দুই অসাধারণ দল প্রস্তুত ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালের জন্য। এক দিকে নিখুঁত ফুটবল খেলা মেসি, যে মরিয়া থাকবে বিশ্বকাপ জিতে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে। আরেক দিকে মুলার আর ক্লোসার জার্মানি, যারা চাইবে দেশটির দুই যুগের বিশ্বকাপ শিরোপার অপেক্ষার অবসান ঘটাতে।
রোববারের ফাইনাল হবে লাতিন আমেরিকার শৈল্পিক ফুটবলের সঙ্গে জোয়াকিম লোর দলের শক্তির লড়াই। তবে জার্মানদের খেলায় একটা মেক্সিকান ছোঁয়া আছে, যেটা লোর দলকে এগিয়ে রাখবে বলে আমি মনে করি। ইতিহাস আর যুক্তি বলছে জার্মানিই জিতবে। কিন্তু মন বলছে জিতবে মেসির শিল্প। আমি বলব, এই প্রজন্মের সেরা বিশ্বকাপ ফাইনালটা আসলে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে বিশ্বের সেরা দলের লড়াই। মেসির জন্য এটা বিশাল এক সুযোগ নিজেকে বিশ্বসেরা প্রমাণ করার। জার্মানির জন্য সুযোগ গত দশকে অনেকবার শিরোপার কাছাকাছি গিয়েও না জিততে পারার আক্ষেপ ঘোচানোর, বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের আধিপত্য আবার বিস্তার করার।
এই বিশ্বকাপে জার্মানি নিঃসন্দেহে আর্জেন্টিনা থেকে শ্রেয়তর দল, সব দিক থেকেই। গতি, শক্তি, উচ্চতা সব দিক থেকেই লোর দল এগিয়ে। ওদের জন্য হিসাবটা খুব সোজা—মাঠে দলের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রাখতে হবে। সামনে থেকে পেছন পর্যন্ত দলে কোনো খুঁত নেই। এক আলজেরিয়ার সঙ্গে ম্যাচের কথা বাদ দিলে ওরা ছিল যন্ত্রের মতো নির্ভুল। কি ডিফেন্ডার, কি মিডফিল্ডার, কি স্ট্রাইকার সবাই গোল করেছে।
কিন্তু ফুটবল সব সময় যুক্তি মেনে চলে না। ব্রাজিলের সঙ্গে ৭-১ গোলের জয় ওদের যদি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী করে ফেলে তবে জার্মানিকে তার জন্য ভুগতে হবে। এই রকম একটা জয়ের পর কিছুটা হলেও চাপ থেকে যায় দলের ওপর আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর। আর আর্জেন্টিনার খেলা দেখুন। টুর্নামেন্টে আক্রমণভাগ নিয়ে যত কথাই হোক, শিরোপা হয়তো তারাই জিতবে যাদের রক্ষণভাগ সেরা। বলতে চাইছি, রক্ষণই গড়ে দিতে পারে ফাইনালের ভাগ্য।
শেষ লড়াইয়ে ফল যা-ই হোক না কেন, সাবেলা এরপর আর দায়িত্বে থাকছেন না। দলের কান্ডারি হিসেবে এটাই তাঁর শেষ ম্যাচ। আমি বলব, কোচ হিসেবে তিনি অসাধারণ। জয় দিয়ে যদি শেষ করতে পারেন, তা হবে দুর্দান্ত। আমি আগে বলেছি, সাবেলা খেলার ধরন পরিবর্তন করেছেন, অনেক রক্ষণাত্মক খেলেছে আর্জেন্টিনা। তারা আজ মাঝমাঠ ঠিকমতো সামলাতে পারলে জার্মানদের জন্য কাজটা কঠিন হবে। যুক্তির দিক থেকে জার্মানি এগিয়ে থাকলেও আর্জেন্টিনাকে আপনি বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে পারছেন না যতক্ষণ মাঠে মেসি আছে।