আইপিএলের অন্যতম বড় আকর্ষণ—নিলাম। গত সপ্তাহে টানা দুদিন ধরে আইপিএলের নিলাম হয়ে গেল বেঙ্গালুরুতে। দুদিনের ব্যবধানেই অনেকে হয়ে গেলেন কোটিপতি, আবার অনেকে কোটি টাকা পাওয়ার আশায় নিলামে গিয়ে ফিরেছেন খালি হাতে।
রবিন উথাপ্পা অবশ্য প্রথম শ্রেণিতেই পড়েন। ভারতের অভিজ্ঞ এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের আইপিএল খেলার যোগ্যতা নেই, এমনটা মনে করা হলেও গতবার তাঁকে কিনেছিল ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করে সাবেক দল কলকাতাকে হারিয়ে গতবার শিরোপাও জিতেছেন উথাপ্পা। এবারও চেন্নাই তাঁকে দলে নিয়েছে দুই কোটি রুপি দিয়ে। কিন্তু এত কিছুর পরও আইপিএলের নিলাম প্রক্রিয়াটা ঠিক ভালো লাগছে না তাঁর। উথাপ্পার কাছে মনে হয়, নিলামে তোলা প্রত্যেক খেলোয়াড়ই এক অর্থে হাটে তোলা গরুর মতো!
নিউজ নাইন স্পোর্টসের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান মাইন্ড ওভার মেডেলসের অষ্টম পর্বে এসব নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেছেন উথাপ্পা। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, আইপিএলে খেলোয়াড় নিলাম করার চেয়ে ড্রাফট পদ্ধতিতে খেলোয়াড় নির্বাচনের সুযোগ থাকা উচিত, ‘নিলামের সময় মনে হয়, কোনো পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া হচ্ছে, যে পরীক্ষা আপনি অনেক আগে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে নিজেকে গরু গরু মনে হয় আসলে। ব্যাপারটা খুব সুখকর কিছু নয়। কিন্তু ক্রিকেট খেলাটা এখন এমনই, বিশেষ করে ভারতে। আপনার সবকিছু নিয়েই এখানে মানুষ মতামত প্রকাশ করবে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যাচাই করবে। এখন আপনি কেমন খেলেন, সেটা নিয়ে আপনাকে যাচাই করা এক জিনিস, আর নিলামে কত দিয়ে বিক্রি হলেন, সেটা নিয়ে যাচাই করা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস।’
নিলামে যাঁরা অবিক্রীত থেকে যান, কী চলে তাঁদের মনে? সেটারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন উথাপ্পা, ‘যারা বিক্রি হয় না, আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না, তাদের মনে কী ঝড় বয়ে যায়। এটা সুখকর কিছু নয়। তাদের জন্য আমার সমবেদনা, যারা নিলামের আশায় অনেক দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকে, কিন্তু শেষমেশ কোনো দল পায় না। হঠাৎ ক্রিকেটার হিসেবে আপনার মূল্য নির্ধারিত হচ্ছে কেউ আপনার জন্য কত খরচ করতে রাজি, সেটার ওপর। এটা খুবই অগোছালো একটা ব্যাপার। এ পাগলামির কোনো নিয়ম নেই।’
উথাপ্পার মতে, যাঁরা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাঁরাও জানেন না, কিসের ওপর ভিত্তি করে খেলোয়াড়দের দাম ওঠানামা করে, ‘১৫ বছর ধরে মানুষ আইপিএলের নিলাম কীভাবে হয় না হয়, সেটা বুঝতে চেয়েছেন। কিন্তু আমার মনে হয় না, তাঁরাও কিছু জানেন। কারণ, আপনি যাকেই জিজ্ঞাসা করবেন, সেই বলবে, “এটা খুবই অনিয়ন্ত্রিত একটা ব্যাপার, তুমি যদি নিলামে পরে ঢুকতে ,তাহলে আরও বেশি কামাতে পারতে”, কিংবা “তুমি যদি আগে আসতে, তাহলে অনেক টাকা পেতে। কারণ তখন সবার হাতে অনেক টাকা থাকে।” আমার কাছে মনে হয়, খেলোয়াড়দের সম্মানের দিকে লক্ষ্য রেখে হলেও খেলোয়াড় ড্রাফট প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাওয়া উচিত।’