আইপিএলের পয়েন্ট তালিকা এবং ফোর্বসের হিসাবে সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির তালিকা...দুই তালিকায় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস সমর্থকেরা তাকালে বুঝবেন, এই জগৎ–সংসারে কত বিচিত্র ঘটনাই না ঘটে!
মুম্বাই এ পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলে সব কটিতেই হেরে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। কিন্তু আইপিএলে সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের যে তালিকা করেছে ফোর্বস, সেখানে মুম্বাই শীর্ষে। সাধারণ ধারণা হলো, যে দল সবচেয়ে দামি, তারকা খেলোয়াড়েরও অভাব নেই, সে দলের পারফরম্যান্সও অন্তত একটু ওপরের সারিতে থাকবে।
ক্রিকেট কতটা গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, সেটি আইপিএলের পয়েন্ট টেবিল এবং ফোর্বসের এই তালিকা দেখলেই বোঝা যায়।
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা এবার আইপিএলে প্লে অফে খেলার দৌড় থেকে প্রায় ছিটকে পড়ার পথে। কিন্তু মাঠের বাইরে মুম্বাই তাদের মালিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্সকে সঙ্গে নিয়ে যে ব্র্যান্ড দাঁড় করিয়েছে, তাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে মুম্বাই–ই এই মুহূর্তে সবার চেয়ে এগিয়ে। এবার পারফরম্যান্স বাজে হলেও অতীতে তাকিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না, মাঠের খেলায়ও মুম্বাই ঈর্ষণীয় মাত্রায় সফল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকীটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিএল সোনার খনি। ২০০৯ সালে আইপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর গড় দাম ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ১৩ বছর পর ফোর্বস জানিয়েছে, এ সময়ে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের গড় দাম বছরে ২৪ শতাংশ হারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.০৪ বিলিয়ন ডলার।
মজার বিষয়, ফোর্বস এবার প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে লক্ষ করেছে, খেলাধুলায় বিশ্বের সবচেয়ে দামি দলগুলোর মধ্যে ক্রিকেটও উঠে এসেছে। গত ১৩ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল লিগে (এনবিএ) দলগুলোর দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশ করে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাগবি ফুটবল লিগে (এনএফএল) ১০ শতাংশ হারে দাম বেড়েছে দলগুলোর।
অর্থাৎ কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাপয়সার দুটি লিগে খেলা দলগুলোর তুলনায় এ সময়ে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর দাম বেড়েছে।
মুম্বাই সেখানে শীর্ষে—ফোর্বসের হিসাবে দলটির দাম ১.৩ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১১ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা)। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ বেসবলে (এমএলবি) ৬ দল, জাতীয় হকি লিগে (এনএইচএল) ২৭ দল এবং মেজর সকার লিগে (এমএলএস) সবগুলো দলের চেয়ে মুম্বাইয়ের দাম বেশি।
দামে মুম্বাইয়ের পরই রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস—১.১৫ বিলিয়ন ডলার। এরপরের দলগুলো যথাক্রমে কলকাতা নাইট রাইডার্স (১.১ বিলিয়ন ডলার), লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (১.০৭৫ বিলিয়ন ডলার), দিল্লি ক্যাপিটালস (১.০৩৫ বিলিয়ন ডলার), রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (১.০২৫ বিলিয়ন ডলার), রাজস্থান রয়্যালস (১ বিলিয়ন ডলার), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (৯৭০ মিলিয়ন ডলার), পাঞ্জাব কিংস (৯২৫ মিলিয়ন ডলার) এবং গুজরাট টাইটানস (৮৫০ মিলিয়ন ডলার)। এবার ১০ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইপিএল।
ব্র্যান্ড ফিন্যান্স ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিমন ফ্রান্সিসের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছে ফোর্বস, ‘স্পনসর এবং মিডিয়া স্বত্ব মিলিয়ে আইপিএল বিশ্বে সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী ক্রিকেট লিগ। এনবিএ এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগ অবলম্বনে যিনি আইপিএলের ধারণাটা বের করেছেন তাঁকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। বিসিসিআইও ভালোভাবে লিগটি পরিচালনা করছে।’