মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স এর মতো দুর্দান্ত গতির দুই ফাস্ট বোলার আছে অস্ট্রেলিয়া দলে। নাথান কোল্টার-নাইলের গতিও উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। জেসন বেহরনডর্ফ ও কেন রিচার্ডসনের মতো দুই পেসার তো একাদশে সুযোগ পাবেন কি না এ নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন। নিঃসন্দেহে অস্ট্রেলিয়ার মূল শক্তি তাদের পেস বোলিং। আর রিকি পন্টিং কি না সব মনোযোগ স্পিনেই দিচ্ছেন!
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে সহকারী কোচ হিসেবে যুক্ত হয়েছেন রিকি পন্টিং। দুবার বিশ্বকাপ জেতা এই অধিনায়ক নিজেদের শক্তি নিয়ে নয় দুর্বলতা নিয়েই ভাবছেন। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া কেমন করবে, সেটা পুরোটাই নির্ভর করছে স্পিনের ওপর। আরও পরিষ্কারভাবে বললে স্পিনের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের সাফল্য ও নিজেদের স্পিনারদের দক্ষতার ওপর।
এবারের ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কম বলা হচ্ছে। কিন্তু এ দলেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাওয়া খেলোয়াড়ের সংখ্যা পাঁচজন। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ছাড়া গত বিশ্বকাপ দলে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক। সহকারী কোচ ব্র্যাড হ্যাডিনও ছিলেন সে দলে। আর পন্টিং তো পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলে চারটি ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতাও নিয়েছেন! কিন্তু সে অভিজ্ঞতার সদ্ব্যবহার করার সুযোগ নেই অস্ট্রেলিয়ার। গতবার টপ অর্ডারের এনে দেওয়া রান ও স্টার্কের গতির ঝড় দিয়েই বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছে স্বাগতিক দল। গতবার তাদের মূল স্পিনার ডোহার্টি মাত্র এক ম্যাচ খেলেছিলেন। এবার ব্যাপারটা উল্টো। অ্যাডাম জাম্পা ও নাথান লায়নের ওপর অনেক আশা ভরসা অস্ট্রেলিয়ার।
টেলিগ্রাফের সঙ্গে কথোপকথনে পন্টিং জানিয়েছেন গত তিন বছরে বিশ্বের সব সেরা দলের স্পিন আক্রমণে গুরুত্ব দেওয়াই বলে দিচ্ছে বিশ্বকাপে কারা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, ‘বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সাফল্য নির্ভর করছে দুটি বিষয়ের ওপর। এক, তারা কেমন স্পিন করতে পারে। দুই, তারা কতটা ভালো স্পিন খেলতে পারে। গত ১২ অথবা ১৮ মাসে এটাই ওদের অ্যাকিলিস হিল (সবচেয়ে বড় দুর্বলতা)। এখন জাম্পা ভালো বোলিং করছে। লায়নও স্কোয়াডে আছে। যখনই খেলেছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও ভালোই করেছে।’
বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং নিয়েও নতুন করে আশা পাচ্ছেন পন্টিং, ‘গত এক দেড় বছরের চেয়ে আমাদের মিডল অর্ডার এখন একটু হলেও ভালো অবস্থায় আছে। ওয়ার্নার ফিরেছে, স্টিভ স্মিথও দলে এসেছে। এর ফলে স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে মিডল অর্ডারকে আগের চেয়ে বেশ ভালো দেখাচ্ছে।’
এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছেন স্মিথ ও ওয়ার্নার। কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপে চলে যাচ্ছেন এ দুজন। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের দেশে বল টেম্পারিং নিয়ে স্লেজিং শুনতে হবে এটা ধরেই নিয়েছেন দুজন। ফলে বাড়তি চাপ নিয়ে খেলতে হবে তাদের। তবে পন্টিং খুশি সঠিক সময়েই ফর্মে ফিরছেন দুজন, ‘ওরা দুজন খুবই ভালো খেলছে। স্টিভ স্মিথের ধারণা সে এখনো শতভাগ সুস্থ না, তবে সুস্থ হতে দেরি হবে না। আর ওয়ার্নার আইপিএলে খুবই দুর্দান্ত ফর্মে ছিল। ওরা দুজন আসায় দলের জন্য ভালো হয়েছে, ওরা জাত খেলোয়াড়। ইংল্যান্ডে যাওয়ার পর দর্শক ও অন্যদের অনেক কথাই শুনতে হবে। কিন্তু ওরা পরিণত, সব ধরনের পরিস্থিতিই দেখেছে এবং সামলেছে। আমি নিশ্চিত ওরা ভালো করবে।’