প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৩৮। এই রানটাকে পেছনে ফেলার চেষ্টা ছিল সব সময়ই। পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে বিসিএলের ফাইনালে অবশেষে তাতে সফল হলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি দিয়েই। কাল দিন শেষে দক্ষিণাঞ্চলের ইমরুল কায়েস বললেন, এ রকম একটা কিছু করা সময়েরই দাবি ছিল
ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগছে?
ইমরুল কায়েস: খুবই আনন্দ হচ্ছে। আমার অনেক দিন ধরেই লক্ষ্য ছিল একটা ডাবল সেঞ্চুরি করা । ডাবল সেঞ্চুরি না করলে আসলে বর্তমানে বাংলাদেশে একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া যাচ্ছে না (হাসি)। আমার জন্য এটা খুব দরকার ছিল।
অন্য ব্যাটসম্যানদের ডাবল সেঞ্চুরি দেখেই কি প্রত্যাশাটা বেড়েছে?
ইমরুল: অবশ্যই...অন্য টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যখন ডাবল সেঞ্চুরি করে তখন নিজের কাছেই মনে হয়, আমি কেন পারব না। ডাবল সেঞ্চুরি করা সব ক্রিকেটারের জন্যই অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ এবং অর্জন।
আগে কেন হয়নি—ডাবল সেঞ্চুরি করার আকাঙ্ক্ষা কি এত দিন কম ছিল?
ইমরুল: আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল ডাবল সেঞ্চুরি করার, যেহেতু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমার ডাবল সেঞ্চুরি নেই। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা একাডেমির সঙ্গে করেছিলাম ১৫০ রান। আমি সব সময়ই চেষ্টা করেছি নিজের সর্বোচ্চ রানটা থেকে বেশি করব। এ জন্যই হয়তো লক্ষ্যটা এসেছে। আর এখন তো আমাদের পরিবেশই বলে দিচ্ছে আমার ক্রিকেটের আরও উন্নতি করতে হবে।
‘পরিবেশ’ বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাচ্ছেন?
ইমরুল: এখন দেখবেন আমাদের দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে তিনিট-চারটি সেঞ্চুরি বা ডাবল সেঞ্চুরি হয়ে যাচ্ছে। এটি বড় একটি প্রেরণা। যে ডাবল সেঞ্চুরি করে তাকে দেখলে ইচ্ছে হয় ও যখন করেছে, আমিও করব।
কখন মনে হলো যে ডাবল সেঞ্চুরিটা হয়ে যেতে পারে?
ইমরুল: প্রথম ইনিংসে লং অনে মারতে গিয়ে বাজেভাবে আউট হয়েছি। এবার ইচ্ছা ছিল বল নিচে রাখব । কোনো বিগ শট না খেলে বল ধরে ধরে খেলব। সে জন্যই হয়তো সফল হয়েছি। রানটা যখন ১৪০ হয়ে গেল, তখনই ভেবেছি মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারলে ডাবল সেঞ্চুরি হয়ে যাবে।
ওপরে খেলবেন না ঠিক করেছিলেন, কিন্তু ছক্কা তো মারলেন অনেকগুলো...
ইমরুল: আসলে পরিস্থিতিই বলে দিয়েছে আমাকে কী করতে হবে। বলে যদি ফ্লাইট দেয় ব্যাটসম্যান স্বাভাবিকভাবেই ডাউন দ্য উইকেটে যাবে। আমি বোলিংয়ের বৈচিত্র্য বা ফ্লাইট দেখেই মারতে গেছি।
সামনে ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবেন। সেখানেও নিশ্চয়ই এ রকম কিছু করার চেষ্টা থাকে?
ইমরুল: সব ব্যাটসম্যানেরই পরিকল্পনা থাকে সেঞ্চুরি করার। আগে সেঞ্চুরি, তারপর ডাবল সেঞ্চুরি। হ্যাঁ, আমি ও রকম টার্গেট নিয়েই যাব। সামনে টেস্ট ম্যাচ আছে। আত্মবিশ্বাসটাকে এমন জায়গায় নিতে চাই যেন আমার জন্য ভালো হয়।
তাইজুল এক ইনিংসে ৮ উইকেট পেল। কেমন দেখলেন ওর বোলিং?
ইমরুল: এক বছর ধরে ও ভালো খেলছে। বাংলাদেশে অনেক ভালো বাঁহাতি স্পিনার আছে। তাইজুলও ভালো । তবে আমার মনে হয় চার দিনের ম্যাচে আক্রমণ করে না খেলে স্বাভাবিকভাবে খেললেই ওকে সহজে সামলানো সম্ভব। কোনো ব্যাটসম্যান সামনে গিয়ে খেললে তার জন্য সে খুব বিপজ্জনক।
ম্যাচটা কোন দিকে যাচ্ছে?
ইমরুল: ম্যাচ এখন পুরোটাই আমাদের হাতে। কাল প্রথম দুই সেশনে যদি আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারলে ওদের দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাটিং দেব। ম্যাচ ড্র হলেও আমরা চ্যাম্পিয়ন হব। চেষ্টা করব বড় টার্গেট দেওয়ার, যেন ওরা সহজে টপকাতে না পারে।
ডাবল সেঞ্চুরি কাকে উৎসর্গ করবেন?
ইমরুল: আমার বাবা-মাকে।