ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। সংক্রমণ নিয়েছে ভয়াবহ রূপ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভয়াবহ সময় পার করছে ভারত। এর মধ্যেই আইপিএল চলা নিয়ে সুর চড়া করেছিলেন অনেকেই। শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টটি স্থগিতও হয়েছে।
এবার গত ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর স্থগিত করার কথা ভেবে দেখুন। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা পরিস্থিতি ভালো নয়, এ যুক্তি দিয়ে মার্চে তাদের মাটিতে তিন টেস্টের সিরিজ স্থগিত করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। অথচ করোনা সংক্রমণে সে সময়ও এখনকার ভারতের চেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
আইপিএল স্থগিত হওয়ার পর তাই প্রশ্নটা তুলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সাবেক ওপেনার গ্রায়েম স্মিথ—এটা কি এক চোখে তেল এবং আরেক চোখে নুন বেচা হয়ে গেল না?
আইপিএল চলাকালে বেশির ভাগ ক্রিকেটারই জৈব সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে নিজেদের নিরাপদ ভেবেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর সুরক্ষিত থাকেনি। কিন্তু বিদেশি কয়েকজন ক্রিকেটার দেশে ফেরা নিয়ে সুর তুললেও বেশির ভাগই মুখ বন্ধ রেখেছিলেন।
অন্য চোখে দেখলে এটাই বুঝি আইপিএলের বিশেষত্ব? প্রচুর অর্থের হাতছানি এই টুর্নামেন্টে। ক্রিকেটাররাও বুঝি এ জন্য আলাদা ছাড় দেন আইপিএলকে? অন্তত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট বিচারে।
আইপিএল শুরুর পর ভারতে তো প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ অথবা মৃত্যুর রেকর্ড নতুন করে লেখা হচ্ছে! কিন্তু বেশির ভাগ ক্রিকেটার তারপরও মুখ খোলেননি। আইপিএলের জৈব সুরক্ষাবলয়ের বাইরে ভারতে মৃত্যুর মিছিল চলেছে। হাসপাতালে অক্সিজেন নেই, স্থান সংকুলান হচ্ছে না—এমন পরিস্থিতিতে আইপিএল চালানোর কী হেতু, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বাইরে থেকে।
কিন্তু ক্রিকেটাররা আইপিএলের সুরক্ষাবলয়ের ভেতর থেকে মুখ খোলেননি। ৩১ ম্যাচ হাতে রেখে আইপিএল স্থগিত হওয়ার পর তাই গ্রায়েম স্মিথ আর চুপ থাকতে পারেননি।
স্মিথের ইঙ্গিতটা এই, অস্ট্রেলিয়া দল সেই যে গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর স্থগিত করেছিল, তাদের বেশ কিছু ক্রিকেটার তো গা বাঁচিয়েছেন আইপিএলে জৈব সুরক্ষাবলয়ের মধ্যে। কেউ মুখটি খোলেনি। দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ ও অস্ট্রেলিয়া দলের সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং তো আইপিএলের জৈব সুরক্ষাবলয়ের ভূয়সী প্রশংসাও করেছিলেন।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপে স্মিথ সরাসরি কারও নাম মুখে তোলেননি। শুধু বলেছেন, ‘আইপিএলে খেলা খেলোয়াড়দের মধ্যে কয়েকজন কিন্তু চুপ করে আছেন। এখানে (দক্ষিণ আফ্রিকা) এমন কিছু ঘটলে পরিস্থিতি অন্য রকম হতো। এটা দ্বিচারিতার একটা রূপ। হতাশাজনক।’
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে বিসিসিআইয়ের ওপর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন স্মিথ, ‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরা নিরাপদেই আছে। ওদের কাছে মনে হচ্ছে, ভারতে জৈব সুরক্ষাবলয় বেশ ভালো। নিজেদের ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে না।’
চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে করোনা হানা দেওয়ার পর স্থগিত করা হয় এবারের আইপিএল। কয়েকজন খেলোয়াড় ও স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হন।