মৌসুমের শুরুতেই ট্রফি ঘরে তুলল বসুন্ধরা কিংস।
মৌসুমের শুরুতেই ট্রফি ঘরে তুলল বসুন্ধরা কিংস।

স্বাধীনতা কাপ

রোমাঞ্চকর ফাইনালে আনিসুরের বীরত্বে বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন

নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতা। এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোলের দেখা নেই। শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা কাপ ফাইনালের নাটকীয়তা শেষ হলো টাইব্রেকারে।

কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ফাইনালের নায়ক হয়ে রইলেন বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান। টাইব্রেকারে ঠেকিয়েছেন দুটি শট। আনিসুরের বীরত্বে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ৪-১ গোলে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতল বসুন্ধরা কিংস।

টাইব্রেকারে শেখ রাসেলের মিডফিল্ডার সোহেল রানার শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক আনিসুর। এরপর হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের শট জালে জড়ায়। কিন্তু শেখ রাসেলের খালেকুজ্জামানের শট আবারও একইভাবে ঠেকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন আনিসুর।

টাইব্রেকারে দুটি শট ঠেকিয়ে বসুন্ধরার জয়ের নায়ক আনিসুর

শেখ রাসেলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলামকে ফাঁকি দিয়ে টাইব্রেকারে সহজেই গোল করেন রবসন দ্য সিলভা, দোরিয়েলতন গোমেজ ও মোহাম্মদ রেজা খানজাদেহ। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে শেষ শটটি নিতে আসেন গোলরক্ষক আনিসুর নিজেই।

আশরাফুল এবারও ঠেকাতে পারেননি। শেখ রাসেলের জালে বল জড়াতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার, কোচ, কর্মকর্তারা। আনন্দে মাঠেই ঢুকে পড়ে বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকেরা।

গত মৌসুমে স্বাধীনতা কাপ খেললেও ফেডারেশন কাপে অংশ নেয়নি বসুন্ধরা কিংস। গতবার স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী। আর রানার্সআপ হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। শুধু প্রিমিয়ার লিগেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। এমনকি এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেও বিদায় নেয়।

তবে এবার লিগ শিরোপা ধরে রাখার পাশাপাশি প্রতিটি টুর্নামেন্টেই সাফল্য চান বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন। মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপ জিতে সেই পথে একধাপ এগিয়ে গেল বসুন্ধরা কিংস।

এবারের টুর্নামেন্টজুড়েই ছন্দময় ফুটবল উপহার দিয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। ২০১২-১৩ মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জেতার পর আর কোনো শিরোপা জিততে পারেনি ক্লাবটি। দীর্ঘ ট্রফি–খরা ঘুচিয়ে শেখ রাসেলের ফুটবলাররা চেয়েছিলেন সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু সেই সুযোগ আর দিল না বসুন্ধরা কিংস।

ড্রেসিং রুমে ট্রফি হাতে বসুন্ধরা কিংস কোচ অস্কার ব্রুজোন ও তাঁর শিষ্যরা

ম্যাচের মাত্র ৩৮ সেকেন্ডে গোল করে মিগুয়েইল ফেরেইরা দিনটা নিজেদের করে নেওয়ার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ১২ মিনিটেই শেখ রাসেলকে সমতায় ফেরান এমফোন সানডে উদো। এরপর ৩০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে শেখ রাসেলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চার্লস দিদিয়ের। এ গোলেরও বড় অবদান সানডে উদোর। বক্সের মধ্যে ভয়ংকরভাবে ঢুকে যাওয়া উদোকে পেছন থেকে টেনে ধরেন বসুন্ধরা কিংসের রাইট ব্যাক সাদ উদ্দিন। এরপরই পেনাল্টি পায় শেখ রাসেল।

অবশ্য ম্যাচে ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি বসুন্ধরা কিংস। এবারও পেনাল্টি থেকেই স্কোরলাইন ২-২ করে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরা। বক্সের মধ্যে শেখ রাসেলের ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান অহেতুক ফাউল করেন রবসনকে। এরপর রবসন পেনাল্টি থেকে করেছেন দ্বিতীয় গোল।

বসন্ধুরা কিংস ছেড়ে এবার শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রে যোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম। উইং দিয়ে বেশ কয়েকবার আক্রমণে উঠলেও গোল পাননি। অতিরিক্ত সময়ে অবশ্য ভালো সুযোগ পেয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু মোরসালিনের কর্নার থেকে দোরিয়েলতনের হেড অল্পের জন্য বার ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। বাকি সময়ে অবশ্য চেষ্টা করেও দুই দল কোনো গোল করতে পারেনি।