আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আর খেলবেন না, এ কথা নিজের মুখে কখনো বলেননি তামিম ইকবাল। তবে এ বছর জানুয়ারিতে ছয় মাস এ সংস্করণ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। সেই ছয় মাস শেষ প্রায়। এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডের সঙ্গে তিনটি টি-টোয়েন্টিও খেলবে বাংলাদেশ। তো তামিম কি খেলবেন সেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে?
টেস্ট দলের অনেকেই এরই মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলে গেছেন। তামিমসহ বাকিরা এবং ওয়ানডে-টোয়েন্টি দলে থাকা অন্য খেলোয়াড়েরাও কয়েক দিনের মধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিমান ধরবেন। এর মধ্যেই খুব স্বাভাবিকভাবে আবারও তামিমের টি-টোয়েন্টি ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নটি সামনে এসেছে। তবে বাংলাদেশের ওপেনার সরাসরি কোনো উত্তর দেননি সেই প্রশ্নের, বরাবরের মতো ধোঁয়াশাই রেখে দিলেন।
দুই বছরের জন্য একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের পণ্যদূত হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আজ এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তামিম বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি নিয়ে যে পরিকল্পনা আমার, সেটা তো আমাকে তো বলার সুযোগই দেওয়া হয় না। হয় আপনারা বলে দেন, না হয় অন্য কেউ বলে দেয়। ওটাই চলতে থাকুক (হাসি)।’
তামিম বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে সফর, ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ, বিশ্বকাপ এবং ঘরের মাঠে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সিরিজ মিলিয়ে ৩০টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ।
তবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি না খেললেও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বিপিএলে খেলেছেন তামিম। বিপিএলের ঠিক আগে আগেই বিবিসি সভাপতি নাজমুল হাসান দাবি করেছিলেন, তামিম তাঁকে বলেছেন তিনি আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে খেলতে চান না। নাজমুলের ভাষ্য অনুযায়ী তামিম তাঁকে বলেছেন, ‘আপনি আমাকে জোর করবেন না। আপনি বললে তো আমাকে আসতেই হবে। কিন্তু আমি আসলে এই ফরম্যাটে খেলতে চাই না।’
এরপরই ছয় মাস নিজেকে টি-টোয়েন্টি থেকে সরিয়ে রাখার ঘোষণা দেন তামিম। পরে গত মার্চে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেটার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার নিজের তো একটা প্ল্যান আছে। ওটা আপনারা আগামী মাসের মধ্যেই জানতে পারবেন। আমি কী চিন্তা করছি, আমি এই ফরম্যাটে খেলব কি খেলব না বা আমি কী করব বা করব না...আমি কোনো কিছু লুকানোর মতো মানুষ নই। ওই যে আমি আপনাকে বললাম, আমি কী করতে চাই, তা আমার কাছে পরিষ্কার। কিছুদিনের মধ্যেই তা জানতে পারবেন।’
সেই কিছুদিন হয়তো এখনো শেষ হয়নি, তাই তামিমও পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না। এর মাঝে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। এগুলো যে তামিম পছন্দ করছেন না, সেটা বোঝা গেল আজ তাঁর কথাতেই, ‘আমাকে তো বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। এটা এত দিন ধরে আমি ক্রিকেট খেলি এতটুকু আমি ডিজার্ভ করি—আমি কী চিন্তা করি, না করি, এটা আমার মুখ থেকে শোনা। কিন্তু হয় আপনারা কোনো ধারণা দিয়ে দেন, বা অন্য কেউ এসে বলে দেয়। যখন বলেই দেয়, আমার এখানে কিছু বলার নেই।’
শেষ কথাটা বলে হাসতে হাসতে সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে হাসলেন তামিম। যেন রহস্যটা আরও ঘনীভূত করতে পেরে আনন্দই পাচ্ছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।