অস্ট্রেলিয়ার জোচ্চুরি ধরা পড়েছে যেভাবে

ব্যানক্রফট লুকিয়ে ফেলতে চাইছেন হলুদ টেপ। কিন্তু ধরা পড়ে গেলেন ক্যামেরায়
ব্যানক্রফট লুকিয়ে ফেলতে চাইছেন হলুদ টেপ। কিন্তু ধরা পড়ে গেলেন ক্যামেরায়

বাজিকরের ছদ্মবেশ নেওয়া সাংবাদিকের গোপন ক্যামেরা প্রকাশ্যে এনেছিল স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি। ধরা পড়ে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের দুই পেসার মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমির এবং অধিনায়ক সালমান বাট। এবার কেপটাউনে সেই ক্যামেরাই আবিষ্কার করল অস্ট্রেলীয়দের বল টেম্পারিং–কাণ্ড। ক্যামেরাম্যানের ক্যামেরা ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে অনুসরণ করল, যেন গোপন সূত্রের খবর পেয়েই। গোপন সূত্র কিন্তু আসলেই ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার ফানি ডি ভিলিয়ার্সের দাবি, তিনিই সেই সূত্র।

১৯৯০-এর দশকে ১৮টি টেস্ট খেলা ডি ভিলিয়ার্স এখন কাজ করেন ক্রিকেট ম্যাচ সম্প্রচার সংস্থায়। তাঁর সংস্থাই সম্প্রচার করছে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। ডি ভিলিয়ার্স বলছেন, তিনিই ক্যামেরাম্যানদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয়দের দিকে দৃষ্টি রাখতে। ডি ভিলিয়ার্সের সন্দেহ হয়েছিল, রিভার্স সুইং পেতে কিছু একটা করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল।

অস্ট্রেলিয়া কিছু একটা করতে পারে, তা আগেই অনুমান করেছিলেন ফানি ডি ভিলিয়ার্স

শেষ পর্যন্ত তাঁর সন্দেহই সত্যি হয়েছে। ক্যামেরার চোখে ধরা পড়েছে ব্যানক্রফটের ‘কুখ্যাত’ হলুদ টেপ ও এরপর তা লুকিয়ে ফেলার দৃশ্য। বাকিটা ইতিহাস।
কেন সন্দেহ হলো, দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় এক বেতারকে সেটি বলেছেন ফানি ডি ভিলিয়ার্স, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, ওরা (অস্ট্রেলিয়া) যদি ২৬, ২৭ কিংবা ২৮তম ওভারে রিভার্স সুইং পায়, ভাবতে হবে কিছু একটা গড়বড় আছে। আমরা ক্যামেরাম্যানদের যা বলেছিলাম, তা হলো, “যাও, একটু নজর রাখো। ওরা কিছু একটা ব্যবহার করছে।” এক-দেড় ঘণ্টা খোঁজার পর কিছু একটা পাওয়া গেল। এরপর ব্যানক্রফটকে অনুসরণ করা শুরু, শেষ পর্যন্ত সে ধরাও পড়ল।’

আগেভাগে রিভার্স সুইং হওয়াটা কেন অস্বাভাবিক, সেটিও ব্যাখ্যা করেছেন ডি ভিলিয়ার্স, ‘যে উইকেটে ঘাস আছে, সেই উইকেটে বলের অবস্থা অতটা পরিবর্তন হবে না, যেটা সম্ভব পাকিস্তানের উইকেটে। যেখানে প্রতিটি সেন্টিমিটার থাকে এবড়োখেবড়ো। আমরা ঘাসে ঢাকা উইকেটের কথা বলছি। এখানে বলের আকৃতি, বলের এক পাশের মসৃণতা পরিবর্তন করতে অন্য কিছু করতেই হবে। আপনাকে বলের এক পাশ ভেজা ও ভারী বানাতে হবে অন্য পাশের চেয়ে। অস্ট্রেলীয়রা ৩০ ওভারের মধ্যেই রিভার্স সুইং পেল। যার অর্থ, তাদের কিছু করতে হয়েছে।’

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে সিডনিতে ১০ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিতিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। অস্ট্রেলীয়রা তাই তাঁকে এখনো মনে রেখেছে। এ ঘটনার পর তো আরও বেশি রাখবে।