বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন শরীফুল
বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন শরীফুল

সেন্ট লুসিয়া টেস্ট

৪ উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে ফিরল বাংলাদেশ

আগের দিন বোলারদের ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন তামিম ইকবাল। সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামের উইকেটে আজ মুভমেন্টের দেখা মিলেছে, তবে এর চেয়েও বড় উপস্থিতি ছিল বাউন্সের। বাংলাদেশ বোলাররা ধৈর্য ধরলেন ঠিকই, সফলও হলেন। দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, প্রথম ইনিংসে ৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে মধ্যাহ্নবিরতিতে গেছে তারা। ক্রিজে থাকা কাইল মায়ার্স অপরাজিত ৪ রানে, জার্মেইন ব্ল্যাকউডের রান ২।

বলের আকৃতি ঠিক না থাকায় সেটি বদলানোর পরই যেন বদলে গেছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। শরীফুল ইসলাম প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার পর ওই পরিবর্তিত বলে বাংলাদেশ পরের ৩টি উইকেট পেয়েছে ১২ বলের মধ্যে। ক্রেগ ব্রাফেটকে মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরানোর পর জোড়া আঘাত করেছেন খালেদ আহমেদ—রেমন রিফারের পর ফিরিয়েছেন এনক্রুমা বোনারকে।

জোড়া আঘাত করেন খালেদ

প্রথম ওভার মেডেন দিয়ে দিনটা শুরু করেন ইবাদত, প্রথম বাউন্ডারি পেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অপেক্ষা করতে হয় দিনের ৬ষ্ঠ ওভার পর্যন্ত। পরের দুই ওভারেও অবশ্য বাউন্ডারি আসে। এক প্রান্তে খালেদ আহমেদকে সরিয়ে শরীফুল ইসলামকে আনেন সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রুও এনে দেন তিনিই। দিনের দশম ওভারে তাঁর বেশ তীক্ষ্ণ বাউন্সারে হুক করতে গিয়ে উইকেটকিপার নুরুল হাসানের হাতে ধরা পড়েন জন ক্যাম্পবেল, থামেন অর্ধশতক থেকে ৫ রান দূরেই।

এর আগেই অবশ্য ব্রাফেটের সঙ্গে ক্যাম্পবেলের উদ্বোধনী জুটিতে ওঠে ১০০ রান। ২০১৪ সাল থেকে এ নিয়ে চার বার ওয়েস্ট ইন্ডিজ শতরানের উদ্বোধনী জুটির দেখা পেল, এর প্রতিটিই এসেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে।

সঙ্গী হারালেও ব্রাফেটকে দ্রুতই টলাতে পারেনি বাংলাদেশ। অসম বাউন্সে তাঁকে পর পর দুই ওভার বেশ অস্বস্তিতে ফেলেন ইবাদত, তবে সাফল্য মেলেনি তাতে। প্রথম ঘণ্টায় ১৪ ওভারে ওঠে ৪৪ রান, আসে ৫টি বাউন্ডারি। পানি-পানের বিরতির পর ফেরানো হয় খালেদকে, নতুন ব্যাটসম্যান রেমন রিফারের ব্যাটের কানা দুইবার খুঁজে পান তিনি। তবে দুবারই বল যায় স্লিপের শূন্য অঞ্চল দিয়ে—গালির ডান পাশের নাগালের বাইরের পর প্রথম ও বেশ স্কয়ারে থাকা আরেক স্লিপের মাঝ দিয়ে।

৩২তম ওভারে দিনে প্রথম স্পিনার হিসেবে আসেন মিরাজ, করেন মেডেন। আঁটসাঁট বোলিং করতে থাকা মিরাজই এনে দেন দ্বিতীয় উইকেট। ৩৭তম ওভারে বলের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় বদলানো হয় সেটি, এর পরের ওভারেই উইকেট পান মিরাজ। প্রথম বলটি একটু ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন, সামনে ঝুঁকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে লাইন পুরো মিস করে বোল্ড হন ব্রাফেট। অর্ধশতকের পর খুব বেশি দূর যেতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক, যিনি ১০৩ বলে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ২৭তম ও বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম ফিফটি।

ব্রাফেট-ক্যাম্পবেলের উদ্বোধনী জুটিতে ওঠে ১০০ রান

ঠিক পরের ওভারে সফল হন খালেদও। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বলটা একটু বেশি উঠেছিল, রিফারের ব্যাটের কানায় লেগে ভাঙে স্টাম্প। রিফারের সঙ্গে দ্বৈরথে তাই শেষ পর্যন্ত জেতেন খালেদই। রিফার ফেরেন ২২ রান করে। পরের উইকেটটি পেতে বাংলাদেশকে ৪ বলের বেশি অপেক্ষায় রাখেননি খালেদ। এবার ওভার দ্য উইকেট থেকে এনক্রুমা বোনারকে বোল্ড করেন প্রায় রিফারের মতো করেই—মোটামুটি লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে ইনসাইড-এজে স্টাম্প ভাঙে বোনারের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

২য় দিন, মধ্যাহ্নবিরতি

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৬৪.২ ওভারে ২৩৪ (তামিম ৪৬, নাজমুল ২৬, এনামুল ২৩, লিটন ৫৩, ইবাদত ২১, শরীফুল ২৬, খালেদ ১; জোসেফ ৩/৫০, সিলস ৩/৫৩, ফিলিপ ২/৩০, মেয়ার্স ২/৩৫)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৪২ ওভারে ১৩৭/৪ (ব্রাফেট ৫১, ক্যাম্পবেল ৪৫, রিফার ২২; খালেদ ২/৪১, মিরাজ ১/২০, শরীফুল ১/৩৪)