>ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ
ওয়ানডে সিরিজ জেতায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়েও আশায় রয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। আর তাই ম্যাচটা দেখতে অনেকেই ভোরে উঠেছেন ঘুম নষ্ট করে। ওয়ার্নার পার্কে বৃষ্টি দেখে সমর্থকেরা হয়তো ধৈর্যের পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে বৃষ্টি বেশিক্ষণ না থাকায় ম্যাচ শুরু হতে বেশি দেরি হয়নি। আর খেলা শুরু হতেই তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার মিলে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছিলেন সমর্থকদের। প্রথম ওভারেই যে তাঁরা ফিরেছেন!
শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার আতঙ্ক থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। তাঁর ২৫ বলে ৩৫ রানের ইনিংসের সুবাদে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৯ উইকেটে ১৪৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি। লিটন দাস (২৪) ও সাকিব আল হাসানের (১৯) ব্যাট আশা দেখালেও ইনিংসটা মূলত মাহমুদউল্লাহই টেনেছেন।
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দলে একটি পরিবর্তন এনে একাদশ গড়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আবু জায়েদকে বসিয়ে দলে টানা হয়েছে রুবেল হোসেনকে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিতেই হয়তো ইনিংসের প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেট এসেছিলেন তামিম। কিন্তু দলকে ওড়াতে গিয়ে তিনি নিজেই উড়ে গেছেন! অ্যাশলে নার্সের ঘূর্ণি ডেলিভারিতে পরেছেন স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে। এর মধ্য দিয়ে একটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ রেকর্ডও গড়লেন তামিম। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলীয় ইনিংসের প্রথম বলেই তিনি স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়লেন। কিন্তু প্রথম ওভারে নাটকের তখনো বাকি ছিল।
তামিম ফিরে যাওয়ার পরের বলে চার মেরে অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লিটন। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইকে পাঠান সৌম্য সরকারকে। নার্সের বলটি তিনি কেন ব্যাক ফুটে খেললেন তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। কোনো ফুটওয়ার্ক না থাকায় স্কিড করা ডেলিভারিটি সোজা আঘাত হেনেছে স্ট্যাম্পে। অর্থাৎ সৌম্যও ফিরে যান নিজের প্রথম বলে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই প্রথমবারের মতো কোনো দলীয় ইনিংসের প্রথম ওভারে নিজেদের প্রথম বলেই ফিরে গেলেন দুই ওপেনার। এখানেই শেষ নয়। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে স্কোরকার্ডে উইকেটসংখ্যা ৩ হতে পারত যদি সাকিবের তুলে দেওয়া লোপ্পা ক্যাচ মারলন স্যামুয়েলস ফেলে না দিতেন।
স্যামুয়েলসের এই ভুলের মাশুল চতুর্থ ওভারে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন সাকিব। আন্দ্রে রাসেলের সেই ওভারে শেষ ৪ বলের মেরেছেন ৩ চার। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে ফিরে এসেছে প্রথম ওভারের বিপর্যয় মানে আবারও জোড়া উইকেট! কেমো পলের বাউন্সার পুল করে সীমানাছাড়া করার লোভ সামলাতে না পেরে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। পরের বলে থার্ড ম্যানে সাকিবের দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন কেসরিক উইলিয়ামস। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ৪৩ রান।
মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের যাত্রাটা শুরু হয়েছে এখান থেকে। ২৫ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়ে রানরেট বাড়িয়েছেন দুজন। এর মধ্যে সপ্তম ওভারে স্যামুয়েল বদ্রির শেষ তিন বল থেকে নিয়েছেন ৪, ৪ ৬। মুশফিকও (১৫) ১০ম ওভারে হাত খুলে খেলতে গিয়ে ফিরেছেন থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৯৫। রানের গতি ঠিকই ছিল কিন্তু দ্রুত উইকেট পড়ায় স্কোরটাকে শেষ পর্যন্ত শক্তিশালি অবস্থানে নিতে পারেননি ব্যাটসম্যানেরা।
১৫তম ওভারে আরিফুল (১৫) আর ১৭তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার সঙ্গে বড় স্কোরের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় বাংলাদেশের। ১৫ ওভার শেষে দলের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ১২১। এখান থেকে শেষ ৩০ বলে মাত্র ২২ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন কেসরিক উইলিয়ামস।