সীতাকুন্ডের আগুন নেভার প্রার্থনায় ক্রিকেটাররা
সীতাকুন্ডের আগুন নেভার প্রার্থনায় ক্রিকেটাররা

‘আমি ওখানে থাকলে আমার কী হতো’

কী ভয়ানক এক দুর্ঘটনা ঘটে গেল চট্টগ্রামে! সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে গতকাল রাতে আগুন লাগার পর ১১টার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, এরপর থেকে ক্ষণে ক্ষণে বিস্ফোরণ চলছেই।

চট্টগ্রামের পাশাপাশি ফেনী, নোয়াখালীসহ কয়েকটি অঞ্চলের ফায়ার সার্ভিস ইউনিট মিলেও আগুন এখনো থামানো যাচ্ছে না। এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নেমেছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ডিপোতে বিপুল পরিমাণে রাসায়নিক থেকে যাওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

তিনি সেখানে থাকলে কী হতো ভেবে শিউরে ওঠেন সাইফউদ্দিন

কত প্রাণই-না কেড়ে নিয়েছে আগুনের শিখা! সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এরই মধ্যে ৩২ জন নিহত হওয়ার কথা জানা গেছে। আহত হয়েছেন আরও কত মানুষ। পুরো দেশের মানুষই এখন সীতাকুন্ডের ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার প্রার্থনায়। প্রার্থনায় ক্রিকেটাররাও।

গতকাল রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর পোস্ট করে চলেছেন তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসরা।

সবাইকে সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান মাশরাফির

কেউ আশপাশের মানুষকে রক্ত দিয়ে, পানি সরবরাহ করে সাহায্যে নেমে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, কেউ বা আহত-নিহতদের কথা ভেবে কষ্ট পাচ্ছেন। কেউ ভাবছেন জীবনের অদ্ভুত খেলার কথা।

সীতাকুন্ডের কাছাকাছি একটি ফেনীর ছেলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনই যেমন শিউরে উঠছেন সেখানে থাকলে তাঁর কী হতে পারত ভেবে।

লিটনের স্ট্যাটাস আর তামিমের স্ট্যাটাস একই

ঘন্টাখানেক আগে ফেসবুক পেইজে বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন লিখেছেন, ‘এখনো আগুন নিয়ন্তণে আনা সম্ভব হয়নি! ছবি, ভিডিও আর সাথে নিউজগুলো যত সামনে আসছে, মনে হচ্ছে, আমি ওখানে থাকলে আমার কী হতো? আল্লাহর কাছে অশেষ শোকরানা; কিন্তু অর্ধশতাধিক মানু্ষ নিহত, ৪৫০-এর অধিক মানুষের অবস্থা সংকটাপন্ন। আল্লাহ সহায় হোন। যে যার অবস্থা থেকে যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে আসুন।’

আহত-নিহতদের কথা ভেবে কষ্ট লাগছে মুশফিকের

চট্টগ্রামের ছেলে, বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল গতকাল আগুন লাগার পরই তাঁর স্ট্যাটাসে আহ্বান জানিয়েছেন, ‘চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সকলকে অনুরোধ করব চট্টগ্রাম মেডিকেলে অবস্থান করার জন্য। সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা অনেক, প্রচুর পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। দয়া করে যে যেখানে আছেন সাধ্যের মধ্যে থাকলে এক্ষুনি ছুটে যান, আপনার এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ। আপনার পরিচিত রক্তযোদ্ধা বন্ধুদেরও আসার জন্য অনুরোধ করুন। মানুষ মানুষের জন্য।’

আহতদের রক্ত দিয়ে সাহায্যের আবেদন মিরাজের

একটি মুঠোফোন কোম্পানির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানেও এ নিয়ে তামিমের কণ্ঠে একই সুর, ‘যা হয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক। আমাদের সবার দোয়া যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের সঙ্গে, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে। এরকম দুর্ঘটনা আগেও হয়েছে। দুর্ঘটনাটা চট্টগ্রামে হয়েছে, কিন্তু আমরা যখনই এরকম কোনো কিছু হয় আমরা দেশ হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে আসি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে জায়গায় আছি না কেন ঢাকা, খুলনা...আমাদের সবাইকে নিজ দিক থেকে যতটুক পারি ছোট বড় যা সহযোগিতা করতে পারি এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তারা সেরা চিকিৎসা সেবা পাবে, তারা সেরা সহযোগিতা পাবে সবার কাছ থেকে। তারা সুস্থ হয়ে উঠবে। আমাদের সকলের দোয়া তাদের সঙ্গে আছে।’

চট্টগ্রামের জন্য প্রার্থনা নাঈমের

সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান মাশরাফি বিন মুর্তজার কণ্ঠেও। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কের স্ট্যাটাস, ‘চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনারের ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং যারা আহত হয়েছে তাদের প্রতি রইল সমমর্মিতা। আমি চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করি যেন হতাহতদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। শুনেছি প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে আসুন। আপনার একটু সহযোগিতা, এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ, হাসি ফোটাতে পারে একটি পরিবারে। সকলে প্রার্থনা করি।’

বিস্ফোরণের ছবি দিয়ে প্রার্থনা আফিফের

সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান ছিল টেস্ট দলে নবনির্বাচিত সহ-অধিনায়ক লিটন দাস, অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ, পেসার তাসকিন আহমেদের কণ্ঠেও। আর উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের প্রার্থনায়, ‘চট্টগ্রাম থেকে আসা খবরটা শুনে খুব খারাপ লাগছে। আহত-নিহতদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করি। শক্ত থাকো, সীতাকুন্ড। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিরাপদ রাখুন।’