>পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকিব জাভেদকে ‘শতাব্দীর অন্যতম বাজে কোচ’ বলেছেন সাবেক উইকেটরক্ষক আতিক-উজ-জামান
পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে ২০১৮ পাকিস্তান সুপার লিগ শেষ করেছিল লাহোর কালান্দার্স। সে সময় ফ্র্যাঞ্চাইজিটির প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন আকিব জাভেদ। তাঁর কোচিং স্টাফে ছিলেন নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক আতিক-উজ-জামান। দেশের হয়ে ১টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে খেলা সাবেক এ উইকেটরক্ষক এত দিন পর ক্ষোভ ঝাড়লেন লাহোরের প্রধান কোচের ওপর। পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকিব ‘শতাব্দীর অন্যতম বাজে কোচ’ বলে মন্তব্য করেছেন আতিক।
পাকিস্তান ক্রিকেটে আতিকের আবির্ভাব মঈন খান-রশিদ লতিফদের সময়ে। এ কারণে জাতীয় দলে সেভাবে সুযোগ পাননি। খেলা ছেড়ে কোচিং পেশায় নামার পর সেবার পিএসএলে লাহোরের ফিল্ডিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন আতিক। ব্যাটিং কোচের ভূমিকায় ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল হক, বোলিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন দেশটির সাবেক পেসার কবির খান আর নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার কাইল মিলস ছিলেন টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল উপদেষ্টার ভূমিকায়।
ইউটিউব ভিডিওতে সে মৌসুমে লাহোরের কোচিং স্টাফদের নিয়ে কথা বলেছেন আতিক। তাঁর মন্তব্য উদ্ধৃত হয়েছে ‘ক্রিকেট পাকিস্তান’ ওয়েবসাইটেও। আতিকের ভাষায়, সে মৌসুমে দল টানা তিন ম্যাচে জয়ের অবস্থায় থেকে হারের পরও খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে কিছুই বলেননি আকিব জাভেদ। এ নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘আমার মতে, আকিব জাভেদ শতাব্দীর অন্যতম বাজে কোচ। জয়ের অবস্থা থেকে টানা তিন ম্যাচ হারের পরও তিনি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করেননি। কে ব্যাটিংয়ে ওপেন করবে, কে বোলিংয়ে ওপেন করবে—এ নিয়ে আকিবের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কালান্দার্সের সেট আপ ছিল ক্লাব পর্যায়ের। নিজের মেজাজ অনুযায়ী সে খেলোয়াড়দের ব্যবহার করেছে। খেলার মাঝে বিরতিতে সে নিজে মাঠে না ঢুকে অন্যদের পাঠাত।’
৬৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা আতিক এ প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, ‘ম্যাচের আগে আতিক কখনোই খেলোয়াড়দের একত্রিত করেনি। দলে কোনো সংস্কৃতি ছিল না। প্রতি ম্যাচেই সে তিন-চারজন করে খেলোয়াড় পাল্টেছে। ফিল্ডিং কোচ হিসেবে আমি প্রতিটি বলের বিশ্লেষণ কাগজে টুকে রাখতাম। আকিব কখনোই এ কাগজ চায়নি, পড়েও দেখেনি। ইংরেজিতে লেখা হওয়ায় বুঝতে পারবে না ভেবেই সে হয়তো চায়নি।’
পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) সে মৌসুমে লাহোরের অধিনায়ক ছিলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। নিউজিল্যান্ডের সাবেক এ অধিনায়ককেও ধুয়ে দিয়েছেন আতিক, ‘ম্যাককালাম টিম মিটিংয়ে থাকত না কখনোই। মিলস তার বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করত। একবার এক মিটিংয়ে বলেছিলাম, শেষ ওভারে ৭ রান লাগবে হাতে ২ উইকেট, এমন অবস্থায় ম্যাককালাম কীভাবে সিঙ্গেল নেয়? পরে আমাকে হোটেলে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল।’
‘টু ডব্লিউ’দের (ওয়াসিম আকরাম-ওয়াকার ইউনিস) সময়ে খেলায় জাতীয় দলে বেশি ম্যাচ খেলতে পারেননি আকিব জাভেদ। ২২ টেস্ট, ১৬৩ ওয়ানডে খেলা সাবেক এ পেসার এখনো লাহোরের প্রধান কোচের দায়িত্বে। তবে সে মৌসুমে পাকিস্তানের কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে অবিচার করেছেন বলেও মন্তব্য করেন আতিক, ‘আকিব একবার বলেছিল, সে যত দিন কোচ পদে আছে তত দিন উমর আকমলকে লাহোরে খেলতে দেবে না।বলির পাঁঠা বানাতে পাওয়ার প্লে-তে তারা রাজা হাসানকে দিয়ে বল করিয়েছে। কয়েক ম্যাচ পর তাকে বাদও দিয়েছে। মৌসুম শুরুর আগেই আকিব সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিলওয়াল ভাট্টিকে দল থেকে বাদ দেবে। তার বদলে সে ব্যাটসম্যান চাচ্ছিল, আর তাই অজুহাত দাঁড় করাল যে বিলওয়াল থ্রো করতে পারে না—সেটিও দলের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে যে আবার তার কাছের বন্ধু।’