মঈন খানের সেই ‘বকা’ মনে রেখেছেন ইউনিস খান

পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ইউনিস খান। তাঁর নাম উচ্চারিত হয় জহির আব্বাস, জাভেদ মিয়াঁদাদ, ইনজামাম-উল-হকদের সঙ্গে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো ইউনিস ছাপিয়ে গেছেন এসব কিংবদন্তিদের। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে ১৭ হাজার রান করেছেন, যা পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু এমন একজন ক্রিকেটারেরও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি।

টানা ব্যর্থতার সেই দিনগুলো এত বছর পর তাঁকে আজও তাড়া করে। ওই সময় যে মানসিক চাপ তাঁকে সইতে হয়েছে, সেটি মনে করে আজও শিউরে ওঠেন তিনি। ২০০০ সালের শুরুর দিকে ইউনিস যখন পাকিস্তানের হয়ে খেলা শুরু করেন, তখন পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উইকেটকিপার মঈন খান। তখন মঈনের একটি আচরণ তাঁকে আজও পোড়ায়। একটি ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর মঈন খানের বকাঝকা তাঁকে কষ্ট দিয়েছিল।

মঈন খান বকা দিয়েছিলেন ইউনিস খানকে

২২ বছর পর সেই ঘটনাটি মনে করেছেন ইউনিস। কেবল মঈনই নন, ওই সময় পাকিস্তান দলের সিনিয়ররা যেকোনো ব্যর্থতার পর এমনভাবে বকাঝকা করতেন, তা নতুনদের পক্ষে সহ্য করা মুশকিল ছিল। মঈনের সেই বাক্যবাণ নিয়ে ইউনিসের মন্তব্য, ‘২০০০ সালের মার্চ মাসের কথা। পাকিস্তানের হয়ে তখন আমি সবে খেলা শুরু করেছি। ওই সময় মঈন খান ছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। শুরুটা আমার মোটেও ভালো হয়নি। কিন্তু অধিনায়ক মঈন আমাকে এমনভাবে বকাঝকা করতেন যে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তাম। একদিন এক ম্যাচে আমি খারাপ করি। আউট হওয়ার মুহূর্তে ক্রিজের অপর প্রান্তে ছিলেন মঈন ভাই। তিনি প্রচণ্ড বকা দিয়েছিলেন আমাকে। শূন্য রানে আউট হওয়ার পর সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মঈন ভাই সেটা প্রকাশ করেছিলেন খুব বাজেভাবে।’

তবে মঈন খানের সেই ‘বকা’র ভালো দিক দেখেন ইউনিস। অধিনায়কের সেই তিরস্কার তাঁকে পরবর্তী সময়ে দলের অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে বলেই মনে করেন পাকিস্তানকে ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক, ‘আমি মঈন ভাইকে ধন্যবাদই জানাই। ওই তিরস্কার আমাকে আরও মনোযোগী হতে, নিজেকে আরও ভালোভাবে গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। আমি ভুলগুলো থেকে শিখেছি।’

পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ইউনিস, করেছেন ১৭ হাজার রান

পাকিস্তানের হয়ে ১১৮টি টেস্ট খেলেছেন ইউনিস। রান করেছেন ১০ হাজার ৯৯। গড় ৫৭.৪০। সেঞ্চুরি করেছেন ৩৪টি, ফিফটি ৩৩। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আছে একটি ত্রিশতকও। এ ছাড়া ভারত, বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আছে দ্বিশতক। অভিষেকে সেঞ্চুরি করা ইউনিসের ক্যারিয়ার আরও বেশ কিছু অনন্য রেকর্ডে সমৃদ্ধ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অধিনায়ক হিসেবে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান (৩১৩), টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি। এক টেস্টে সেঞ্চুরি করে পরের ইনিংসে শূন্য রানে ফেরার ঘটনাও ঘটিয়েছেন ইউনিস।