মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন শুমাখার

স্কি করতে গিয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার শিকার মাইকেল শুমাখার হাসপাতালে। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর সার্বিক অবস্থা জানালেন দায়িত্বরত চিকিত্সক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাল ফ্রান্সের গ্রেনোবলে রয়টার্স
স্কি করতে গিয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার শিকার মাইকেল শুমাখার হাসপাতালে। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর সার্বিক অবস্থা জানালেন দায়িত্বরত চিকিত্সক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  কাল ফ্রান্সের গ্রেনোবলে  রয়টার্স

গতিই তাঁর প্রথম এবং একমাত্র ভালোবাসা। গতির ঝড় তুলেই জয় করেছেন বিশ্ব। ফেরারির ড্রাইভিং সিটে বসে জিতেছেন রেকর্ড সাতবার ফর্মুলা ওয়ানের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট। রেকর্ড ৯১টি প্রতিযোগিতায় জিতে ড্রাইভিং ইতিহাসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অন্য উচ্চতায়। শেষ পর্যন্ত সেই গতিই তাঁকে ঠেলে দিল জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। স্কি করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে মাইকেল শুমাখার হাসপাতালে। জার্মানির সাবেক ফর্মুলা ওয়ান তারকা হাসপাতালে অচেতন, লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।

পরশু সকালে ফ্রান্সের আল্পস পর্বতের পাদদেশে মেরিবেল রিসোর্টে শখ করে স্কি করতে গিয়েছিলেন। পাথরখণ্ডে ধাক্কা লাগায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন মাথায়। মস্তিষ্কে গুরুতর জখম হয়েছে। দুর্ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যেই পর্বত-পুলিশ হেলিকপ্টারে করে দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের গ্রেনোবলের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। মেরিবেল রিসোর্টের পরিচালক ক্রিস্টোফ জেরনিগন-লেকোমতে জানান, স্কিয়িং করার সময় মাথায় হেলমেট পরা ছিলেন শুমাখার। তাঁর জ্ঞান ছিল এবং একটু কাঁপুনি হচ্ছিল। পরে তাঁকে অচেতন হয়ে পড়তে দেখে চিকিৎসকেরাই বলেন, ধারণার চেয়ে আঘাত বেশি গুরুতর। শুমাখারের জীবন আশঙ্কাজনক।

শুমাখার

৪৪ বছর বয়সী শুমাখারের জীবন বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। প্যারিস থেকে এসেছেন বিশেষজ্ঞ নিউরোসার্জন। তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে একবার।
১৯৬৯ সালে জার্মানির কোলনে জন্ম। বাবা ছিলেন রাজমিস্ত্রি, মা কাজ করতেন ক্যানটিনে। বাবা মাঝেমধ্যে গো-কার্ট চালাতেন। বাবাকে দেখে শুমাখারেরও ছোটবেলায় চার চাকার ছোট্ট এই বাহনের প্রতি মোহ জন্মে। ১৯৮৭ সালে প্রথম জার্মান চ্যাম্পিয়ন হয়ে পেশাদার রেসিংয়ের জীবন বেছে নেন। বেলজিয়ান গ্রাঁ প্রি দিয়ে ফর্মুলা ওয়ানে অভিষেক ১৯৯১ সালে। পরের বছর এই বেলজিয়ান গ্রাঁ প্রিতেই প্রথম শিরোপা। ১৯৯৬ সালে ফেরারির সঙ্গে জুটি বেঁধে উঁচু থেকে আরও উঁচুতে নিয়ে যান নিজেকে। ইতিহাসের দ্বিতীয় ড্রাইভার হিসেবে ৩০০ রেসে অংশ নেওয়া শুমাখারের সব অর্জনই বলতে গেলে ফেরারির হয়ে। যদিও শেষ দিকে বসেছিলেন মার্সিডিজের সিটে। কিন্তু তাতেও নিজের পুরোনো রূপ ফিরে না পাওয়ায় গত বছর ব্রাজিল গ্রাঁ প্রিতেই অবসর টানেন।
ড্রাইভিংকে ‘বিদায়’ বললেও গতি আর ঝুঁকির নেশাটা কাটাতে পারেননি শুমাখার! এএফপি।