরান তাহিরের উদ্যাপনটা চোখে পড়ে বেশ। কোনোভাবে একটা ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারলেই হয়েছে। দুই হাত প্রসারিত করে ভোঁ দৌড়। সে দৌড় কোথায় বা কখন থামবে, কেউ বলতে পারে না। এমনও দেখা গেছে, তাঁর সঙ্গে উদ্যাপন করার জন্য সতীর্থরা কিছু দূর দৌড়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন, অত দৌড়ানো সম্ভব নাকি! দক্ষিণ আফ্রিকার এই কার্যকরী লেগ স্পিনার পারলে যেন মাঠ-দেশ-মহাদেশের সীমারেখা পেরিয়ে চলে যান!
এই উদ্যাপন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় হাসিঠাট্টাও কম হয় না। উদ্যাপন করতে করতে তাহির মাঠঘাট পেরিয়ে পৃথিবীর বাইরে অন্তরিক্ষে চলে গেছেন— অতি উৎসাহী ভিডিও সম্পাদনাকারীদের দেখা যায় এমন ভিডিওচিত্র বানাতে। স্পিনার হিসেবে তাহির নিজেও খুব উঁচুমানের, ফলে এমন উদ্যাপন প্রায় প্রতি ম্যাচেই কয়েকবার করে দেখা যায়। টেস্টে সেভাবে নিজের জাত চেনাতে না পারলেও, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাহিরের উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা অস্বীকার করার কেউ নেই। ফলে বছরের পর বছর ধরে খেলে যাচ্ছেন বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। আইপিএলে যেমন তিন বছর ধরে খেলছেন মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। দলের কম্বিনেশনের কারণে গত আসরে দলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়েও এবার একাদশে জায়গা পাচ্ছেন না। আইপিএল উপলক্ষেই ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জনপ্রিয় ইউটিউব অনুষ্ঠানে সম্প্রতি অতিথি হয়ে এসেছিলেন এই তারকা। সেখানেই জানালেন নিজের উদ্যাপন নিয়ে মজার এক তথ্য। যে তথ্য শুনলে অতি উৎসাহী ভিডিওচিত্র নির্মাতাদের কল্পনার দৌড়কে আর অলীক বলে মনে হবে না হয়তো!
নিজের উদ্যাপন নিয়ে তাহির বলেছেন, ‘আমি আমার উদ্যাপনের বিষয়টাকে নিখাদ আবেগ ও উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ বলব। ১৫ বছর আগে যখন ইংল্যান্ডে খেলতাম, তখন একবার একটা উইকেট নিলাম, দুর্দান্ত একটা ক্যাচ ধরলাম। উদ্যাপন করতে গিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে মাঠ থেকে বেরিয়ে রাস্তার ধারে চলে গেলাম। পরে সেখান থেকে আমাকে হেঁটে হেঁটে মাঠে ফিরতে হয়েছিল। মানুষজন তো হেসেই খুন। আমি জানি আমি যেভাবে উদ্যাপন করি সেটা অনেক মজাদার। তবে আমি এমনিই। প্রত্যেকটা উইকেটই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অত ভেবেচিন্তে উদ্যাপন করি না আমি।’
এভাবেই বছরের পর বছর মানুষকে আনন্দ দিতে চান তাহির, খেলার মাধ্যমেই খেয়াল রাখতে চান নিজ পরিবারের, ‘আমি ক্রিকেট খেলিই টাকা উপার্জন করার জন্য। পরিবারকে সাহায্য করার জন্য। যতটুকু পারি, আমাকে খেটে যেতে হবে। উপার্জন করে যেতে হবে। আমি যদি কঠোর পরিশ্রম করতে পারি, তাহলে সমস্যা কোথায়? যত দিন পারি, খেলে যেতে চাই, বিশ্বের সবচেয়ে বুড়ো ক্রিকেটার হতে চাই।’