সাকিব আল হাসান টেস্ট খেলতে চান না বা এ সংস্করণে তাঁর আগ্রহ নেই—এমন কথা ঘুরেফিরেই আসছে সাম্প্রতিক সময়ে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ আজ বললেন একেবারেই ভিন্ন কথা। তাঁর জানামতে, সাকিব নাকি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেন ও খেলতে চান দীর্ঘ সংস্করণেই।
২০১৯ সালে পাওয়া আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাকিব খেলেছেন ৫টি টেস্ট। এ সময়ে বাংলাদেশ খেলেছে ১৩টি টেস্ট। নানা কারণে বাকিগুলোতে ছিলেন না সাকিব। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বেশ নাটকের পর গেলেও পারিবারিক কারণে টেস্ট না খেলেই দেশে ফিরতে হয়েছিল বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে।
সাকিব টেস্ট খেলবেন কি না, এমন প্রশ্নও ঘোরে বেশ কিছুদিন ধরে। ব্যক্তিগত কারণে এ অলরাউন্ডারের ছুটি চাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য এসেছে বিসিবির কাছ থেকেও। অবশ্য সাকিবের এবারের টেস্ট খেলতে চাওয়া না চাওয়ার প্রসঙ্গটি অন্য রকমই। মুমিনুল হক দায়িত্ব পালন করতে চান না, এমন কথা বলার পর থেকেই সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে আসছে সাকিবের নাম।
শেষ পর্যন্ত সাকিবকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আগামীকাল হতে যাওয়া বিসিবির বোর্ড সভায়। ২০১৯ সালে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুমিনুলকে। অধিনায়ক হিসেবে সেই মুমিনুলেরই উত্তরসূরি হবেন সাকিব, এমন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে তাঁর টেস্ট খেলার আগ্রহের কথাও।
আজ মিরপুরে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ বলেন, ‘সাকিব এখন সব সময়ই টেস্ট খেলতে চায়। আমি জানি না কেন কথাটা বারবার আসে যে সাকিব টেস্ট খেলতে চায় না। সাকিবের সঙ্গে যতবার কথা বলেছি, সে বলে, “আমি অন্য ফরম্যাটের থেকে টেস্ট বেশি উপভোগ করি। আমি সব সময় বেশি টেস্ট খেলতে চাই।”’
সাকিব এখন সব সময়ই টেস্ট খেলতে চায়। আমি জানি না কেন কথাটা বারবার আসে যে সাকিব টেস্ট খেলতে চায় না। সাকিবের সঙ্গে যতবার কথা বলেছি, সে বলে, “আমি অন্য ফরম্যাটের থেকে টেস্ট বেশি উপভোগ করি। আমি সব সময় বেশি টেস্ট খেলতে চাই।”খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজেই খেলেছেন সাকিব। এ সিরিজেও সাকিবের টেস্ট উপভোগ করার প্রমাণ পেয়েছেন মাহমুদ, ‘সাকিব খুবই অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার। আমার মনে হয় সে টেস্ট ম্যাচ উপভোগ করে। এটার প্রমাণ হিসেবে আমি মনে করি (সর্বশেষ) দুটি টেস্ট ম্যাচে সাকিব যে পরিমাণ বল করেছে, কবে সাকিব একটানা এত বোলিং করেছে আমার মনেও নেই। আমাদের ভয় ছিল দুটি টেস্ট ম্যাচে সাকিব (হয়তো) বেশি বোলিং করবে না, কিন্তু সে প্রমাণ করেছে নিজেকে। ম্যাচের আগে ওর ফিটনেস নিয়ে অনেক কথা উঠেছিল। আমি মনে করি যে বল হাতে সাকিব “অলওয়েজ গ্রেট।”’
সাকিব অধিনায়কত্ব পেলে দলের জন্য ভালো হবে বলেই মনে করেন মাহমুদ, ‘সাকিবের সাথে অধিনায়কত্ব নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি। তবে অন্যান্য বিষয়ে আমাদের কথা হয়। এই টেস্ট ম্যাচ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) নিয়ে গতকালও কথা বলেছি বেশ কিছু। ম্যাচের পরিস্থিতি বা অন্যান্য কিছু নিয়ে। খেলার ব্যাপারে ওর জ্ঞান অনেক, সব সময় যেটা হয়—ওর সাথে কথা বলে সেই আরামটা পাওয়া যায়। ও যেভাবে সবার সাথে মিশতে পারে, আমার মনে হয় ও যদি অধিনায়কত্ব পায় তাহলে সেটি দলের জন্য খুবই ভালো হবে।’
শেষ পর্যন্ত অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেলে সাকিবের মধ্যে একটা পরিবর্তন আসতে পারে বলেও মনে করেন মাহমুদ, ‘সাকিব যদি খেলতে চায়, যদি (দায়িত্ব) নিতে চায়, আমার মনে হয়, দায়িত্ব একটা দিলে সাকিবেরও হয়তো একটা পরিবর্তন হতে পারে। আমি বলছি না সাকিবই টেস্ট অধিনায়ক হবে। তামিমও আছে। মাহমুদউল্লাহ যেহেতু ছেড়ে দিয়েছে, মুশফিকও আছে। তবে সে নেবে কি না সেটা বড় ব্যাপার। কে হবে আমি জানি না।’