আগেই বলেছিলাম, এর আগে এক অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ ছাড়া নিউজিল্যান্ড তেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়নি। বাংলাদেশের সঙ্গে কালকের ম্যাচে ২৮৮ রান তাড়া করতে গিয়েও তারা সমস্যায় পড়েছে। বাংলাদেশ তো জয়ের কাছাকাছিই গিয়েছিল। আমি তা দেখতে চাই, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দলকে কেউ তিন শর ওপর রান করে চাপে ফেলছে। কোয়ার্টার ফাইনালে কী এমন হবে? দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে। তবে ভারতের জন্য কোয়ার্টার ফাইনাল সহজ হচ্ছে না। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের অসাধারণ পারফরম্যান্সই বলে দেয়, ভারতের কঠিন পরীক্ষাই নেবে তারা।
নকআউট পর্ব চরম অনিশ্চয়তায় ভরা, মাঝে মাঝে নিষ্ঠুরও। সেখানে ঘণ্টা খানেকের বাজে ক্রিকেট আপনার চার বছরের প্রস্তুতিতে জল ঢেলে দিতে পারে। এটা এমনই কঠিন এক বাস্তবতা। গ্রুপ পর্বে ভারতের অসাধারণ ক্রিকেট-প্রদর্শনীর পরও আমি তাই তাদের ‘শিরোপার দাবিদার’ বা ‘যুগ্ম দাবিদার’ তকমা দিতে চাই না। তবে এ পর্যায়ে এসে বলতেই হবে, ভারত তাদের সমর্থকদের মন জিতেছে।
ভারতকে এখন লক্ষ্যে অবিচল ও সুখী একটা দলই মনে হচ্ছে। তাদের ফিল্ডিং হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকা বা নিউজিল্যান্ডের মতো নয়, তবে উন্নতি হয়েছে অবশ্যই। আমার মনে হয়, ভারতের পারফরম্যান্সের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের পারফরম্যান্সকেই শুধু মেলানো যায়। অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কী মনে করেন?’ ভারতের এই ফিরে আসায় নেতৃত্ব দিল কে?’ সত্যি বলতে, আমার উত্তর জানা নেই। এ জন্য তো আপনাকে ড্রেসিংরুমে যেতে হবে। হতে পারে তা ত্রিদেশীয় সিরিজের পর কোনো অন্তরঙ্গ আলোচনা, হতে পারে কোচিং স্টাফের অবদান। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, নিউজিল্যান্ডের পরিপূর্ণ প্রস্তুতির পেছনে তাদের ‘কোচিং স্টাফ’-এর অবদান অনেক। তা শেন বন্ডের মতো বোলিং কোচ, ফিজিও বা ক্রেইগ ম্যাকমিলানের মতো যে কেউ হতে পারে!
তবে আমাকে স্বীকার করতে হবে, কয়েক সপ্তাহ আগেও মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্ব আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ এমনকি ত্রিদেশীয় সিরিজেও যে অধিনায়ক ধোনি ছিল, তার অনেক প্রেরণার দরকার ছিল। কি ফিল্ডারদের অবস্থান নির্ধারণে, কি বোলারদের ব্যবহারে। প্রত্যাশামতো তখন অনেক কিছুই হয়নি।
তবে বিশ্বকাপ নতুন এক ধোনিকে দেখছে। হ্যামিল্টনে আমি যে ধোনিকে দেখেছি, তার নিয়ন্ত্রণেই সব ছিল। তাকে দেখে মনে হয়েছে, যেন অভিযানে নামা কোনো তীক্ষ্ণ মস্তিষ্কের নেতা।
সাধারণত আপনি যখন অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে এসেই খেলতে নেমে পড়বেন, বোলারদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে। বলের লেংথ বুঝে উঠতে সবচেয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক বিখ্যাত বোলারদেরও আমি এই সমস্যায় পড়তে দেখেছি। তবে কৌশলটা হলো, একটু বেশি ফুল লেংথে বল করা। এখানকার পিচে বল শুধু সুইং নয়, সিমও করে। আমি বিস্মিত হয়েছি ভারতীয় পেসারদের মানিয়ে নেওয়া দেখে। অবশ্যই তাদের প্রধান বোলার মোহাম্মদ শামি, যাকে প্রথম কোনো আইপিএলের ম্যাচে দেখেছিলাম।
তবে গ্রুপ পর্বের সেরা বোলার বেছে নিতে বললে আমি টিম সাউদিকেই নেব। মিচেল স্টার্ক সম্ভবত তালিকায় দ্বিতীয়, শামি তৃতীয় বা চতুর্থ স্থানে। (হক-আই)।