খালেদ মাসুদ
খালেদ মাসুদ

আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত হারের পর আজ মাসকাটে বাংলাদেশ দল টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে। আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এটি। দুটি দলের মধ্যে কাগজে–কলমে অনেক পার্থক্য। অভিজ্ঞতা ও শক্তিমত্তায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। কিন্তু এ মুহূর্তে বাস্তবতা একটু অন্য রকম।

পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ওমান বিশ্বকাপে ভালো শুরু করেছে। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের কাছে ৬ রানের হারে বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছে হতাশা দিয়ে। ফর্মে নেই মাহমুদউল্লাহর দল। ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ জিতলেও পরে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এরপর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও হার। বড় টুর্নামেন্টে শুরুতে এমন পারফর্ম করলে দল মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে, এটাই এখন সমস্যা।

স্কটল্যান্ডকে ১৪০ রানে আটকে দিয়েও হেরেছে বাংলাদেশ

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের এক দিন পরই ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ দল। মানসিকভাবে খারাপ সময় পার করছে দল, এর মধ্যেই খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে আরেকটি ম্যাচ! এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো দলের বিপক্ষেই ফিরে আসাটা কঠিন। মাত্রই আগের ম্যাচে খারাপ খেলায় সেটার একটা নেতিবাচক প্রভাব তো থাকবেই দলের ওপর। দুই দলের অভিজ্ঞতা আর শক্তিমত্তার যে পার্থক্যের কথা বললাম, সেই ব্যবধানও তাতে কিছুটা কমে আসতে পারে।

প্রথম ম্যাচে ওমানের দুই ওপেনার মিলেই ভালোভাবে ম্যাচ শেষ করে এসেছে। ওরা খেলছেও নিজেদের মাঠে। কাজেই সব বাদ দিয়ে শুধু আজকের ম্যাচে দুই দলের পার্থক্যের কথা যদি বলেন, আমি বলব সেটা ১৭–১৮। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না ক্রিকেট যতটা না কৌশলের খেলা, তার চেয়ে বেশি মানসিক লড়াই। মানসিকভাবে আগেই হেরে গেলে, আত্মবিশ্বাস না থাকলে, ম্যাচ জেতাটা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।

একটা ম্যাচ হারলেই যে সব শেষ, বা একটা ম্যাচ জিতলেই যে সব পাওয়া হয়ে গেল, তা নয়। তবে ওমানের সঙ্গে ভুল করার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ দলকে আজ প্রথম সে জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না। এখানে টিম ম্যানেজমেন্টের ভূমিকাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতে হবে, জৈব সুরক্ষাবলয়ের মধ্যেও তাদের যতটা সম্ভব স্বাধীন করে দিতে হবে। ম্যাচ হারলে একেকজন একেক কথা বলবে, এভাবে খেল, ওইভাবে খেল। আশপাশে প্রচুর ‘কোচ’ পাওয়া যায় এ রকম সময়। এসব কথায় কান না দিয়ে খেলোয়াড়দের উচিত হবে নিজেদের কাজে মনোযোগী হওয়া। একটা ম্যাচ হারলেই যে সব শেষ, বা একটা ম্যাচ জিতলেই যে সব পাওয়া হয়ে গেল, তা নয়। তবে ওমানের সঙ্গে ভুল করার সুযোগ নেই। তাহলে বড় বিপদে পড়ে যাবে বাংলাদেশ দল।

ব্যাটসম্যানদের আজ ফর্মে ফিরতে হবে

প্রথম ম্যাচে হারলেও আমাদের বোলাররা খুব ভালো বোলিং করেছে। ১৪০ রানের লক্ষ্যটা আমার চোখে খুব বেশি ছিল না। স্বাভাবিক ব্যাটিংয়েই তাড়া করে জেতার মতো স্কোর ছিল এটি। মাসকাটের উইকেট তো আর মিরপুরের উইকেটের মতো নয় যে এই রান করাও খুব কঠিন হয়ে যাবে। আসলে ব্যাটিংয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না, ছন্দও ছিল। পাওয়ার প্লেতে রান ওঠেনি, উইকেটও দিচ্ছি, ব্যাটিংয়ে কাঁপছি, এক–দুই রানও বের করা যায়নি।

স্কটল্যান্ড, ওমান, আয়ারল্যান্ডের মতো দলগুলোর সুবিধা হলো তাদের ওপর প্রত্যাশার চাপ নেই। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ওপর সে চাপ প্রবলভাবেই আছে। তবে আমি বলব, সব চাপ আর আবেগ ভুলে আমাদের ক্রিকেটাররা যেন পেশাদার মানসিকতা নিয়ে খেলে। আমাদের অনেক খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারই বেশ লম্বা, তারা বেশ অভিজ্ঞ এই পর্যায়ের ক্রিকেটে। দলকে চাপ থেকে বের করার দায়িত্বটা তাদের ওপরই বেশি। সেটা সতীর্থদের সাহস দিয়ে যেমন, তেমনি ব্যাট–বল হাতে ভালো খেলেও।