>আল আমিন হোসেনকে কি ভুলে গেছেন নির্বাচকেরা?
কদিন আগে বিসিবি একাডেমি মাঠে ফিটনেস অনুশীলনের ফাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রসঙ্গ তুললেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে ক্যারিবীয় সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের কথা উঠতেই মাশরাফির পাশে বসা আল আমিন একটু স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন। মনে করিয়ে দিলেন, ২০১৪ সালে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি (৩ ম্যাচে ১০ উইকেট) হয়েছিলেন। অথচ এবার?
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর সামনে রেখে ঘোষিত ৩১ জনের বাংলাদেশ প্রাথমিক দল দূরে থাক, আল আমিনের ঠাঁই হয়নি বিসিবির কোনো দলেই। অন্তত হাই পারফরম্যান্স বিশেষ পেস বোলিং স্কোয়াডে থাকতে আল আমিন অবশ্য নানা চেষ্টাই করেছেন। কাল বিকেলে হাই পারফরম্যান্স বিশেষ পেস বোলিংয়ের যে স্কোয়াড দিয়েছে বিসিবি, সেখানে তাঁর নাম নেই। কেন আল আমিন নেই, সেটির কারণ বলতে চাইলেন না মিনহাজুল আবেদীন, ‘তার অনেক সমস্যা আছে। সব কারণ বলা যাবে না।’ বিসিবি সূত্রে জানা গেল, আল আমিনের ব্যাপারে বোর্ডের আপত্তি আছে।
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি ৬ টেস্ট, ১৪ ওয়ানডে ও ২৫ টি-টোয়েন্টি খেলা আল আমিনের। মাঝে কয়বার জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে অবশ্য ডাক পেয়েছেন। কন্ডিশনিং ক্যাম্প শেষে চূড়ান্ত স্কোয়াডে আর ঠাঁই মেলেনি। শুরুর দিকে নির্বাচকেরা তাঁর বাজে ফিল্ডিংকে বড় করে দেখলেও পরে শৃঙ্খলাজনিত কারণটিও সামনে চলে আসে। ২০১৬ বিপিএলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে জরিমানাই গুনলেন প্রায় ১৩ লাখ টাকা। এরপর অবশ্য তাঁকে নিয়ে আর কোনো বিতর্ক হয়নি। গত বিপিএলে সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের জন্য খবরের শিরোনাম হলেও আল আমিন আবারও অ্যাকশন শুধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন।
আল আমিনের ব্যাপারে বোর্ডের যে ‘আপত্তি’র কথা শোনা যাচ্ছে, সেটির উৎপত্তি গত ৪ এপ্রিল বিকেএসপিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্সের বিপক্ষে অগ্রণী ব্যাংকের অবনমন বাঁচানোর ম্যাচে। ম্যাচটি আলোচিত হয়েছে বাজে আম্পায়ারিংয়ের কারণে। অগ্রণী ব্যাংক সতীর্থদের সঙ্গে আল আমিনও তর্কে জড়িয়ে পড়েন, প্রতিবাদ করেন বাজে আম্পায়ারিংয়ের। তর্ক হয় মাঠে উপস্থিত বিসিবির এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গেও। ওই কর্মকর্তা নাকি বিসিবিকে পরে অভিযোগ করেন, আল আমিন বোর্ডকে গালি দিয়েছেন! এ অভিযোগের ভিত্তিতে আল আমিনকে বড় শাস্তিই দিতে চেয়েছিল বিসিবি। এপ্রিলে হওয়া বিসিএলের অবশিষ্ট তিন রাউন্ডে নিষিদ্ধ ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা খেলোয়াড়দের যে চুক্তি থাকে, সেটি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় হয়েই গিয়েছিল। পরে শাস্তি কমিয়ে আনা হয়। চুক্তি থেকে বাতিল না করে শুধু বিসিএলের এক ম্যাচে নিষিদ্ধ করা হয় তাঁকে।
বিসিবিকে গালি দেওয়ার অভিযোগ আল আমিন অবশ্য উড়িয়ে দিলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানের অধীনে আমি খেলি, তাদের কেন গালি দেব? সেদিন ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমার দিকে তেড়ে আসছিল। সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে আম্পায়ারের সঙ্গে খেলোয়াড়ের তর্ক হতে পারে। কিন্তু মাঠের বাইরে থেকে একজন নিরাপত্তাকর্মী কেন আমাদের দিকে তেড়ে আসবে? এখন না খেলি, একটা সময় জাতীয় দলে তো খেলেছি। এতটুকু সম্মান তো পেতে পারি। এটির প্রতিবাদ করাই আমার অপরাধ হয়েছে।’
যা হওয়া হয়েছে। পেছনের ঘটনা পেছনে রেখে প্রধান নির্বাচক অবশ্য আল আমিনকে একটি সুযোগ দেওয়ার পক্ষে, ‘এইচপির পেস বোলিং স্কোয়াডে ওকে রাখার বিষয়টি আমরা ভাবছি।’