বাংলাদেশের সঙ্গে ইশান্ত শর্মার সম্পর্ক আজকের নয়।
২০০৭ সালের ২৫ মে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল এই পেসারের। আবার বাংলাদেশ ও ভারত—দুই দেশই নিজেদের ইতিহাসের প্রথম দিবারাত্রির যে টেস্ট খেলেছিল, সেখানেও ছিলেন ইশান্ত। শুধু ছিলেন বলাটা ভুল হবে, ম্যাচসেরাই হয়েছিলেন। প্রায় ১৪ বছর পর সেই ইশান্তই আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে নেমেছেন ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট খেলতে। নাহ, ইশান্তের শততম টেস্টে বাংলাদেশের ছোঁয়া নেই। এ ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। কিন্তু যে খেলোয়াড়ের টেস্ট ক্যারিয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের এতটা মেলবন্ধন, তাঁর অর্জনে চোখ রেখে কিছুটা কি আক্ষেপ হবে না বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের!
২০০৭ সালের সেই বাংলাদেশ-ভারত সিরিজে আগের টেস্টেই অভিষিক্ত হয়েছিলেন আরেকজন। মে মাসের ১৮ তারিখে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া সেই টেস্টে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের টেস্ট ক্যাপ মাথায় দেওয়া সে তরুণ সময়ের ফেরে আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। তিনি সাকিব আল হাসান। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ইশান্ত যেখানে গত ১৪ বছরে ১০০ টেস্ট খেলে ফেলেছেন, সাকিব টেস্ট খেলেছেন সাকল্যে ৫৭টা। ইশান্তের চেয়ে ৪৩টা কম।
বাংলাদেশ এই সময় টেস্ট খেলেছে ৭৬টি। ভারত খেলেছে ১৪৪টি। বাংলাদেশ এই সময়ে টেস্ট খেলেছেই কম। এর মধ্যে ১৯টা টেস্টে খেলা হয়নি সাকিবের। আর ইশান্ত খেলেননি ৪৪টি টেস্ট। অর্থাৎ সাকিবের চেয়ে ২৫টা টেস্ট বেশি ‘মিস’ করেছেন এই পেস তারকা। কিন্তু এই সময় ভারত যে বাংলাদেশের চেয়ে ৬৮টি টেস্ট বেশি খেলেছে!
শুধু ভারত বলেই নয়। একই সময়সীমায় ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজও টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। শুধু তা–ই নয়, প্রতিটি দলই ন্যূনতম ১০০টি করে টেস্ট খেলেছে। সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড (১৭৪), এরপর আছে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া (১৪৭) ও ভারত (১৪৪)। শ্রীলঙ্কা (১২৬) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (১২৩) আছে এরপরই। ১১৫টি টেস্ট খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুধু বাংলাদেশই (৭৬) নয়, নিউজিল্যান্ড (১১৪) ও পাকিস্তানের (১০৫) চেয়েও বেশি টেস্ট খেলেছে এই সময়ে। এই সময়ে বাংলাদেশের চেয়ে কম টেস্ট খেলেছে জিম্বাবুয়ে (২৭) আফগানিস্তান (৪) ও আয়ারল্যান্ড (৩)। এর মধ্যে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের টেস্ট অভিষেকই হয়েছে ২০১৮ সালে।
ইশান্তের শততম টেস্টের দিন সাকিবকে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। সাকিবকে সেটি ছুঁয়ে যায় কি না, প্রশ্ন এখন এটিই!