ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে টেস্টের চতুর্থ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৮১ রানে হেরেছে ইংল্যান্ড
বিনা উইকেটে ৫৬ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল ইংল্যান্ড। সামনে তখনো ৫৭২ রানের পর্বতসম লক্ষ্য। হাতে দুই দিন। জয় ভুলে যান, ইংল্যান্ডের জন্য ম্যাচ বাঁচানোই তো জয়ের সমান! না, ব্রিজটাউনে এমন নাটকীয় কিছুই ঘটেনি। সাধারণ হিসেব-নিকেশই সত্য বলে প্রমাণ হয়েছে। এক দিন হাতে রেখেই হেরেছে ইংল্যান্ড। তবে নাটকীয় কিছু যে একেবারে ঘটেনি তা নয়। ইংলিশ ব্যাটিং অর্ডারকে স্পিন জালে ফাঁসিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এক ‘পার্ট টাইম’ স্পিনার!
ঠিক পুরোদস্তুর পার্ট–টাইম না হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং বিভাগে তিনি নিয়মিত নন। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসেও বল করেননি। তিনি অলরাউন্ডার রোস্টন চেজ। কাল চতুর্থ দিনে ৬০.৪ ওভার টিকেছে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। এর মধ্যে রোস্টন চেজ একাই বল করেছেন ২১.৪ ওভার। বাকি পাঁচ বোলার মিলে ৩৯ ওভার বল করে তুলতে পেরেছেন মাত্র ২ উইকেট। আর চেজ—যে কিনা ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে বল-ই করেননি, তিনি একাই নিলেন ৮ উইকেট! ইংল্যান্ডের ২৪৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় এই ‘খণ্ডকালীন’ স্পিনারকে নিশ্চিত শাপ-শাপান্ত করেছেন ইংলিশ সমর্থকেরা। হারটা যে দুই-এক শ রানের নয়, ৩৮১ রানের! রানের হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়।
ইংলিশ ওপেনার ররি বার্নস কিছুটা সুবিধা করতে পেরেছিলেন। ২০৪ মিনিটের ইনিংসে করেছেন ৮৪ রান। এ ছাড়া ইংল্যান্ডের আর কোনো ব্যাটসম্যানই বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেননি। বার্নস ছাড়া ইংলিশ ইনিংসে আর কোনো ফিফটি নেই। অফ স্পিনার চেজ এদিন পুরোদস্তুর বিশেষজ্ঞ স্পিনারদের মতোই বল করেছেন। তাঁর নেওয়া উইকেটগুলো একবার দেখুন—বার্নস (৮৪), জো রুট (২২), বেন স্টোকস (৩৪), জস বাটলার (২৬), মঈন আলী (০)। এ তো গেলেন ইংল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা। ফোকস, কারেন আর আদিল রশিদকেও ফিরিয়ে ইংলিশ ব্যাটিংয়ের লেজও ছেঁটেছেন চেজ।
টেস্টে চেজের এটি চেজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং হওয়াই স্বাভাবিক। ক্যারিবীয় ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়েও নাম লিখিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে এটি কোনো ক্যারিবীয়ান বোলারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং (৮/৬০)। এই ব্রিজটাউনেই ১৯৯০ সালে ৪৫ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন কার্টলি অ্যামব্রোস। সেই হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে এটি কোনো ক্যারিবীয়ান স্পিনারের সেরা বোলিং। টেস্টে এক ইনিংসে ৮ উইকেট নেওয়ার সঙ্গে ক্যারিয়ারে অন্তত একটি সেঞ্চুরি করা প্রথম ক্যারিবীয় ক্রিকেটারও চেজ।
এসবের বাইরেও আরও একটি কীর্তি গড়েছেন ২৬ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে বল না করে দ্বিতীয় ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডটি এখন চেজের। এর আগে রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনার হিউ ট্রেম্বলের দখলে। ১৯০৪ সালে মেলবোর্নে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ট্রেম্বল।