তৃতীয় দিনেই জমে উঠেছে আইপিএল। বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং আটকাতে নিম্নমানের উইকেট বানানো হয়েছে, ডেভিড ওয়ার্নারের প্রত্যাবর্তন হয়েছে; আইপিএল দেখেছে আন্দ্রে রাসেল, ক্রিস গেইল ও ঋষভ পন্ত ঝড়। তবে গতকাল সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গেছে রাজস্থান রয়্যালস ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ম্যাচ। ম্যাচের ফল নিয়ে আগ্রহ খুবই কম। সবাই ব্যস্ত রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে নিয়ে। জস বাটলারকে ‘মানকাড’ আউট করে টিভি পর্দা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যস্ত রেখেছেন অশ্বিন।
এ ঘটনায় সবাই দ্বিধাবিভক্ত, এটা বলা যাচ্ছে না। বরং বলা যেতে পারে, সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অশ্বিনের পক্ষে। বাদবাকিরা সবাই অশ্বিনের এমন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনিতেই মানকাড আউট হলেই ক্রিকেটীয় চেতনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কাল অশ্বিন নিজের স্বাভাবিক বোলিং অ্যাকশন থামিয়ে ব্যাটসম্যান কখন ক্রিজের বাইরে যাবেন, তার অপেক্ষায় ছিলেন। ফলে সবাই এ নিয়ে আরও বেশি আলোচনায় মেতেছে। ক্রিকেটের আইন কিছুটা পরিবর্তন হওয়ায় এখন একে বেআইনি বলার উপায় নেই। কিন্তু ম্যাচ জেতার জন্য এভাবে ‘নগ্ন’ চেষ্টা ভালো চোখে দেখেননি অনেক ক্রিকেটারই। আর বরাবরের মতোই টুইটারকেই ব্যবহার করেছেন মতামত জানানোর জন্য।
সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ অতীতেও অশ্বিন যে এমন কিছু করেছেন, সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন সবাইকে, ‘এটা ক্রিকেটের আইনে পড়ে কিন্তু জস বাটলারকে অন্তত একবার সতর্ক করা উচিত ছিল অশ্বিনের। খুবই বিস্মিত হয়েছি! একবার আন্তর্জাতিক ম্যাচেও ওকে এটা করতে দেখেছি। মনে আছে সেবার শেবাগ সে আবেদন (আউটের) ফিরিয়ে নিয়েছিল।’ ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক এউইন মরগান টুইট করেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না কী দেখছি! ছোটদের জন্য খুব বাজে উদাহরণ হয়ে থাকল। একসময় অশ্বিন এ নিয়ে অনুতাপ করবে।’
বাটলারের জাতীয় দলের উদ্বোধনী সঙ্গী জেসন রয়ও এ নিয়ে বিস্ময় লুকাননি, ‘অশ্বিন, এটা খুবই বাজে আচরণ! দেখে খুবই হতাশ হয়েছি।’ তবে সবচেয়ে কড়া কথা শুনিয়েছেন শেন ওয়ার্ন। কিছুদিন আগেই যেকোনোভাবে জিততে হবে—এই মানসিকতার কারণে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের গায়ে কালি লাগতে দেখেছেন। বল টেম্পারিংয়ের ঘটনার ধাক্কা অস্ট্রেলিয়া এখনো কাটাতে পারেনি পুরোপুরি। সেই একই মানসিকতা অশ্বিনের মধ্যে দেখে এবং নিজের সাবেক দলের বিপক্ষে এমন কাজ করতে দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি ওয়ার্ন, ‘অশ্বিনের লজ্জাকর ও কলঙ্কজনক কাজ নিয়ে শেষ কথা বলি! এই যেকোনোভাবে জেতার মানসিকতা বদলাতে হবে। ক্রিকেটের চেতনার সঙ্গে যায়, খেলাটা যেন দাগমুক্ত থাকে, এটাই বেশি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। ছোট ছেলে ও মেয়েরা যারা ক্রিকেট খেলছে, তাদের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে।’