রমিজ রাজা ও আহমেদ শেহজাদ
রমিজ রাজা ও আহমেদ শেহজাদ

শেহজাদকে রমিজ—বাদ পড়লেই সবাই দোষারোপ শুরু করে

কোচ ওয়াকার ইউনিস, টিম ম্যানেজমেন্টের কারণে নিজের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলেছিলেন পাকিস্তান ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ। তবে শেহজাদের এমন অভিযোগকে ঠিক পাত্তা দিচ্ছেন না পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। তাঁর মতে, বাদ পড়া কারও জন্য এমন কিছু বলাটা খুবই স্বাভাবিক। তবে দলে ফিরতে গেলে যা করার শেহজাদকেই করতে হবে—মনে করিয়ে দিয়েছেন রমিজ।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে শেহজাদ প্রসঙ্গে রমিজ বলেন, ‘দেখুন, আমিও (বাদ পড়ার পর) দলে ফিরেছি। এই সময়ে বেশ বড় হতাশা জেঁকে ধরে খেলোয়াড়দের। তখন তারা সবাইকে দোষারোপ করা শুরু করে। আমার মনে হয় ওর ব্যাপারটা অন্যভাবে ভাবা দরকার। যখন আপনি দলের বাইরে, তখন আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা হবে, আপনার টেম্পারমেন্টের পরীক্ষা হবে, আপনার কঠোর পরিশ্রমের (সামর্থ্যের) পরীক্ষা হবে।’

শেহজাদের উদ্দেশে একটা বার্তাও দিয়েছেন সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক রমিজ, ‘তার প্রতি আমার বার্তাটা পরিষ্কার—“ব্যাটই তোমার হয়ে কথা বলুক”। রান করতে থাকো, তাহলে তোমাকে বাদ দেওয়ার কোনোই উপায় নেই।’

রান করলে যে দলে ফেরা যায়, সে উদাহরণও টেনেছেন রমিজ, ‘শান মাসুদের দিকে তাকান। অনেক অনেক রান করেই সে দলে ফিরেছে।’ ডার্বিশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে দুর্দান্ত সময় কাটানো মাসুদকে ফেরানো হয়েছে পিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে। লাল বলের জন্য ‘ডি ক্যাটাগরি’তে রাখা হয়েছে মাসুদকে।

২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পাকিস্তানের হয়ে ১৩টি টেস্ট, ৮১টি ওয়ানডে ও ৫৯টি টি-টোয়েন্টি খেলা শেহজাদ সম্প্রতি বলেছেন, সাবেক কোচ ওয়াকারের কারণেই ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর। ২০১৬ সালে শেহজাদ ও উমর আকমলকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য পিসিবিকে চিঠি দিয়েছিলেন ওয়াকার, এমন দাবি করেন শেহজাদ।

ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেহজাদ বলেছেন, ‘আমি নিজে প্রতিবেদনটি দেখিনি। তবে একজন পিসিবি কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন, ওই সব কথা আমাকে নিয়েই বলা হয়েছিল। তবে আমার বিশ্বাস, এসব আলোচনা সামনাসামনি হওয়াটাই ভালো। তাহলে দেখা যেত, কে ঠিক আর কে ভুল। তাদের কথাবার্তা তো আমার ক্যারিয়ারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, বিশেষ করে আমি যখন নিজের দাবি উত্থাপন করার সুযোগ পাইনি। এগুলো আসলে পূর্বপরিকল্পিত। তারা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিল।’

এমনিতে শেহজাদের ক্যারিয়ার অবশ্য বিতর্কমুক্ত নয়। ২০১৮ সালে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে চার মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সাবেক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্কটা সুবিধার ছিল না। তবে ২০১৯ সালের অক্টোবরে সরফরাজের অধীনেই প্রায় দেড় বছর পর পাকিস্তান দলে ফিরেছিলেন তিনি। তবে এরপর আর সুযোগ পাননি শেহজাদ।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান রমিজ রাজা

সম্প্রতি শেহজাদ বলেছেন, অধিনায়কদের কাছ থেকেও সেভাবে সমর্থন পাননি তিনি, ‘আগেও বলেছি, আবার বলব, (বিরাট) কোহলির ক্যারিয়ার এমন হয়েছে মূলত এমএস ধোনির কারণে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তানে অন্যরা আপনার সাফল্য দেখতে পারে না। ক্রিকেটে কেউ সফল হোক, আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটার বা সাবেক ক্রিকেটাররা সেটি সহ্য করতে পারে না।’