এজাজ প্যাটেল ভারতের বিপক্ষে ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন। এটি এমন এক ইতিহাস, যেটি টেস্টের ১৪৪ বছরে দেখা গেছে মাত্র তিনবার। টেস্টে এক ইনিংসে নির্দিষ্ট এক বোলারের দখলেই প্রতিপক্ষের সব কটি উইকেট, এটি যেকোনো বিচারেই বিরল এক কীর্তি।
এমন কীর্তির তিন কীর্তিমান—ইংল্যান্ডের জিম লেকার, ভারতের অনিল কুম্বলে আর নিউজিল্যান্ডের এজাজ প্যাটেল। প্যাটেলের আগে সবশেষ এই কীর্তিগাথা ছিল কুম্বলের—সেটি ২২ বছর আগে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দিল্লিতে। প্রথম ঘটনাটি কুম্বলেরও ৪৩ বছর আগে। ইংল্যান্ডের জিম লেকার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রথমবারের মতো টেস্টের এক ইনিংসে নিয়েছিলেন ১০ উইকেট। গতকাল প্যাটেল জিম লেকার আর কুম্বলের পাশে বসেছেন। ছোট্ট এ ক্লাবের সদস্য হয়েছেন। যাঁর সদস্যসংখ্যা তিন। তাঁদের মধ্যে একজন আর এ দুনিয়ায় নেই।
স্বাভাবিকভাবেই প্যাটেলকে অভিনন্দন জানানোর জন্য আছেন শুধু কুম্বলে। তিনি টুইটারে নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনারকে অভিনন্দন জানিয়েও সতর্ক করে দিয়েছেন একটা ব্যাপারে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই প্যাটেলকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই যে কীর্তিটা গড়লে, এখন থেকে দেখবে, সবাই প্রতি ম্যাচেই তোমার কাছে ১০ উইকেট চাইবে।’
কুম্বলের সতর্কবার্তাটা মজা করেই। তবে এটা ঠিক, ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার পর থেকেই একজন বোলার নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নেন। সেখান থেকে গড়পড়তা পারফরম্যান্সের কোনো স্থান যে নেই, কুম্বলে মজা করে হলেও প্যাটেলকে সেটিই বলেছেন।
টুইটারে কুম্বলের অভিনন্দনবার্তা ছিল এমন, ‘অভিনন্দন তোমাকে। ১০ উইকেট নেওয়ার ক্লাবে স্বাগত। এজাজ অসাধারণ করেছ টেস্টের প্রথম দুই দিনেই ১০ উইকেট তুলে নিয়ে। একটা কথা বলি, এখন থেকে কিন্তু সবাই তোমার কাছ থেকে প্রতি ম্যাচেই ১০ উইকেটের প্রত্যাশা করবে।’
প্যাটেল শুধু প্রথম দুই দিনেই ভারতের ১০ উইকেট তুলে নেননি, জিম লেকার আর কুম্বলের সঙ্গে একটা জায়গায় একটু পার্থক্যও গড়েছেন। লেকার আর কুম্বলে দুজনই ১০ উইকেট নিয়েছিলেন দেশের মাটিতে। প্যাটেলই প্রথম, যিনি ‘বিদেশের’ মাটিতে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট তুলে নিলেন।
তবে প্যাটেলের ক্ষেত্রে বিদেশ কথাটি লিখতে ব্র্যাকেট ব্যবহার করতেই হচ্ছে। কারণ, তিনি তো জন্মসূত্রে ভারতীয়ই। তাঁর জন্ম কীর্তি গড়ার স্থান মুম্বাইয়েই। ১৯৯৬ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে পাড়ি জমান নিউজিল্যান্ডে। সেখানকার নাগরিকত্ব পেয়ে নিউজিল্যান্ডই এখন তাঁর দেশ। সেখানেই তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠা। নিউজিল্যান্ডের পক্ষেই তাঁর ইতিহাসে ঠাঁই করে নেওয়া।