২০১৮ বিশ্বকাপ আর্জেন্টাইনদের জন্য বড় এক যন্ত্রণার নাম। লিওনেল মেসির নেতৃত্বে সের্হিও আগুয়েরো, আনহেল দি মারিয়া, লিয়ান্দ্রো পারেদেস, হাভিয়ের মাচেরানোরা অবশেষে অপ্রাপ্তি ঘোচাবেন, বিশ্বকাপ জয়ের মন্ত্রণা দেবেন কোচ হোর্হে সাম্পাওলি—আর্জেন্টিনা-ভক্তদের আশা ছিল অনেক।
কিছুই পূরণ হয়নি। কষ্টেসৃষ্টে নাইজেরিয়া-আইসল্যান্ডকে টপকে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে ফ্রান্সের কাছে হেরে শেষ হয় মেসিদের বিশ্বকাপ-যাত্রা। চার বছর পর সে বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আর্জেন্টাইন তারকা দি মারিয়া স্বীকার করলেন, ওই দলের আসলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠারও যোগ্যতা ছিল না!
গতকালই পিএসজির হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা খেলে ফেলেছেন এই আর্জেন্টাইন উইঙ্গার। লিগে পিএসজির আরও দুই ম্যাচ বাকি থাকলেও দি মারিয়া যে খেলবেন না, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। প্যারিসের ক্লাবটা আর তাঁর সঙ্গে চুক্তি নবায়নে আগ্রহী নয়। ভবিষ্যতে কোন ক্লাবের হয়ে খেলবেন, এখনো নিশ্চিত নয়। এমন অবস্থায় আর্জেন্টাইন রেডিও তোদোপাসা উরবানা প্লে-এফএমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এই উইঙ্গার।
সেখানেই কথায়-কথায় উঠে এসেছে বিভিন্ন বিষয়।
দি মারিয়া কথা বলেছেন ২০১৮ বিশ্বকাপে তাঁদের ব্যর্থ অভিযান নিয়ে। খোলাখুলি জানিয়েছেন, রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া উচিত ছিল তাঁদের, ‘আমরা যদি ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করি, বাস্তবতা বিবেচনা করি, তাহলে আমি বিশ্বাস করি সেবার গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়াই উচিত ছিল আমাদের!’
গ্রুপ পর্বে বাদ না পড়লেও পরের রাউন্ডে ঠিকই বাদ পড়ে আর্জেন্টিনা। ৪-৩ গোলে হেরে বসে ফ্রান্সের কাছে। যে ফ্রান্সই পরে জেতে বিশ্বকাপ। সেবার হয়নি, এবার হবে তো? দি মারিয়া বেশ আশাবাদী, ‘আমার মনে হয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এটাই শেষ সুযোগ আমার। আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করব (বিশ্বকাপ জেতার)। কোপা আমেরিকা জেতার ফলে মনে নতুন আশা জেগেছে।’
মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেদের নিয়ে নতুনভাবে গড়ে ওঠা পিএসজি দি মারিয়াকে নিয়ে আর স্বপ্ন দেখছে না। নিজেদের ভবিষ্যতের অংশ ভাবছে না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই উইঙ্গারকে। তাহলে কি আস্তে আস্তে অবসরের চিন্তা আসছে দি মারিয়ার মাথায়? আপাতত সেসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না এই উইঙ্গার, ‘আমি আরও এক মৌসুম ইউরোপে খেলতে চাই। এরপর দেখা যাবে কী হয়। কিন্তু আমরা সবাই জানি ফুটবলে কী কী হতে পারে। তাই আপাতত এই বছরের কথা চিন্তা করতে হবে। এরপর দেখা যাবে সামনের বছরে কী হয়।’
জাতীয় দল নিয়েও অবসরের চিন্তা করছেন না এই উইঙ্গার, ‘অনেকবারই মাথায় এসেছে জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়ার কথা। কিন্তু আমার পরিবার আমাকে থেমে যেতে শেখায়নি। তাঁরা আমাকে সব সময় লড়তে শিখিয়েছে। গোল করার জন্য যুদ্ধ করতে শিখিয়েছে।’