অবিচ্ছিন্ন থেকে দ্বিতীয় সেশন কাটিয়ে দিয়েছেন সাকিব ও নুরুল
অবিচ্ছিন্ন থেকে দ্বিতীয় সেশন কাটিয়ে দিয়েছেন সাকিব ও নুরুল

অ্যান্টিগা টেস্ট

সাকিব-নুরুলে বাংলাদেশের লড়াই

সেশনের শুরুতে বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিল ইনিংস পরাজয়। আগের সেশনে ৪ উইকেট হারানোর পর বাকি ছিল আর ৪টি, ক্রিজে মোটামুটি নতুন দুই ব্যাটসম্যান, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবার ব্যাটিং করাতে প্রয়োজন ছিল ৪৭ রান। সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান এরপর ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়লেন, যেটি এক সময় রূপ নিল ম্যাচের প্রথম শত রানের জুটিতে। দুজন মিলে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন লিডে। দুজনের সৌজন্যে অ্যান্টিগা টেস্ট প্রথম বারের মতো দেখল বিনা উইকেটের সেশন।

অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিন চা-বিরতির সময় ৬ উইকেটে ২১০ রান বাংলাদেশ, লিড ৪৮ রানের। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ তুলেছে ৯৫ রান, ওভারপ্রতি উঠেছে ৩.৫০-এর বেশি রান। এ টেস্টে এখনো ‘ফেবারিট’ ওয়েস্ট ইন্ডিজই, তবে নিশ্চিতভাবেই তাদের হতাশ করে চলেছেন সাকিব ও নুরুল। ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে বিরতিতে গেছেন সাকিব, অর্ধশতক পেতে নুরুলের প্রয়োজন ১ রান।

সাকিবের সঙ্গে নুরুলের জুটি শত রানের

সেশনের শুরুটা অবশ্য নড়বড়ে হয়েছিল সাকিবের। বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে কাইল মায়ার্সের বলে এলবিডব্লুর রিভিউ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তবে ইমপ্যাক্ট ছিল বাইরে। সে ওভারে রিভিউ নিলে অবশ্য কট-বিহাইন্ড হতে পারতেন সাকিব। ওই ওভারেই মায়ার্সের ওভারপিচড ডেলিভারিতে কাভার ড্রাইভে চার মারেন সাকিব, এরপর বাউন্ডারি আসতে থাকে নিয়মিতই। এরপর রোচকে চার মারেন সাকিব। নুরুল ও তিনি চড়াও হন জেইডেন সিলস, স্পিনার গুড়াকেশ মোতির ওপরও। মধ্যাহ্নবিরতির পর ১৬.৩ ওভারের মধ্যে আসে ১০টি বাউন্ডারি। ৬২তম ওভারের শেষ বলে সিলসকে মারা নুরুলের চারে লিড পায় বাংলাদেশ।

ইনিংসে ভাগ্যের ছোঁয়া পান নুরুলও। ৫৯তম ওভারে মায়ার্সের পরপর দুই বলে তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে ওঠে বল—প্রথমবার স্লিপের সামনে পড়লেও পরের উইকেটের ওপরে থাকা জশুয়া ডা সিলভার গ্লাভসে লেগে বেরিয়ে যায়। পেছনে থাকলে উইকেটকিপারের কাছে সহজ ক্যাচই যেত। পরে প্রথম বারের মতো বোলিংয়ে আসা রেমন রিফারের আরেকবার নুরুলের বিপক্ষে রিভিউ নেয় উইন্ডিজ, যদিও বল সূক্ষ্ণ ব্যবধানে পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। সেটি দিয়েই ৩টি রিভিউ খরচ করে ফেলে স্বাগতিকেরা, সফল হয়নি একটিও।

ম্যাচে দ্বিতীয় অর্ধশতক পূর্ণ করেন সাকিব

তবে সে সব ছাপিয়ে সাকিব-নুরুলের জুটি প্রথমে পেরোয় ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটিকে। এরপর ম্যাচে দুই দলের মধ্যেই সর্বোচ্চ জুটি হয় তাদের। সাকিব অর্ধশতক পূর্ণ করেন রেমন রিফারের বলে সিঙ্গেল নিয়ে। ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়কের এটি দ্বিতীয়, টেস্টে টানা তৃতীয় ৫০। এবার মাইলফলকে যেতে তাঁর লাগে ৮২ বল। ৭৬তম ওভারে সাকিবের নেওয়া সিঙ্গেলে নুরুলের সঙ্গে তাঁর জুটি ছুঁয়ে ফেলে ১০০, ম্যাচে দুই দলের মধ্যেই যা প্রথম। সপ্তম উইকেট জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের মাটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটিও এটি, এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ৪৪ রানের।

সেশনে অবশ্য খচখচানি হয়ে এসেছে সাকিবের অস্বস্তি। মাঝে একবার ফিজিওর দ্বারস্থও হতে হয় তাঁকে। ব্যাটিংয়ের সময়ও স্ট্রেচিং করতে দেখা গেছে বাংলাদেশ অধিনায়ককে।

এর আগে প্রথম সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ হারায় নাজমুল হাসান, মুমিনুল হক, লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসানের উইকেট। দুইটি করে উইকেট নেন কাইল মায়ার্স ও কেমার রোচ।