মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের মনকাড়া একাদশের উদ্বোধনী জুটি সৌরভ গাঙ্গুলী ও শচীন টেন্ডুলকার
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের মনকাড়া একাদশের উদ্বোধনী জুটি সৌরভ গাঙ্গুলী ও শচীন টেন্ডুলকার

আজহারের মনকাড়া একাদশে আছেন যারা

তাঁর ব্যাটিং দেখা ছিল চোখের জন্য আরাম। কী অবলীলায় কবজির মোচড়ে অফ স্টাম্পের বাইরের বলগুলোকে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি পাঠাতেন। ব্যাটসম্যানের নাম মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। ব্যাটিং সৌন্দর্য দিয়ে বিশ্বজুড়েই ভক্তদের মন কেড়েছিলেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক।

সেই আজহার এবার নির্বাচন করেছেন ক্রিকেটের সর্বকালের মনকাড়া একাদশ। এমন একটা একাদশ যে দলের ব্যাটিং কিংবা বোলিং দেখার জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে থাকে ক্রিকেট বুভুক্ষু চোখ।

৯৯টি টেস্ট খেলা আজহার অবশ্য নিজের সমসাময়িক ক্রিকেটারদেরই বেছে নিয়েছেন একাদশে। বেছে নিয়েছেন এমন সব খেলোয়াড়দের যাদের খেলা তিনি মাঠে বা গ্যালারি বা টেলিভিশনে দেখেছেন।

টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বশেষ শতকের পর মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন

আজহার তাঁর একাদশে উদ্বোধনী জুটি হিসেবে নিয়েছেন নিজের দুই সতীর্থ শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলীকে। মাধুর্যময় ও অভিজাত সেই একাদশে কেন তাঁরা জায়গা পেয়েছেন সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন আজহার, ‘ইতিহাসের অন্যতম নিখুঁত খেলোয়াড় টেন্ডুলকার। আমি ওর সঙ্গে অনেক খেলেছি। ওর স্ট্রেট ড্রাইভ দেখতে আমার তর সইত না। গাঙ্গুলীর কাভার ড্রাইভ ও স্কয়ার কাট তো এক কথায় অভিজাত।’

আজহারের একাদশে পরের দুটি স্থান ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা ও অস্ট্রেলিয়ার মার্ক ওয়াহর। আজহারের কাছে মার্ক ওয়াহই অবশ্য সবচেয়ে প্রিয় খেলোয়াড়, ‘রক্ষণাত্মক খেলা তাঁর ধাতে ছিল না। মারার বল পেলে ইনিংসের প্রথম বলেও মারত। আমার মনে আছে শ্রীলঙ্কার স্পিনারদের বিপক্ষে সে তিন ম্যাচে ৫০০ রান করেছিল (২০০১ সালের সেই সিরিজ ৬৮৮ রান করেছিলেন লারা)। আমার প্রিয় খেলোয়াড় অবশ্য মার্ক ওয়াহ। ওর খেলা দেখলে মনে হতো ব্যাটিং করা কী সহজ কাজ। ওর ব্যাটিং দেখাটা কী দারুণ ব্যাপারই না ছিল। আমি যখন মাঠে ওর প্রতিপক্ষ হয়ে ফিল্ডিং করতাম তখনো উপভোগ করতাম।’

বিশ্বনাথের তো তুলনা হয় না। আমরা একমাত্র দুঃখ হলো তাঁর সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে না পারা। তিনি ভারতকে কত ম্যাচে জিতিয়েছেন।
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে শতক পাওয়া আজহার শতক পেয়েছিলেন পরের দুই টেস্টেও। সেই সিরিজে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ছিলেন ডেভিড গাওয়ার। গাওয়ারও আছেন আজহারের একাদশে, আছেন ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথও। আজহারের দুঃখ একটাই বিশ্বনাথের সঙ্গে ভারত দলে খেলা হয়নি তাঁর, ‘আমার যখন অভিষেক হলো গাওয়ার ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ছিলেন। কী অসাধারণ খেলোয়াড়ই না ছিলেন তিনি। আর বিশ্বনাথের তো তুলনা হয় না। আমরা একমাত্র দুঃখ হলো তাঁর সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে না পারা। তিনি ভারতকে কত ম্যাচে জিতিয়েছেন। আমি অসম্ভব শ্রদ্ধা করি তাঁকে।’

আজহারের মনকাড়া একাদশে উইকেটকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ভারতের সাবেক খেলোয়াড় সৈয়দ কিরমানি। আজহার পেসার হিসেবে বেছে নিয়েছেন সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের তিনজন কপিল দেব, ইমরান খান ও ইয়ান বোথামকে। তাঁর দলের একমাত্র স্পিনার গত মাসে অকালপ্রয়াত লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন।

ব্যাটিংয়ের ধরন বিচারে যাকে ভারতীয় দলে আজহারের উত্তরসূরি মনে করা হতো সেই ভিভিএস লক্ষ্মণকে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে রেখেছেন আজহার।

শারজার মাঠে ইমরান খান ও কপিল দেব। দুজনই আছেন আজহারের একাদশে

আজহারের মনকাড়া একাদশ

১. শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)
২. সৌরভ গাঙ্গুলী (ভারত)
৩. ব্রায়ান লারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
৪. মার্ক ওয়াহ (অস্ট্রেলিয়া)
৫. ডেভিড গাওয়ার (ইংল্যান্ড)
৬. গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ (ভারত)
৭. সৈয়দ কিরমানি (ভারত)
৮. ইয়ান বোথাম (ইংল্যান্ড)
৯. ইমরান খান (পাকিস্তান)
১০. কপিল দেব (ভারত)
১১. শেন ওয়ার্ন (অস্ট্রেলিয়া)
দ্বাদশ খেলোয়াড়
ভিভিএস লক্ষ্মণ (ভারত)