উইকেটকিপাররা সাধারণত একটু হালকা গড়নের হন। আফগানিস্তানের আহমেদ শাহজাদ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বলা যায়। অতীতে আরও অনেকেই ভারী শরীর নিয়েও কিপিংয়ে সফল হয়েছেন। সে যা–ই হোক, এখন তো উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানদের চাপ আরও বেশি। শুধু বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপার হলেই হবে না, ব্যাটিংটাও ভালোভাবে জানতে হবে।
অর্থাৎ প্রতিপক্ষের পুরো ইনিংসে কিপিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও অনেক সময় মাঠে থাকার চ্যালেঞ্জ নিতে হয় উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানদের। আর তাই এই পজিশনে ফিট ক্রিকেটার খুঁজে থাকেন সবাই। ঋষভ পন্ত এ ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম। ভারী শরীর নিয়েও কিপিং-গ্লাভস হাতে বেশ দক্ষ, ব্যাটিংয়েও রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে বেশ তৎপর। পন্তের এই সামর্থ্যের রহস্য কী?
পাঁচ বছর আগে ভারতের হয়ে অভিষেক পন্তের। গত বছর ব্রিসবেন টেস্টে ম্যাচ জেতানো সেই অপরাজিত ৮৯ রানের পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি ২৪ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানকে। এখন তিনি ভারতের সবচেয়ে প্রার্থিত উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান।
বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামার আগে ভালো উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হওয়ার রহস্য ভাঙলেন সহঅধিনায়ক পন্ত। ভালো উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান হতে তিনটি বিষয় আবশ্যক বলেই মনে করেন আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের এই অধিনায়ক।
তিনটি বিষয়ই ‘বেসিক’, অর্থাৎ ক্রিকেটের মৌলিক বিষয়গুলোই মনে করিয়ে দিয়েছেন পন্ত। মাঠে যে ১৩ জন খেলোয়াড় (দুই প্রান্তের ব্যাটসম্যানসহ) থাকেন, তাঁদের সবাই একটি কাজ করে থাকেন। বলের ওপর চোখ রাখা।
পন্ত মনে করেন ভালো উইকেটকিপার হতে বলের ওপর শেষ পর্যন্ত চোখ রাখার বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি সব সময় তৎপর থাকারও পরামর্শ দিয়ে ‘এসজি’ টিভির পডকাস্টে পন্ত বলেন, ‘সব সময় তৎপর থাকার গুণটা থাকতে হবে। বিভিন্ন কন্ডিশনে উইকেটকিপিং করতে হয়, তৎপর থাকলে সেটি কাজে লাগে। আরেকটি বিষয়, বলটা শেষ পর্যন্ত দেখতে হয়।’
বল শেষ পর্যন্ত দেখার বিষয়টি পন্ত ব্যাখ্যাও করলেন, ‘অনেক সময় হয় কী, উইকেটকিপাররা নির্ভার হয়ে পড়েন, কারণ, বল আসছে এবং কোন দিক দিয়ে আসছে, সেটা তাদের জানা থাকে। তাই ধরার আগপর্যন্ত বলটা দেখা উচিত।’
পন্ত তৃতীয় যে গুণের কথা বলেছেন সেটি মোটামুটি বিশ্বের সব ভালো উইকেটপকিপার-ব্যাটসম্যানেরাই মেনে চলেন—শৃঙ্খলার মধ্যে থাকা এবং নিজের টেকনিক নিয়ে কাজ করা। কিপিং যেহেতু বেশ টেকনিকনির্ভর, তাই উইকেটকিপারদের প্রতিনিয়তই এ নিয়ে কাজ করতে হয়। অনুশীলনে প্রতিদিনই ঘাম ঝরাতে হয়। একেকজনের একেকরকম টেকনিক থাকে। প্রতিনিয়ত চর্চার মাধ্যমে ধরে রাখতে হয়। কিন্তু সবার ক্ষেত্রেই একটি বিষয় সমান—বল গ্লাভসে ঠিকমতো গ্রিপ করাই শেষ কথা।
এই ‘বেসিক’ কাজটা ঠিকমতো করার ওপর জোর দিলেন পন্ত, ‘তৃতীয়টি হলো, নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং নিজের টেকনিক নিয়ে কাজ করতে হবে। সবার টেকনিক এক নয়, একেকজনের একেকরকম। কিন্তু মৌলিক কাজটা ঠিকমতো করতে পারলে তা সাহায্য করবে।’