বাবা শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে অর্জুন টেন্ডুলকার
বাবা শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে অর্জুন টেন্ডুলকার

বলছেন কপিল দেব

অর্জুন ‘অর্ধেক টেন্ডুলকার’ হতে পারলেই যথেষ্ট

বিখ্যাত বাবার ছেলে হওয়ার চাপ যে কী জিনিস, সেটা অনেকেই টের পেয়েছেন। সিনেমার জগতে এটা খুব ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন অমিতাভ বচ্চনের ছেলে অভিষেক বচ্চন। অভিনয়টা যে বেচারা অভিষেক খুব একটা খারাপ করেন, তা নয়। কিন্তু তাঁকে মানুষ যে সব সময়ই মাপতে চায় অমিতাভের কীর্তির বিচারে! ভারতের ক্রিকেটে এই চাপ টের পেয়েছেন রোহান গাভাস্কার। কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের ছেলে বলে সব সময়ই তাঁর কাছে বাড়তি প্রত্যাশা ছিল দেশটির ক্রিকেটপ্রেমীদের। সেই চাপে বারবারই ভেঙে পড়েছেন রোহান।

মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে আইপিএল একটি ম্যাচও খেলা হয়নি অর্জুনের

ভারতের ক্রিকেটে এখন এটা টের পাচ্ছেন অর্জুন টেন্ডুলকার। এমনিতে অর্জুনের তাঁর বাবার মতো হওয়ার সুযোগ নেই। শচীন টেন্ডুলকার ছিলেন ব্যাটসম্যান। তাঁর ছেলে অর্জুন বাঁহাতি পেসার। এরপরও অর্জুনকে মানুষ দেখার চেষ্টা করে শচীন টেন্ডুলকারের কীর্তির আয়নায়! ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক কপিল দেব মনে করেন, এটা অর্জুনের জন্য বিরাট এক চাপ। এই চাপ সামলে ওঠার জন্য অর্জুনকে একটা পরামর্শও দিয়েছেন কপিল—মানুষ কী বলে ভুলে যেতে হবে। এরপর টেন্ডুলকার যা কিছু করেছেন, সেটার অর্ধেক অর্জন করতে পারলেই হবে!

ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক কপিল দেব

সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে অর্জুনকে ৩০ লাখ রুপিতে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস কিনে নিয়েছিল। টেন্ডুলকার দলটির মেন্টর হলেও আইপিএলে একটি ম্যাচ খেলারও সুযোগ পাননি অর্জুন। মুম্বাইয়ের কোচ শেন বন্ড তাঁকে একটিও ম্যাচে না রাখার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, ২২ বছর বয়সী পেসারের এখনো অনেক কিছু শেখার আছে।

অর্জুন আইপিএলে কোনো ম্যাচ না খেলার পরও মানুষ তাঁকে নিয়েই কথা বলছে। কেন, এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কপিল বলেছেন, ‘কারণ, সে শচীন টেন্ডুলকারের ছেলে। ওকে ওর খেলাটা খেলতে দেওয়া উচিত। শচীনের সঙ্গে কেউ ওর তুলনা করবেন না। টেন্ডুলকার নামটাই ওর জন্য একটা অসুবিধা।’

টেন্ডুলকার-পুত্র অর্জুন

বাবার নাম ও কীর্তির ওজন বইতে পারছিলেন না বলে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ছেলে নিজের নামটাই বদলে ফেলেছিলেন। কপিল সেই উদাহরণও টেনে এনেছেন, ‘ডন ব্র্যাডম্যানের ছেলে তার পারিবারিক নামটা ফেলে দিয়েছিল। কারণ, সবাই তার কাছ থেকে বাবা ব্র্যাডম্যানের পারফরম্যান্স আশা করছিল।’

অর্জুনকে অবশ্য তাঁর নাম বদলাতে বলেননি কপিল। তাহলে অর্জুন কীভাবে চাপ সামলাবেন? সেই পরামর্শ কপিল তাঁকে দিয়েছেন, ‘আমি ওকে একটা জিনিসই বলতে চাই...খেল এবং নিজের খেলাটা উপভোগ করো। কিছু প্রমাণ করার চেষ্টার দরকার নেই। তুমি যদি তোমার বাবার কীর্তি বা অর্জনের ৫০ শতাংশও করতে পারো...সেটাই যথেষ্ট। শচীন এত বড় মাপের ক্রিকেটার ছিল যে টেন্ডুলকার নামটা সামনে এলেই আমাদের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী হয়ে যায়।’