ম্যাচের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনায় ‘নো’ বল—২০১৫ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনালটা স্মৃতি থেকে নিশ্চয়ই মুছে যায়নি। সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যাওয়ায় সেটি নিয়ে কম হইচই হয়নি! কিংবা গত মার্চে নিদাহাস ট্রফিতে শেষ ওভারে ‘নো’ বল না দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশ তো ম্যাচই বয়কট করতে চেয়েছিল!
আজও একই ঘটনা। ম্যাচের ফল ছাপিয়ে আলোচনায় ‘নো’ বল। তবে সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশের পক্ষে গেছে। বিপক্ষে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এ নিয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ ক্যারিবীয়রা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্রাফেট ম্যাচ অফিশিয়ালদের সঙ্গে যুক্তির লড়াই চালিয়ে গেছেন। এতে খেলা বন্ধ থেকেছে ৯ মিনিট। সংবাদ সম্মেলনের প্রায় পুরোটা জুড়ে যে এ নিয়ে আলোচনা হবে, সেটিই অনুমিত ছিল। হলোও তা-ই। কিন্তু সাংবাদিকদের বেশি প্রশ্ন করতে হয়নি, ব্রাফেটকে শুধু জিজ্ঞেস করা হয়েছে, চতুর্থ ওভারে কী হয়েছিল, তাতে ঝাড়া ৬ মিনিট ধরে যে উত্তর দিয়েছেন উইন্ডিজ অধিনায়ক, তাতেই বোঝা গেল, এ সিরিজে এমন অনেক সিদ্ধান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গেছে, পক্ষে গেছে বাংলাদেশের।
ব্রাফেট বললেন, ‘আমি দ্বিতীয় ম্যাচের পর ব্যক্তিগতভাবে ম্যাচ রেফারির কাছে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম ওয়ানডে সিরিজ থেকেই আমি দলের সঙ্গে আছি। প্রতিটি ৫০-৫০ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষে যাচ্ছিল। আমি কারও বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলছি না। তারা সবাই পেশাদার। ইচ্ছে করে তারা পক্ষ নিয়েছে সেটাও বলছি না। আমি শুধু আমার যুক্তিটা ম্যাচ রেফারির কাছে তুলে ধরেছি। বলেছি, ওয়ানডে সিরিজ থেকে ৫০-৫০ সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। এখানে আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে চেয়েছি। সেটা লাল কিংবা সাদা বলে হোক। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ে সিদ্ধান্ত আমাদের খেলায় ক্ষতি করেছে।’
এ ধরনের পরিস্থিতি খেলোয়াড়েরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন, আবেগতাড়িত হয়ে অনেক সিদ্ধান্ত নেয়ে ফেলেন। ব্রাফেট চেষ্টা করেছেন অধিনায়ক হিসেবে খেলোয়াড়দের শান্ত রাখতে, ‘আমি দলের নেতা। সবাইকে বলেছি শান্ত থাকতে। চতুর্থ আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির সঙ্গে যা বলার আমি বলব। এটা কিছুটা প্রতিকূল ও আবেগময় পরিস্থিতি। আমরা নিজেদের দেশের হয়ে লড়ছি, যেটা অনেক সম্মানের। আমি শুধু নিয়মটা জানতে চেয়েছি।’
নিয়মটা কী সেটিও বললেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক, ‘নিয়মটা হচ্ছে যদি নো বল ডাকা হয় এটার রিভিউ নেওয়া যায় না কিংবা সিদ্ধান্ত বদলায় না। যদি না ডাকা হয় তখন নো বল যাচাই করা যায় ভিডিও ডেকে। সবাই দেখেছে এটা কোনো নো বল ছিল না। ওশান টমাসের মতো অনভিজ্ঞ, তরুণ বোলার তখন চাপে। অবশেষে সে একটা উইকেট বের করেছে, ঠিক তখনই নো বল, যেটাতে সে উল্টো পেল ফ্রি হিট। আরও একটা বল তাকে করতে হলো, আরও অতিরিক্ত রান গুনতে হলো। এসব অবশ্য মানসিকভাবে এলোমেলো করে দেয় একজন বোলারকে। অধিনায়ক হিসেবে দলের সবকিছুরই দায়িত্ব আমার। আমাকে তাই একটা অবস্থান নিতে হয়েছে, শুধু নিজের দলের জন্য নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্যও।’