আফ্রিদি বললেন, ‘শোয়েব আখতার ভালো মনের মানুষ, কিন্তু...’

পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার।
ফাইল ছবি

সতীর্থ হিসেবে শোয়েব আখতার কেমন ছিলেন?

নিজের সময়ের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে তাঁর আচরণে মাঠে আগ্রাসী একটা ভাব ঠিকই ছিল, কিন্তু সেই সময় পাকিস্তান দলে খেলা বেশির ভাগ খেলোয়াড় সতীর্থ হিসেবে শোয়েবকে ভালো নম্বরই দেবেন। শোয়েবের সাবেক সতীর্থ শহীদ আফ্রিদিও এর বাইরে নন। শোয়েবকে খুব ভালো মনের মানুষ হিসেবেই আখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার। সঙ্গে অবশ্য একটা ‘কিন্তু’ও যোগ করে দিয়েছেন।

এই ‘কিন্তু’টি শব্দটি একটা কারণেই এসেছে। শোয়েব আখতারের ক্যারিয়ারে অনেক বিতর্কিত ঘটনার একটি ঘটেছিল ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সেবার সতীর্থ ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আসিফকে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন ‘পিন্ডি এক্সপ্রেস’। ঘটনার ফলে তাঁকে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট না খেলিয়ে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেই ঘটনার ব্যাখ্যায় পরে শহীদ আফ্রিদিকেও জড়িয়েছিলেন শোয়েব। এবার এ নিয়ে কথা বলেছেন আফ্রিদি।

সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে শোয়েব আখতার।

২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ঘটনা শোয়েব আখতার তাঁর আত্মজীবনী ‘কন্ট্রোভার্সিয়ালি ইওর্স’-এ খুব ভালোভাবেই বর্ণনা করেছেন। আসিফের সঙ্গে ঝগড়াটা অমন বাজে পর্যায়ে যাওয়ার জন্য তিনি সেখানে শহীদ আফ্রিদিকেই দায়ী করেছেন, ‘আফ্রিদি পরিস্থিতিটাকে আরও ফেনিয়ে তুলছিল। শেষ পর্যন্ত অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে আমি তাদের দুজনকেই ব্যাট দিয়ে বাড়ি দিই। আফ্রিদি কোনোভাবে সরে যেতে পেরেছে। কিন্তু আসিফ পারেনি।’

এরপর কী হয়েছিল, বইতে তা-ও লিখেছেন শোয়েব, ‘ব্যাটটি গিয়ে আসিফকে তার ঊরুতে আঘাত করে। সে মাটিতে পড়ে যায়। আমি আসলে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলাম। এমন আচরণ আমি কখনোই এর আগে করিনি। বিশেষ করে ড্রেসিংরুমে তো নয়ই।’

এত দিন পর সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে নিজের দায় খণ্ডনের চেষ্টা করেছেন আফ্রিদি। সামাডটটিভিকে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘অনেক ঘটনা আসলে একদিক থেকে একদিকে যেতে যেতে হঠাৎ ঘটে যায়। আমরা একটা বিষয় নিয়ে মজা করছিলাম। আসিফ সেখানে আমার পক্ষ নেয়। শোয়েব তখন রেগে যায় আর এটা-ওটা হতে হতে অমন একটা ঘটনা ঘটে গেছে।’ তবে সতীর্থ শোয়েবকে ভালো মানুষ হিসেবেই জানেন আফ্রিদি, ‘আমার কথা হচ্ছে শোয়েবের সুন্দর একটা হৃদয় আছে।’

খেলোয়াড়ি জীবনে তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে মাঠে একটু আগ্রাসী মনোভাবেরই ছিলেন শোয়েব আখতার।

সামাডটটিভিতে আফ্রিদি তাঁর শৈশব নিয়েও কথা বলেছেন। তাঁর বাবা চাইতেন ছেলে পড়াশোনা করে অনেক ভালো কিছু করুক। কিন্তু আফ্রিদি ছিলেন ক্রিকেটপাগল। ছোটবেলার সেই স্মৃতি মনে করে আফ্রিদি বলেছেন, ‘আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৪ থেকে অনূর্ধ্ব-১৮ পর্যন্ত খেলেছি, আমার জীবনে ক্রিকেটই ছিল সবকিছু। পরের দিন কোনো ম্যাচ থাকলে ক্রিকেটের সরঞ্জাম নিয়েই আমি ঘুমাতাম। কারণ, আমি দেরিতে মাঠে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারতাম না।’

রাশভারী বাবা আফ্রিদির ক্রিকেটের খোঁজখবরও রাখতেন না। সেই প্রসঙ্গে আফ্রিদি বলেছেন, ‘সেই সময়ে কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছিল না। ডন বা জংয়ে আমার কোনো ছবি ছাপা হলে লোকেরা বাবাকে নিয়ে সেটা দেখাত। তাঁকে বোঝাত যে আপনার ছেলে অনেক ভালো কিছু করে ফেলেছে।’