সরে গেল অবগুণ্ঠন। শুরু হয়ে গেল মহোৎসব। ফুটবল নামের যে উৎসবে আগামী একটা মাস বঁুদ হয়ে থাকবে সারা বিশ্ব। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাতে সাও পাওলোর অ্যারেনা করিন্থিয়ানসে সংক্ষিপ্ত কিন্তু মনোরম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা পেল ফুটবল মহাযজ্ঞ—ব্রাজিল ২০১৪।
জেনিফার লোপেজ থাকবেন না শুনে একটা হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল সবার মধ্যে। শেষ পর্যন্ত এসেছেন পুয়ের্তোরিকান-মার্কিন সংগীতশিল্পী। ৯০ হাজার গুচ্ছবাতি দিয়ে তৈরি বিশাল এলইডি বলটা হঠাৎই ভোল পাল্টে মঞ্চ হয়ে গেল, আর সেই মঞ্চ ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেই সহশিল্পী র্যাপার পিটবুল ও ব্রাজিলের ক্লদিয়া লেইতের বিশ্বকাপের থিম সং ‘উই আর ওয়ান (ওলে ওলা)’ গেয়েই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানলেন জে লো।
এর আগে উদ্বোধনী দিনটাও রেহাই পায়নি বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে। বিক্ষোভকারীদের সংখ্যাটা শ খানেক হলেও একটু হলেও রক্ত ঝরেছে৷ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছুড়তে হয়েছে কাঁদানে গ্যাসের শেল। এর আঘাতে আহতও হয়েছেন সিএনএনের এক সাংবাদিকসহ পাঁচজন।
তবে এসব কিছুও দমাতে পারেনি ফুটবলপ্রেমীদের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের গ্যালারি পূর্ণই ছিল। সেটি আরও পূর্ণ ছিল ব্রাজিলের জার্সির রং হলুদের ছোপেও।
কাল রাত সোয়া ১২টায় শুরু ২৫ মিনিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ছিল বর্ণিল ব্রাজিলের উপস্থাপনা। ‘জীবন্ত’ এলইডি বলটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রঙের ছটাই ছড়িয়ে গেল। ওই বলের সঙ্গে তাল মিলিয়েই যেন পারফর্ম করে গেলেন ৬০০ নৃত্যশিল্পী, জিমন্যাস্ট ও ট্রামপোলিনিস্ট। মহাবন আমাজন, আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান, ব্রাজিলে ইউরোপীয়দের আগমন, ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী নাচ আর ফুটবল—সবই ছিল অনুষ্ঠানে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক রোগী পুরোপুরি যন্ত্রমানব হয়ে লাথিও মারলেন ফুটবলে।
গত বছর কনফেডারেশনস কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়েই দর্শকদের দুয়ো শুনেছিলেন ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ। সে কারণেই কি না, ফিফা আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল, এবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেউ বক্তৃতা দেবেন না। কেউ দেয়ওনি৷
ব্রাজিলের সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়ে গেছে ৬৪ ম্যাচের ৩২ দিনব্যাপী বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই৷ নেইমারদের ব্রাজিল কি জয় দিয়ে শুরু করতে পেরেছে তাদের ষষ্ঠ শিরোপার অভিযান? নাকি ১৯৯৮-এর বিস্ময় ক্রোয়েশিয়া উদ্বোধনী ম্যাচেই চমকে দিয়েছে ফুটবল-বিশ্বকে? এই লেখা যখন পড়ছেন, সবই জানা হয়ে গেছে আপনার৷