বাজে একটা আইপিএল মৌসুম কাটানো রবীন্দ্র জাদেজা এভাবে ফিরে আসবেন কে ভাবতে পেরেছিল। দুই বছর ধরেই টেস্টে ব্যাট ও বল—দুই ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত। তবে এজবাস্টনে যা দেখালেন, সেটা জাদেজার জন্য নতুন কিছু। গতকাল ১০৪ রানের ইনিংসে একটি অপূর্ণতা দূর হলো তাঁর। বিদেশের মাটিতে এই প্রথম টেস্ট শতক পেলেন জাদেজা। তাঁর এ ইনিংস দেখে জেমস অ্যান্ডারসন প্রশংসা করেছেন। তবে প্রশংসা করতে গিয়ে যা বলেছেন, তাতে কিছুটা অবজ্ঞার সুরও ছিল।
কাল দুর্দান্ত এক দিন কাটিয়েছে ভারত। দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচের নাটাই এখন সফরকারীদের হাতে। দিন শেষে তাই অ্যান্ডারসনকে খোঁচা দিতে পেরেছেন জাদেজা।
প্রথম দিনে ৯৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারত। ঋষভ পন্তের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২২২ রান এনে দিয়েছেন জাদেজা। পন্তের ঝড় শেষে দলকে ৩৭৫ পর্যন্ত টেনে নিয়েছেন তিনি। এই অলরাউন্ডারের পারফরম্যান্স নিয়ে দিন শেষে কথা বলেছেন অ্যান্ডারসন।
জাদেজার পারফরম্যান্সের গ্রাফে ঊর্ধ্বগতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘অতীতে সে আটে নামত, টেল এন্ডারদের সঙ্গে ব্যাট করত। এ কারণে ওকে মেরে খেলতে হতো। এখন সাতে নামে বলে পরিপূর্ণ ব্যাটারের মতো ব্যাট করতে পারে। খুব ভালোভাবে বল ছেড়েছে এবং আমাদের কাজটা কঠিন করে তুলেছে।’
অ্যান্ডারসনের পর সংবাদ সম্মেলন করতে যাওয়া জাদেজার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ভারতীয় অলরাউন্ডার খুব চমৎকারভাবে এর জবাব দিয়েছেন। বলেছেন, আটে নামলেও মেরে খেলতে কখনোই চাইতেন না তিনি, ‘দেখুন, যখন রান করবেন, তখন সবাই বলবে তারা নিজেদের পরিপূর্ণ ব্যাটার মনে করে। কিন্তু আমি সব সময় ক্রিজে নিজেকে সময় দিতে চেয়েছি, উইকেটে যে–ই থাকুক না কেন, জুটি বাঁধতে চেয়েছি, তার সঙ্গে খেলতে চেয়েছি। ভালো লাগছে, ২০১৪ সালের পর অ্যান্ডারসন এখন এটা বুঝতে পেরেছেন (জাদেজা পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যান)।’
আচমকা ২০১৪ সালের কথা টেনে আনার পেছনে কারণ আছে। ২০১৪ সালে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে জাদেজা ও অ্যান্ডারসনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। এ নিয়ে অভিযোগও তুলেছিল ভারত দল। জাদেজাকে কোনো কারণ ছাড়া নাকি ধাক্কা দিয়েছিলেন ইংলিশ পেসার। সে ঘটনায় শাস্তিও পেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। সুযোগ পেয়ে তাই খোঁচা মারার লোভ সামলাতে পারেননি জাদেজা।
এরপরই ক্রিকেটীয় দিকে মন দিয়েছেন জাদেজা, ‘ইংল্যান্ডে শরীরের কাছে খেলতে হয়। বল এখানে সুইং করে, আপনি যদি কভার বা স্কয়ার ড্রাইভ খেলতে চান, স্লিপে ক্যাচ ওঠার আশঙ্কা থাকে। শুরুতে আমার মনোযোগ ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে খুব বেশি বল না খেলা। যখন পয়েন্ট বা কভার ফাঁকা থাকে, তখন ওদিক দিয়ে চার মারার লোভ জাগে। কিন্তু এতে স্লিপে আউট হতে পারেন। এ কারণে আমার চিন্তা ছিল যে বল আমার খুব কাছে শুধু সেগুলো খেলা এবং সোজা খেলা।’